হাড় হিম করা ঠান্ডা অথবা উষ্ণতম দিন। কিংবা ধরুন, রিনরিনে বৃষ্টির নুপুরধ্বনিতে মশগুল একটি বাদল দিন। এমন সবদিনে শহরের ল্যান্ডস্কেপে চোখ ফেরালেই নজরে পড়ে ঝাঁকে ঝাঁকে প্রেমিক যুগলের ডেটের ছবি। ভিড়ের মধ্যে আড়াল খুঁজে ডেটিংয়ের দৃশ্য বলতে…পার্কের আবডাল, শিল্পকলার ধুলো ভরা সিড়ি, , ধানমন্ডি লেক, সিটি সেন্টার, , বাইপাসের নির্জন রেস্তোরাঁ, কিংবা টিএসসির মতো নিরুপদ্রব পথের নিভৃতি!
এর বাইরে, ডিক্সো থেকের নিয়ন নেশাতুর আলোর তলায়, অথবা গুলশানের পকেট ফ্রেন্ডলি কোনও ঝিনচ্যাক রেস্তোরাঁতেও ডেটিংয়ের জন্য ‘সব চলতা হ্যায়’। ডেট মানেই একটা হেপ শেপ ব্যাপার যেন।
কিন্তু জায়গা ঠিক হওয়ার পরও, ডেট মানেই একটা বুক ধরফড়ে ব্যাপার! কি বলতে হবে, কালো না গ্রে- কোন পোশাকটা সবচেয়ে মানানসই, কতটা কথা বলবো…কতটা গোপন! এমন সবকিছু নিয়েই মনে চলে আসে অজানা অনেক প্রশ্ন। ভয়ও বলা যেতে পারে। তার ওপর যদি হয় প্রথম ডেট, তাহলে তো আর কথাই নেই। চেনা বন্ধুদের কাছ থেকে হাজার একটা পরামর্শ নিয়ে বা ডেটে যাওয়ার ১০ দিন আগে থেকে সব ডেটিং টিপস পড়া…!
তবু, অনেক সময় ঠুনকো কিছু ভুলের জন্য ধেড়িয়ে যায় ডেট। ব্যাস, মনখারাপ।
আবার অপেক্ষা নেক্স্ট ডেটের জন্য! আসলে, ডেট মানেই হৃদয়ের সঙ্গে সাজ পোশাক, বডি ল্যাঙ্গুয়েজ বা কথার থ্রো-সবকিছুই সেখানে হতে হয়। এক্কেবারে পিকচার পার্ফেক্ট, অনর্থে, পাখি ফুস্! একটা ভুল কথা বা একটু আলগা আচরনের জ্বেরেই কিন্তু ভেস্তে যেতে পারে প্রথম ডেট। কিরকম?
আসলে ব্যাপারটাই বেশ খটোমটো। প্রথম ডেট। কিছুই জানা নেই, আধো ভয় আর আধো ঘাবড়ে থাকা মন নিয়েই যাতে হারিয়ে না যায় প্রেম, তার জন্য মেনে চলা উচিত কয়েককটা বেসিক ডেটিং টিপ্স।
যেমন, ডেটিংয়ের ময়দানে নামার সময়ই মাথায় রাখা উচিত, বলতে হবে কম কথা। না না নির্বাক হয়ে মুচকি হাসলে চলবে না তবে স্বল্পভাসি হওয়াটাই এখানে বেশি প্রেফারেবল। প্রথম দিনেই জীবনের সব কথা বলে ফেললে আপনার প্রতি ডেট’এর কৌতুহল হারিয়ে যেতে পারে।
পোশাক যেমন খুশিই পড়ুন না কেন, অতি চড়া সাজ না হওয়াই ভাল। আপনি নাচের অনুষ্ঠান সেরে সোজা স্টেজ থেকে নেমে ডেটে এসেছেন কিংবা ডেট সেরেই যাবেন বিয়ে বাড়ি এমনটা মনে হলে আপনার প্রথম ডেটই মানুষটার সঙ্গে শেষ ডট হতে পারে।
ওহ… পোশাকের সাথে মেক-আপেরও ছিমছাম সামঞ্জস্য থাকলে মানানসই থাকবে ব্যাপারটা।
প্রথম ডেটে অনেকেই যেন থতোমতো হয়ে থাকে। ডেটে গিয়ে চারপাশের সিনারি কিম্বা লোকজনের দিকে না তাকিয়ে সামনের মানুষটিতে মজে থাকুন। কেউ দেখছে কিনা, এসব না ভেবে, এদিক ওদিক না তাকিয়ে সামনের মানুষটির সৌন্দর্য আবিষ্কারের মন দিন। চোখে চোখ রেখে, মনের কথা বলে ফেলাটাই এখানে ভাল।
তবে মনে রাখবেন, আপনি কোনও একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকার প্রতিযোগীতায় যাননি! সাবলীলভাবে কথা বলা বা শোনার সময়ে চোখে চোখ রাখুন। বড্ড বেশি নার্ভাস লাগলে…একটু থেমে একটা লম্বা নিঃশ্বাস নিয়ে ফের চালান কথা আর উপকথন! থামবেন না, মনের মধ্যে সদ্য গজিয়ে ওঠা বিরক্তিগুলো সরিয়ে আবার শুরু করুন, ডেটটা সফল করুন।
কথাবার্তার মধ্যে স্বচ্ছতা রেখে সোজা কথা সহজভাবেই বলা শ্রেয়। ধরে নিন, এই মুহুর্তে আপনার চাকরি নেই। আপনার ডেটে জীবিকা নিয়ে কথা উঠলে, আপনার আগের বস্ বাজে ছিল না, আপনার আগের চাকরিক্ষেত্রে পরিবেশ ভালো ছিল না বলে হুট করেই ছেড়ে দিয়েছেন চাকরিটা।
এমনসব অবান্তর কথা না বলে, সোজা বলে দিন এই মুহুর্তে আপনি চাকরি খুঁজছেন কারণ, সম্প্রতি চাকরি ছেড়েছেন। দেখবেন সোজা কথায় কার্য হাসিল হবে। সবকথা সারুন সংক্ষেপে, মাথায় থাকা উচিত যে এটা কোনও গেস্ট লেকচারের মঞ্চ নয়।
শেষ টিপস, অযথা কথার জাল বুনে বাড়িয়ে চলবেন না ডেট টিকে। শর্ট আর সুন্দর রেখেই সেরে ফেলুন।
নিউমার্কেটের উড়ালপুল হোক বা নির্জন হুক্কা পার্লারের একচিলতে কোণ, প্রেমের ঘ্রাণ সর্বত্রই। প্রথম দিনের ডেটটিকে সফল করে প্রেমের আগুনে দুজনের রঙ মাখতে হলে চাই শুধু একটু সতর্কতা, একটু বুদ্ধি। আফটার অল, হৃদয় জিনিসটা বড়োই ঠুনকো…প্রথম দিনেই তাতে কোনও ব্যাড ইম্প্রশনের চিড় ধরলে…সারানোটা কঠিন! তখন আবার পুরোটাই হয়ে যায় গসিপ!
লিংক
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।