আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শূণ্যসময়ে পূর্ণতার খোঁজে...

কখনো চাই নাই দূরে থাকি...তবু দূরগুলো বারে বারে আসে...

বন্ধুমহলে আমি ডেকাডেন্স শব্দখান ব্যবহার করি এই কালের চরিত্র বুঝাইতে। শব্দটার আভিধানিক অর্থ অনেকটাই নেতিবাচক, কিন্তু তার ঐতিহাসিক মাহাত্ম নিয়া সে থাকে স্বমহিমায়। সোজাসাপ্টা কইলে ডেকাডেন্স কাল হইলো পুরানা সকল নিয়ম নীতির প্রতি অনাস্থাজ্ঞাপনের সময়। কিন্তু এই অনাস্থা'র প্রকাশ ঘটে ভবিষ্যির কোনরূপ নিশ্চয়তা ছাড়াই। মানুষ এইরম সময়ে দ্রোহী হয়, রাগে-অনুযোগে আপোষকামী থাকে...কিম্বা নৈরাজ্যবাদী হয়।

আর সবকিছুর মূলে থাকে অস্থিরতা...প্রশ্ন থাকে, কিন্তু সেই প্রশ্নের কোন উদ্দেশ্যমূখীনতা থাকে না। উদ্দেশ্যও হয়তো থাকে কিন্তু সেই উদ্দেশ্যের কোন লক্ষ্য থাকে না। লক্ষ্য'ও তৈরী করে অনেকেই কিন্তু সেই লক্ষ্যের কোন কাঠামোগত ধারণা থাকে না...সব ধোঁয়াশাই রয়ে যায়। এতো কথা-এতো সংজ্ঞার্থ কেরম হঠাৎ উদিত প্রসঙ্গ মনে হইলেও ভাবনাটা খুব প্রয়োজনীয় বিধায় আমি চিন্তার পরিমন্ডলে এই ডেকাডেন্স নিয়া চিন্তিত থাকি। একবিংশ শতকের প্রারম্ভিক কালে আমি বুঝতে চেষ্টা করি আমাগো এই সামাজিক-সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক আবহে আসলেই কি কোন কাঠামোগত রূপান্তরের প্রয়োজন আছে কী না।

ইতিহাসে যদি দৃষ্টি নিবদ্ধ করি তাইলে যেই সমৃদ্ধ অতীত দেখি, যেই পরিপূর্ণ সময়ের পায়েচলা উপলব্ধ করি, তার প্রাসঙ্গিকতা এই ২০০৭ সালে কদ্দূর আছে সেইটা নিয়া সংশয় তৈরী আছে এই সময়ের অধিকাংশ মানুষের অন্ধচেতনায়। অন্ধচেতনা কওনটা খুব রিস্কি...কিন্তু ইতিহাসের পঠন পদ্ধতি নিয়া প্রশ্ন তৈরী হইছে সারা বিশ্বের নতুন epistemologyতেই। আর যখন একইসাথে অন্ধচেতনা থাকে আবার দৃষ্টিভঙ্গীতে প্রশ্নমালা থাকে তখনই একটা শূণ্য সময় তৈরী হয়/হইতে পারে... এই শূণ্যসময় নিয়া আমরা প্রায় সকলেই খুব সন্দিহান থাকি...এই সন্দিহানী সময়টাই আসলে ডেকাডেন্স। পুঁজিতান্ত্রিকতার পূর্ণ প্রকাশ যেইরম অনেকের চিন্তারে পরিপূর্ণতা দ্যায়, আবার মানব সমাজের সবচাইতে বড় অংশটারেই অসহায় কইরা তোলে। এই অসহায়ত্ব সম্ভাবনার স্বপ্নরে স্তব্ধ করে, এই অসহায়ত্ব হয় লোভী করে- দুর্নীতিরে বাঁইচা থাকনের সংগ্রামের সাথে একীভূত করে, নয়তো নিস্পৃহ করে, তয় এই অসহায়ত্ব আবার ইতিহাসে অনেক সৃজনশীল উপস্থাপনার পিছনে বিরাট ভূমিকা রাখছে বইলা ধারণা করা হয়... ধারণা করা হয় এই বাক্যাংশ আসলে ডেকাডেন্স পিরিয়ডের মতোনই একটা এক্সপ্রেশন হইলো, কিন্তু তারপরেও সত্য কথন হইলো রূপকাশ্রয়ী কিম্বা নন্দনতাত্ত্বিক কাঠামোবাদী সাহিত্যের প্রবনতাটা ডেকাডেন্স কালের একটা বৈশিষ্ট্য হিসাবেই স্বীকৃত হইছে অতীতে।

মানুষ শুদ্ধতারে মাপকাঠি আর বিচারমূলক দৃষ্টিভঙ্গী দিয়া দেখে, সঠিক সাহিত্য, প্রমিত ভাষা'র কৌলীণ্য এইরম কাঠামোকেন্দ্রীক ভাবনাগুলি জাইকা বসে। শালীনতা-অশালীনতা এইরম বিতর্ক তৈরী হয়...কিন্তু বিতর্ক অনেক ভালো জিনিস হইলেও সেইখানেও মান নির্ধারণি চিন্তার স্রোতটাই প্রধান হয়...মান নির্ধারণি বিষয়টা সমস্যা তৈরী করে চিন্তার মুক্তিতে, বিকল্প ভাবনের কোন অবকাশ থাকে না। বিকল্প চিন্তার প্রয়োজনীয়তা নিয়া যদি কোন প্রশ্ন উঠে তাইলে কওনের কিছু থাকে না হয়তো...বিকল্প চিন্তা ছাড়া এই অসহায়ত্বের কালরে অতিক্রমনের স্বপ্ন দেখনটা সম্ভব কি না সেইটা নিয়া প্রশ্ন থাকলে আসলে আমার পুরা চিন্তা কাঠামোটাই ভুল প্রমাণিত হয়...কিন্তু বিকল্প চিন্তার বিচ্ছুরন ছাড়া কবে কি পাল্টাইছে!?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.