অনুপ আমার বাসায় আসছিলো ওর প্রকাশিতব্য গ্রন্থটির পান্ডুলিপি নিয়া। আমরা ওর পান্ডুলিপি পড়লাম আর ছবিটবি তুললাম। মাঝখানে কথাবার্তা বললাম।
নৃপ অনুপের বইটিতে তিনটি অংশ থাকছে:
১.প্রতি,পত্র: এ অংশে চিঠিপত্র
২.গীতল কৃত্য: এ অংশে গান
৩.কথামৃত: এ অংশে কবিতা
আমি ওর অনুমতি সাপেক্ষে একটা চিঠি আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।
প্রতি,
দরজা।
প্রিয়তম দরজা,
ফেরার সময় হলেই মনে হয় তোমায় বিদায় জানাচ্ছি। কেননা আমাদেরও চাহিদা মাফিক সেরে নিতে হয় নিজ নিজ গন্তব্যের পথ। পূর্ব পুরুষের রৌদ্র্ছায়া এখনো পরিচিত হয় দেয়ালের প্রযতেœ যেখানে তুমিই সংযোগকারী সাঁকো।
আত্মার অন্তর্গত ঝড়ে একই সাথে ঢেউ খেলে চুলে ও ফুলে। আবরণ ভেঙ্গে ফোটে ভেতরের অচেতন মুখোশ।
তুমিই বলো, একবার যদি হাঁটা ধরি প্রাগৈতিহাসিক কালের দিকে প্রথমেই পার হতে হবে বৈদ্যুতিক পুল, যার অন্যপ্রান্তে সফল আলেকজান্ডারের হাসি দেখে আমরাও হেসে ফেলি সুখে-দুখে-ইঙ্গিতে।
ঐসব বাদ দিয়ে একবার আত্মাকে ঝড়ের হাওয়ায় উড়িয়ে হাসো বন্ধু; আকাশে উড়ে যাবে তোমার সকল দীনতা। বাতাসে খেলে যাবে বরফের ভাঙ্গা নদী। ছিটকিনির ব্যবহার হবে না দরকার।
পেছনে পালাবার রাস্তা নেই খোলা।
পৃথিবীর সবকটি দরজায় তালা মেরে চাবি নিয়ে চলে গেছে কেউ একজন। আর আমি ক্রমশই নিস্তব্ধ প্রান্তর থেকে দেখতে থাকি প্রচণ্ড বিস্ফোরণের বুকফাঁটা আর্তনাদ।
মুক্ত কিংবা বদ্ধ দরজা, আমি টের পাচ্ছি আমার মৃত্যু ঘটছে; খুব ধীরে ধীরে। পৃথিবীরও মৃত্যু ঘটছে। চিৎকার হারিয়ে গেছে বোবা হৃদস্পন্দনে।
তোমাদের ভিন্ন ভিন্ন চক্রের বিরুদ্ধে আজ থেকে শুরু হবে চক্রান্ত আমার Ñ এই বলে দরজা ঠেলে বাইরে বেরুতেই কাকের সাথে আমিও ভিজি ছেঁড়াখোড়া রাস্তার কান্তিহীন বৃষ্টিতে। যেই বরষায় জমে থাকে ফেরার তাগিদ, দরজার আশ্রয়।
এবার আমি আবার অন্য একটি দরজা ঠেলে আরেকটি দরজার মধ্যে প্রবেশ করতেই ভাবনা এলো মনে, আর কতো দরজার দূরত্ব নির্ণয় করে যেতে হবে, অন্য দরজার প্রান্তে যাওয়ার আগ পর্যন্ত।
এবার আমি চললাম তাহলে,
দরজা খুলেই রাখো।
ইতি
নৃপ অনুপ,
০৮.০৯.২০০৭
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।