আমার চোখে ঠোটে গালে তুমি লেগে আছো !!
সামহোয়্যারইন এর অফিসে জরুরী মিটিং বসেছে । হল রুমটাতে গোল করে কত গুলো চেয়ার সাজানো ! কিন্তু সেখানে কেবল দুজন মানুষ বসে রয়েছে গম্ভীর মুখে । একজন ব্লগ প্রতিষ্ঠাতা জানা অন্য জন মডারেটর অন্যমনস্ক শরৎ !
অনেকের আসার কথা থাকলেও এখনও কেউ এসে পৌছায় নি ! এদিকে বিরক্তি নিয়ে ব্লগার জানা নিজের মোবাইল টেপাটেপি করছে । অন্য দিকে ব্লগার শরৎ নিজের ক্যামেরা নিয়ে কিছুক্ষন পরপর ছবি তুলছে !
হঠাৎ জানা নিজের ধৈর্য্য হারিয়ে ফেললেন !
বিরক্তি নিয়ে বললেন
-এটা কোন কথা হল ! সময় দিয়েছি বিকাল চারটা ! এখন পাঁচটা বেজে গেল কারও আসার নাম নেই !
শরৎ বলল
-আরে জানা এতো অস্থির হচ্ছ কেন ? এটা আমাদের সকল ব্লগারদের একটা নিয়ম । কোন জায়গায় সময় দেওয়া থাকলে আমরা নিয়ম করে এক আধা ঘন্টা দেরি করে পৌছাই ! আর চার টা কোন সময় হল ? সন্ধ্যা হলে আমাদের আড্ডা ঠিক মত জমেও না ! বোঝোই তো ।
তুমি বরং আরওকিছুক্ষন মোবাইল ব্যস্ত থাকো ! আমি কয়েকটা ছবি তুলি !
আরও মিনিট ত্রিশেক পরে সবাই এসে হাজির হল !
হাজির হলেন
ব্লগার শায়মা,
ব্লগার রেজওয়ানা,
ব্লগার জুন,
ব্লার আরজুপনি
ব্লগার হাসান মাহবুব,
ব্লগার আমিনুর রহমান,
ব্লগার কান্ডারী অর্থব,
ব্লগার কাল্পনিক ভালবাসা,
ব্লগার পরিবেশ বন্ধু,
যাক আলোচনা শুরু হল !
আলোচনা শুরু আগে ব্লগার জানা বিরক্তি নিয়ে দাড়িয়ে উঠে বললেন
-আশ্চার্য সবার এতো দেরি কেন হল ? আমি কি রকম সবার আগে পৌছে গেলাম সময় মত আর আপনারা এতো দেরী করলেন কেন ?
ব্লগার শায়মা বললেন
-আর বল না আপু মনি ! বাইরে যে কি পরিমান জ্যাম ছিল, তোমাকে কি বলবো ! আমি তো মনে করেছিলাম আমি কোন দিন এখানে পৌছাতেই পারবো না ! জানো খুব মন খারাপ লাগছিল !
ব্লগার শায়মার কথা শেষ হতেই ব্লগার কাল্পনিক ভালবাসা উঠে বললেন
-আমি শায়মা আপুর সম্পূর্ন ভাবে এক মত ! আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বিশেষ করে এই রাজধানী ঢাকাতে যারা বসবাস করে তাদের কাছে ট্রাফিক জ্যাম একটি অত্যন্ত কষ্টদায়ক এবং বেদনাদায়ক যন্ত্রনার নাম ! আমাদের এখনই এই সমস্যা নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ন আলোচনায় বসা উচিৎ যাতে করে আমরা আমাদের সামনের প্রজন্মকে একটি সুন্দর জ্যাম মুক্ত শহর উফার দিতে পারি ! আপনাদের সবার কি মনে হয় !
ব্লগার রেজওয়ানা বললেন
-কথা আসলেই সত্য ! একবার কি হয়েছে আমি আমার কয়েকজন বন্ধদের কে নিয়ে বের হয়েছি ঢাকার বেশ কয়েকটি পুরাতন ইমারত এবং বাড়ি ঘুড়ে দেখবো বলে মানে যেগুলোর ঐতিহাসিক মূল্য অপরিসীম ! দুপুরের দিকে বের হয়েছি কিন্তু সেই পুরানো বিল্ডিং গুলোর কাছে পৌছাতে পৌছাতে অনেক দেরি হয়ে গেল ! রাস্তায় এতো পরিমান জ্যাম ছিল কি বলবো ! গিয়ে দেখি পর্যটক সময় অতিবাহিত হয়ে গেছে । কেমন লাগে বলেন তো !
ব্লগার জানা হতাশ চোখে তাকিয়ে রইলেন সবার দিকে ! কি বিষয় নিয়ে সবার সাথে কথা বলতে চেয়েছিলেন ! আর সবাই কি নিয়ে কথা শুরু করে দিয়ে ! তিনি কথা বলার সুযোগই পাচ্ছে না !
এদিকে ব্লগার রেজওয়ানার কথা শেষ হওয়ার সাথে সাথে ব্লগার জুন বলে উঠলেন
-আরে এই রকম অভিজ্ঞতা তো আমার নিজেরও আছে ! মনে আছে সেদিনের কথা ! আমি আর আমার ছেলে বের হয়েছি লালবাগ কেল্লার চবি তুলবো বলে ! ওকে তখন নতুন ক্যামেরাটা কিনে দিয়েছি ! ব্লগে আমরা অনেক আগ্রহ নিয়ে বাসা থেকে বের হলাম ছবি তুলবো বলে !
কিন্তু রাস্তায় এতো জ্যাম ছিল ! শেষে উপায় না দেখে রাস্তা গাড়ির ছবি তুলতে লাগলো ! যখন লালবাগ কেল্লায় পৌছালাম তখন ক্যামেরার ব্যাটারির চার্য শেষ ! ক্যান ইউ বিলিভ ? চার্য শেষ !
অন্যমনস্ক শরৎ বলে উঠলেন
-ব্যাটারীর চার্য শেষ হওয়া নিয়ে আর বইলেন না ! এমন করুন অভিজ্ঞতা আমার আছে ! শুনলে সবার কাঁদতে ইচ্ছা করবে !
ব্লগার জানা আবারও বলে ঊঠলো
-ঠিক আছে ! আমাদের এখন কারো কান্না কাটির দরকার নেই ! আমরা আসল আলোচনায় ফেরৎ আসি !
ব্লগার হাসান মাহবুব বললেন
-আচ্ছা ভাল কথা মনে করেছন ! আমাদের এই নিস্পন্দ দেহ থেকে রক্ত আর অশ্রূর নোনা গন্ধ ভেসে আসছে। কৃতকর্মের দলিল হিসেবে দেহের আনাচে কানাচে ক্ষত আর আঘাতের ভূগোল বিশ্লেষন করে আমাদের সবার মনের অন্তর্নিত কথা আমাদের সবার সবাকেইকে মনদিয়ে শুনতে হবে, করতে নিগুর্হ বিচার বিবেচনা এবং বিশ্লেষন এর পরেই আমাদের কোন একটা সিদ্ধান্তে পৌছাতে হবে !
ব্লগার আরজুপনি বলল
আমার কথাটাও ঠিক এই রকমই ! আলোচনা হতে হবে নিজে মাতৃভাষা ! সেখানে কিছুতেই অন্য কোন ভাষার শব্দ প্রবেশ কিছুতেই কাম্য নয় ! আমরা তো নিশ্চই জানি আমাদের নিজেরে ভাষার পেছন কত বড় একটি আত্মত্যাগ রয়েছে ! এমন একটি ভাষার প্রতিনিধিত্বকারী দেশ হিসাবে এই ভাষার সম্মান আমরা কতোটুকু রক্ষা করছি তা অনেক সময়ই প্রশ্নের সম্মুখীন । সুতরাং যে আলোচনার আগে আমাদের এই বিষয়টাতে গুরুত্বপূর্ন দৃষ্টি দেওয়া উচিৎ বলে মনে করি !
ব্লাগর কান্ডারী অর্থব বললেন
-সব কিছু কেবল বাইরের দিক দিয়ে দেখলেই হবে না ! আমার কাছে যে কোন সমস্যার মুলে রয়েছে এর উৎপত্তিগত সমস্যা ! যদি কোন একটি সমস্যাকে একেবারে নির্মুল করতে হয় তাহলে আমাদের কেবল তাত্ত্বিক দিক নয় এর ভেতরকার দিকও নিয়েও আলোচনা করতে হবে । তাহলেই সেই সমস্যারটার সমাধান হবে বলে মনে করি !
ব্লগার জানা আবারও হতাশা ভরা চোখে সবার দিকে তাকিয়ে রইলেন ! ব্লাগর আমিনুর রহমানের দিকে চোখ যেতে দেখলেন তিনি মিশমিচ হাসছেন !
তিনি আমিনুর রহমান কে বললেন
-কি ব্যাপার ? আপনি কিছু বললেন না ?
ব্লগার আমিনুর রহমান বললেন
-নাহ ! আমার সব পোস্ট ড্রাফট করা ! আমি কেবল দেখেই যাই ! আপাতত কিছু বলছি না !
এমন সময় ব্গার পরিবেশ বন্ধু বলে উঠলেন
-আমি তো বলতেই এসেছি !
বলতে এসেছি আমার যত কথা !
আমার কথা, তোমার কথা আর সকলের কথা !
আজই বলতে চাই হে নারী
সকল অসভ্যতাকে দিয়ে পাড়ি
শোষক বঞ্চনার শিখল ভেঙ্গে
জাগ্রত আলোকিত চেতনার সঙ্গে
নারিরা গড়িতে জানে নব সমাজ
আজকে এসেছি বলতে সকলই ভেঙ্গে লাজ
ব্লগার জানার মাথা ঘুরতে লাগলো ! তার মনে হল এখনই জ্ঞান হারাবেন ! একটু পানি খাওয়া দরকার !
এদিকে হল রুমের মাঝ খান দিয়ে একটু পরপর একটা বিড়াল দৌড়াদৌড়ি করছে ! অফিসে রুমে মাঝে বিড়াল আসলো কোথা থেকে !
খোজ নিয়ে জানা গেল আসলে সে টিংকু টিংকু ! তার আম্মু তো আসতে পারে নি তাই সে এসেছে হাজিরা দিতে ।
ব্লগার শায়মা বলে উঠলেন
-আচ্ছা আপু মনি তুমি বললেই না আমাদের কেন ডেকেছো ? বলবে না বল ?
আবার ব্লগার কাল্পনিক ভালবাসা বললেন
-এতোক্ষনে আসল কথাটাই আমরা শুনতে পেলাম না ! আমাদের সবার উচিৎ.....।
ব্লগার জানার মাথাটা এবার সত্যিই সত্যি ঘুরে উঠলো ! তিনি উল্পে মাথা ঘুরে পড়ে গেলেন ! সবাই ধরাধরি করে তাকে কাছে একটা ক্লিনিকে নিয়ে গেল ! যখন তার জ্ঞান ফিরলো ব্লগার জানা দেখলো সবাই চিন্তিত চোখে তার দিকে তাকিয়ে আছে !
-কি হয়েছিল ?
-এরকম কেন হল ?
আরও হাজারটা প্রশ্ন !
ব্লগার জানা কোন প্রশ্নের উত্তর দিলেন ! চুপচাপ ক্লিনিকের বিচানায় শুয়ে রইলেন !
একে একে সবাই বিদায় নিলে ব্লগার অন্যমনস্ক শরৎ ব্লগার জানার কাছে বলল
-আচ্ছা বলতো তুমি আমাদের কেন ডেকেছিলে ?
ব্লগার জানা বলল
-আসন্ন বিশ্বকাপ টি২০ উপলক্ষ্যে সামুর পক্ষ থেকে একটা ফ্লাশ মব তৈরি করা কথা ভাবছিলাম ! এই জন্য সবার পরামর্শ চাচ্ছিলাম !
-তাহলে বললে না কেন তখন ?
ব্লগার জানা আবারও হতাশা চোখ তাকিয়ে রইলেন !
আবারও সেই একই কথা ! পোস্টটি বানানো হয়েছে কেবল মাত্র এবং শুধু মাত্র ফান করার জন্য । আশা করি সবাই এটি ফান হিসাবে নিবেন । ধন্যবাদ !!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।