লাল খুব প্রিয় রং...রক্তও তাই!
হারাধনের কথা আপনাদের মনে আছে?
ওই যে একখান কবিতা (লেখকের নাম মনে পইত্তেছে না, চরি!) আছে না,
'হারাধনের দশটি ছেলে
একটি গেল...'
তো, আমাদের গ্রামের ইউনিয়নের প্রাক্তন (বছর আষ্টেক পূর্বে তিনি ইন্তেকাল করিয়াছেন) চেয়ারম্যান সাহেবও হারাধনের মতো ছিলেন। অবশ্য এককাঠি নীরস। কারণ উনার ছিল ৯টি ছেলে। তবে একটা জন্মের কয়েকমাস পরই মারা যায়। বাকি থাকে আট!
তখন, এলাকায় কানাঘুষা শুনিয়াছিলাম, একটি কণ্যার আশায়-আশায়ই নাকি....।
বেচারা। কিন্তু হারাধনরে মতো তারও সে আশা পূর্ণ হয় নাই।
বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে, যে দেশে বাপেরা খেতে না পেলেও ডজনখানেক সন্তান উদপাদনে তারা পিছপা হয় না। তারা বীরের জাতি। নারীরা বীরাঙ্গনা।
'প্রয়োজনে ভাতে মারব, পানিতে মারব, তবু সন্তান জন্ম আমরা দিয়েই ছাড়ব...' সংকল্প অনেকটা সেরকম।
ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে যে সন্তান জন্ম নিচ্ছে সে বিষয়ে কারো মাথা ব্যথা নেই। তাদের মাথায় একটাই চিন্তা, হয় ছেলে চাই নয় মেয়ে চাই। শুধু ছেলে হলে হবে না। শুধু মেয়ে হলেও নয়! নারী-পুরুষ সমান সমান!
সরকার কর্তৃক একটি স্লোগান ছিল, 'ছেলে হোক মেয়ে হোক, দুটি সন্তানই যথেষ্ট।
' স্লোগানটি বেশ জনপ্রিয় হলো। কিন্তু ফল দিল না। আবার পরিবর্তন করা হইল, 'ছেলে হোক মেয়ে হোক, একটি সন্তানই যথেষ্ট। '
অবস্থা তথৈবচ। দম্পতিরা মেনে নিতে পারল না।
যদি একটি সন্তান হঠাত বিনা নোটিশে অক্কা পায়, তবে?
তাহলে উপায় কী? এবার স্লোগান হলো, 'ছেলে হোক মেয়ে হোক, একটি সুসন্তানই যথেষ্ট। '
কিন্তু কথা থেকে যায়। জন্মের পরপরই তো ছেলে সু নাকি কু সেটা বোঝা যায় না। যদি বড় হয়ে কু হয়ে যায় তখন কি বুড়া বয়সে আবার? কী লজ্জা, ছি:!!
ওদিকে আরেকটি দুষ্টুছেলেরা (বি.দ্র: ব্লগার দুষ্টুছেলেকে বোঝাচ্ছি না!) স্লোগান দেয়, 'ছেলে মেয়ের দরকার নাই, স্বামী-স্ত্রী-ই যথেষ্ট। '
কিন্তু স্লোগানে কাজ হয় না।
এবার বিজ্ঞান এগিয়ে এল। রাজা এলো। কিন্তু রাজা রাজ্য চালাতে ব্যর্থ হলো। কিছুতেই জনসংখ্যা রোধ করতে পারল না। আধুনিকতার ছোঁয়া নিয়ে এগিয়ে এলো 'হিরো'।
'হিরো থাকলে রিস্ক নাই' স্লোগান নিয়ে।
কিন্তু কিছুতেই কিছু হয় না।
জনসংখ্যা বেড়েই চলে, হারাধনরা হারে না। জিতেই চলে। ছলে-বলে-কৌশলে!
যতই বলা হোক,
'হারাধন হেরে যা...',
....কে শোনে কার কথা!!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।