মেনে নিব না, আসে যদি ইসলামের উপর কোন আঘাত। মাঠে নেমেছি, হয় সফলতা নয়ত চাই শাহাদাত অনেকদিন ধরেই ইচ্ছা ছিল ঘুড়ে দেখব সব ভন্ড পীরের আস্তানা। আজ কথিত ঈদ। অনেক মুরিদান আসবে আজ তাদের বাবার কাছে। এই সুযোগ।
তাদের মাঝে ঢুকে গিয়ে তাদের আখরা সম্পর্কে সম্পুর্ণ তথ্য নিয়ে আসা যাবে। প্রথম টার্গেট ছিল দেওয়ানবাগি। বাংলাদেশে এই পর্যন্ত যে কয়েকজন কুলাঙ্গার আল্লাহ ও তার রাসুল (স.) সম্পর্কে অশালিন ভাষা প্রয়োগ করেছে দেওয়ানবাগির পীর তাদের অন্যতম।
ফজর নামায পড়েই রওনা হলাম। দুই ঘন্টা পর এসে পৌছলাম মতিঝিল।
এক বন্ধু থাকে আরামবাগের এক মেছে। তার কাছে মোবাইলটা রেখে এসে কয়েক চক্কর দিলাম বাবে রহমতের আশেপাশে (এখানের যে কোন এক বাড়িতে থাকে পীর) তারপর বন্ধুর থেকে জেনে নিলাম এলাকার সাইবার ক্যাফের ঠিকানা। তারপর একটা পোস্ট দিলাম। বন্ধু ভয় পায়, তাই একাই রওনা দিতে হল আমাকে।
দুপুর সাড়ে বারটার কিছু বেশী।
নটরডেম কলেজ থেকে আরামবাগ থানা পর্যন্ত দেওয়ানবাগির মুরিদরা মানবপ্রাচির গড়ে তুলেছে। তাদের অনেককে মনে হল শিক্ষিত, অনেককে সন্ত্রাস। মাঝখানে একটা জায়গা খোলা। সেখান দিয়ে মানুষ ঢুকছে। আমিও ঢুকলাম, তারপরেই দেখলাম উভয় পাশে কমপক্ষে দশ জন করে মুরিদান দাঁড়িয়ে আছে।
তারা আগত সবাইকে চেক করছে। সবার শেষের দুই জন মাটিতে বসে পা ও জুতা চেক করছে। ( প্রধানমন্তীর জন্যও এরকম নিরাপত্তা নেওয়া হয় কিনা কে জানে)
ভিতরে কার্পেট বিছানো, অনেক মানুষ বসে আছে তাতে। রাস্তার পাশে ফুটাপাতে পীর সাহেবের কারামতির বিভিন্ন জিনিস বিক্রি হচ্ছে। এক পাশে দেখালাম বিরাট লাইন।
-ভাই, এটা কিসের লাইন?
-হুজুর কেবলার সাথে দেখা করার লাইন।
যাহ! আর কি লাগে! পেটমোটা খাসিকে নিজের চোখে দেখা যাবে। লাইনের পাশেও চলতাছে ধুমধাম বেচা-কেনা। কেউ পেটমোটা খাসির ছবি বিক্রি করছে, কেউ তার উটের খামারের দুধ। আরেক জন দেখলাম লাইনে দাঁড়ানো লোকদের প্রশ্ন করছে, দরবারে এসে কার কি মানত পূর্ণ হয়েছে? (হায় আল্লাহ! তুমি মুসলমানদের তোমার কাছে চাইতে বলেছো।
আজ এরা কার কাছে চাইছে?)
সামনের একজনকে প্রশ্ন করলাম,
-বাবার কাছে কিভাবে মানত করতে হয়?
-বাবার হাতে কিছু দান করে যা চাইবেন তাই পূরণ হয়ে যাবে।
-আমার একটা ছোট মোবাইলের দোকান আছে। ব্যবসা খারাপ যাইতাছে। বাবার অনেক সুনাম শুনে এসছি। (পুরা মিছা কথা)
-সমস্যা নাই।
হুজুর কেবলার কাছে চাইলেই হইয়া যাইব।
প্রায় দশ মিনিট লাইনে দাঁড়িয়ে মুল আখড়া বাবে রহমতে ঢুকলাম। চার-পাঁচটা বাড়ি এর ভিতরে। ভাবলাম এইবার বুঝি পেটমোটার সাথে দেখা হবে। এক জায়গায় টিকেট বিক্রি চলছে।
২০ টাকা দাম। আমাদের লাইনে দাঁড় করিয়ে নেওয়া হল আরামবাগ গার্লস স্কুলে।
সেখানে গিয়ে জানলাম এটা তবারক খাওয়ার টিকেট। স্কুলের চার তলায় একটা রুমে বসানো হল। তারপর টিকেট ফিরিয়ে নিয়ে তবারক বিতরণ শুরু।
পাশের জন সিরাজগন্জ থেকে এসেছে। তাকে বললাম, ভাই, আমার শরীরটা অসুস্হ লাগতাছে। আপনে আমারটা খেয়ে নিন।
আরামবাগ স্কুল থেকে বের হয়ে এলাম। পুরাটা এলাকাটা ঘিরে রেখেছে আশেকে রাসুল নামধারিরা যাদের কারো মুখেই রাসুলে(স.) এর সুন্নত দাড়ি নাই।
আর তাদের মুখে একটু পর পর শুনা সাচ্ছে, সবাই বাম সাইড দিয়ে চলাচল করুন। যতদুর জানি, ডান সাইড দিয়ে চলাচল করা ইসলামের নিয়ম। একজনকে প্রশ্ন করে জানতে পারলাম, দুপুর দুইটার পর বাবাজানের দর্শন লাভ করা যাবে। আল্লাহর সাথে মিছিল করছে এরকম দাবি করা লোকের পীছনে নামায পড়া না পড়া সমান। তাই দুটানায় পড়ে গেলাম, বাহিরে কোথাও নামায পড়ব না পেটমোটাকে দেখেই এখান থেকে বের হব? আল্লাহ আমার নামায পড়াটাই পছন্দ করলেন।
হঠাৎ একজন মাস্তান টাইপের গার্ড আমাকে আটকাল।
-আপনি আর ওদিকে যেতে পারবেন না।
-কেন? সবাই তো যাচ্ছে?
-সবাই আর আপনি আলাদা। আপনাকে অনেক্ষণ যাবত ফলো করা হচ্ছে।
-আমার পকেট চেক করেন।
টাকা ছাড়া কিছু নাই। বাবার কাছে এসেছিলাম দোয়া নেয়ার জন্য।
তারপরেও আমাকে থাকতে দিল না মানবপ্রাচিরের ভিতরে। ব্যার্থ মনোরথে ফিরে এলাম। জুমার নামায পড়লাম।
বন্ধুর বাসা হয়ে ফিরে এলাম এলাকায়।
-----------------------------------------------------------
ব্যবসার দারুন আইডিয়া, অল্প দিনেই হয়ে যান কোটিপতি
দেওয়ানবাগির কিছু কথা!!! বেশী জোরে হাইসেন না কিন্তু ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।