আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মঈনুলের ডায়েরি এবং তার কিছু খায়েশ কথন!!!

!!!

দেশে অনেক নামকরা আলবদর, রাজাকার আছে। তারা অনেক বিখ্যাত। মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে সর্বোচ্চ ডিগ্রিধারীদেরকে দেশের জনগণ যত না চেনে, তার চেয়ে বেশি জনপ্রিয় দেশিয় আমিরের লেবাশধারী কিছূ পাতি নেতা। দেশের নাগরিক হিসেবে এরা কোনদিন জাতীয় মর্যাদা বা সম্মান না পেলেও (যদি এরা ক্ষমতায় না আসেন) এরা কিন্তু বিখ্যাত! মহা বিখ্যাত! আমাদের মঈনুল হোসেনও তেমনি একজন বিখ্যাত মানুষ। প্রধানউপদেষ্টাকে যতজন না চেনে তার চেয়ে বেশি লোক মইনুল হোসেনকে চেনে।

জনগণ তাকে ভালো কাজের সাক্ষী হিসেবে স্মরণ না করলেও মনে রাখবে সারা জীবন। তিনি খুব সাহসী (!) লোকও বটে। মিডিয়ার সামনে দাঁড়িয়ে মিডিয়ার বিরুদ্ধেই কথা বলতেন। ২০০৭ সালের সবচেয়ে বিখ্যাত মানুষ হিসেবেও তাকে উল্লেখ করা যায়। এমনকি তিনি যদি দেশ ছেড়ে পালিয়ে না যান তবে ২০০৮ সালেও ক্ষমতায় না থেকেও বিখ্যাত হওয়ার একটা সম্ভাবনা আছে! গতকালের (১৫/০১/২০০৮) দৈনিক ভোরের কাগজে (Click This Link ) View this link তার কিছু খায়েশ ও আয়েশের কথা ছাপা হইয়াছে, উহা কেহ চাইলে চোখ বুলিয়া দেখিতে পারেন।

আর আমিও উনাকে নিয়া কিছু জ্ঞান গভীর আলোচনা করিলাম! ধৈর্য্য থাকিলে পড়িয়া লইবেন। মঈনুলের দীর্ঘদিনের খায়েশ ছিল মিডিয়া গুরু হইবেন। ঠিকই একদিন আলাদিনের দৈত্য তার সামনে হাজির হইলো, চেয়ে বসলেন তথ্য মন্ত্রণালয়। পেয়েও গেলেন, সাথে ফ্রি পেলেন আইন মন্ত্রণালয়ও। একেবারে মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি।

দেশের মিডিয়াগুলো নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি এবার নয়া কিছু আইনও প্রসব করা যাবে! নিজের ভাইকে গরু দাবর দিলেন। ভাই ভয়ে হিজরত করিলেন। ইত্তেফাক দখল হইলো। মঞ্জুপন্থীদের সবাইকে বাধ্যতামূলক বরখাস্ত করা হইলো। নিজের বউ ও ছেলেকে বসানো হলো সেখানকার গুরু দায়িত্ব দিয়ে।

ইত্তেফাক পরিণত হইলো ইত্তে-ফাঁকে! কয়েকশত কর্মীর বেকার হওয়ার মধ্যদিয়ে শুরু হলো মঈনুলের রথযাত্রা। এবার তার আরও একটি হাউশ হইলো তার; টিভি চ্যানেলের মালিক হইবেন। একটা ভালো টিভি চ্যানেল দিতে কয় টাকা লাগে? -স্যার কয়েক'শ কোটি টাকা। চশমার উপর দিয়ে চোখ বড় করে তাকিয়ে বললেন-এত টাকা ? (সবার জ্ঞাতার্থে বলছি, মঈনুল হোসেন তার এলাকায় কিপ্টুস (কৃপণ) নামে পরিচিত। ) কিছুক্ষণ চিন্তা করে বললেন-এরকম রেডি চ্যানেল দেশে কোনটা আছে? -স্যার সিএসবি নিউজ।

খুঁজে দেখ ওদের কী ত্রুটি আছে? -স্যার বিটিআরসি'র ফ্রিকোয়েন্সী লাইসেন্স নিয়ে একটু ঘাপলা আছে। -ও.কে.; আটকাইয়া দাও! তবে তা করার আগে দেশবাসিকে তো জানাতে হবে ওদের জালিয়াতির কথা। -স্যার এ খবর পত্রিকায় প্রকাশ করা যায়। ঠিক আছে ব্যবস্থা কর। দেশের প্রথম শ্রেণীর কয়েকটি পত্রিকাকে দিয়ে তা ছাপানোর চেষ্টা করা হলো।

(প্রথমআলোকেও নাকি বলা হয়েছিল)। কিন্তু তারা রাজি হলো না। অবশেষে গরিব মানুষের পত্রিকা, মঈনুলের কুটিকালের দোস্ত- নাঈমুল ইসলামের আমাদের সময়ে ধারাবাহিকভাবে প্রচারিত হলো সেই খবর। তবে স্বয়ং ঈশ্বর সেই যাত্রায় সিএসবিকে বাঁচিয়ে দিলেন। এ ধরনের জটিলতা জরিমানা দিয়ে মাপ পাওয়া যায়।

সিএসবি তাই করলো। মঈনুলের বাসনার আকাশে মেঘ! হাউশ মিটাইতেই হইবো, বিকল্প পথের সন্ধানে নামলেন... ঢাকা ভার্সিটিকে কেন্দ্র করে শুরু হলো অসহযোগ আন্দোলন। মঈনুল সাহেব বিকেল ৪টায় ঘোষণা দিলেন রাত আটটা থেকে কারফিউ। সিএসবি অন্যতম সুন্দরি প্রেজেন্টার নাজনিন নাসির দোলা প্রশ্ন করলেন- ভার্সিটির ছাত্র-ছাত্রীরা এই অল্প সময়ের মধ্যে কীভাবে হল ত্যাগ করবে? মঈনুল সাহেবের মুখে জবাব নেই। ফোন রেখে দিলেন, সুন্দরী প্রেজেন্টার দেখে লজ্জায় ফোন রেখে দিলেন নাকি উত্তর দেওয়ার কিছু ছিল না তাহা স্পষ্ট বোঝা গেল না।

সেই লজ্জা থেকেই মঈনুল সাহেবের মনে ক্ষোভের উদয় হইলো। একদিন বিটিআরসি'র লোকজন সদলবলে আসিয়া সোজা চলে গেলেন ট্রান্সমিশন রুমে। সুইচ বন্ধ করে তারা কাকে যেন ফোন করে জানিয়ে দিলেন (ধারণা করা হয় তিনি ছিলেন মঈনুল হোসেন)। স্যার দ্যাখেন বন্ধ হইছে কিনা। সিএসবি'র কর্তারা কয়েকদিন ঘোরফেরা করলেন তার পিছে।

তিনি শেয়ার চাইলেন, তাও আবার পুরোটাই! সিএসবি দিল না। সিএসবির কর্মীরা মানবিক আবেদন জানাইলেন সাজা হোক মালিক পক্ষের তবে কর্মীদের কথা চিন্তা করে সিএসবিকে চালু করে দেওয়া হোক। কিন্তু ইতিমধ্যে নিজের পত্রিকায় কয়েকশত কর্মীকে ছাটাই করে তিনি অগ্নি পরিক্ষা দিয়েছেন। তাই কোন মানবিক আবেদন তার অন্তরে পৌছালো না। সিএসবি'র ঘরে ভাগ না বসাতে পেরে নিজের ছেলেকে দিয়ে চেষ্টা করালেন আলাদা একটি টিভি চ্যানেল খুলতে।

চ্যানেলের নাম নির্ধারণ করা হলো-`৭১' (একাত্তর)। কিন্তু নিজে তথ্য উপদেষ্টা হয়ে একটা টিভি চ্যানেলের অংশীদার হবেন, বাধা আসলো উপর মহল থেকে। এনএসআই এবং ডিজিএফআইয়ের তদন্ত রিপোর্টও থমকে গেল। ইতিমধ্যে মিডিয়া জগতে প্রভাব খাটাতে তিনি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার শুরু করেন ইত্তেফাককে। ইত্তে-ফাঁকের কোন কোন অবান্তর নিউজকে অনেকেই মঈনুল হোসেনের নিজের লেখা নিউজ বলেও ঠাট্টা করতেন।

এভাবে চলতে থাকে তার খবরদারি। সব পত্রিকাগুলো তার কথা মতো চললেও একটু ঘাড় ত্যারামি করে দৈনিক প্রথম আলো। একে কীভাবে সাইজ করা যায়? উছিলা আরিফের কার্টুন। কার্টুনটি পড়ে সবাই হাসলো, শুধু হাসলেন না বেরসিক মঈনুল। হুজুররা মাঠে নামলেন।

নাজিল হল নতুন একটি হাদিস- `প্রথম আলো কেনা এবং পড়া উভয়ই পাপ' (কোন নবী জীবিত না থাকায় তারা এই হাদিসটির পেটেন্ট পাইলেন না)। মঈনুল হোসেন কোনদিন মসজিদের বারান্দায় যাননি তবে দৈনিক প্রথম আলোকে নাকে দড়ি দিয়ে ঘুরানোর জন্য তিনি নাকি বায়তুল মোকারমের খতিবের পায়েও তেল মালিশ করেছিলেন (তারপরেই খতিব গেলেন পরপারে, জানিনা সেই ত্যালে ভ্যাজাল ছিল কিনা!!)। ঐ একই সময়ে লে-অফ ঘোষণা করা হলো দেশের অন্যতম পুরাতন পত্রিকা `দৈনিক আজকের কাগজ'কে। আর্থিক সংকট দেখিয়ে এই ঘোষণা দেওয়া হইলেও কাজী সাহেদ আহমেদের যে পত্রিকা চালানোর মতো আর্থিক সংকট থাকতে পারে তা অনেকেরই বোধগম্য হইলো না। দেশের যুদ্ধাপোরাধীদের বিচার নিয়ে প্রশ্ন উঠলো।

মঈনুল তখন লেজ গুটিয়ে বসে রইলেন, এদেরকে বিচার করার কোন আইন নাকি নেই! অথচ পদে পদে নিজের মতো আইন বানিয়ে তিনি প্রভাব খাটিয়ে যাচ্ছেন। র‌্যাংগস ভবন ভাঙ্গার জন্য আলাদত থেকে রায় আসার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই তা ভাঙ্গা শুরু হয়ে গেল, অথচ ঐ ভবনই ভাঙ্গার সময় দূর্ঘটনায় শ্রমিকদের লাশ চার দিন ঝুলে থাকলো তাতে কোন তাড়া লক্ষ্য করা গেল না। হাইরে দুনিয়া! সেলুকাস, সেলুকাস!!! সবমিলিয়ে মঈনুলের দাবানলে সবাই আজ ক্লান্ত, শ্রান্ত, অতিষ্ট, তিক্ত-বিরক্ত। দেশে আজ কয়েক হাজার মিডিয়াকর্মী ভবঘুরে দিন কাটাচ্ছে। তবে মঈনুল হোসেনও আজ বেকার।

ঈশ্বর উনাকে রক্ষা করুন। এ সরকারের মেয়াদ শেষে উনার হয়তো তুলোধুনা হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তাই ঈশ্বর উনাকে বিদেশে নিক্ষেপ করিয়া দিন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।