যুদ্ধাপরাধীর বিচার ও জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবী করছি
৫০ বছর যাবত নিজেদের পরিচয় গোপন করে দুইজন নাজী দালাল (রাজাকার) প্রায় অর্ধ শতাব্দী কানাডায় বসবাসের পরও শেষ রক্ষা হয়নি। সাম্প্রতিক তাদের নাগরিকত্ব বাতিল করেছে ফেডারেল কোর্ট। এতে তাদের জার্মানীতে ফেরত পাঠানোর পথ পরিষ্কার হলো । এখন তাদের ডিপোর্টটেশনের শুনানী চলছে। ধারনা করা হচ্ছে যে দ্রুতই তাদের জার্মানীতে ফেরত পাঠানো হবে এবং সেখানে তারা যুদ্ধাপরাধী হিসাবে বিচারের সন্মুখিন হবে।
এই দুই জার্মান রাজাকারের নাম হ্যালমুট ওভারল্যান্ডার ও জেকব ফার্স্ট।
উল্লেখ্য যে, ওভারল্যান্ডারের নাগরিকত্ব ২০০১ সালে একবার বাতিল করা হলেও প্রক্রিয়াগত ত্রুটির কারনে কোর্টের আদেশে তার নাগরিকত্ব পূর্নবহাল করা হয়।
২০০৩ সালে কোর্ট রায়ে বলে - ফার্স্ট ১৯৪৭ সালে জার্মান নাগরিক হিসাবে ক্যানাডায় আসে - যার আগে সে নাজী বাহিনীকে ইউক্রেইনে হত্যাকান্ডে সহায়তা করে। কিন্তু তাদের সমর্থকরা তাদের কাজকে সমর্থন করে বলে - তখন ওরা জার্মান বাহিনীর সাথে ছিল -কিন্তু নিজেরা সেই হত্যাকান্ড ঘটায়নি।
এই প্রসংগে কানাডার বিচার মন্ত্রী রব নিকোলসন বলেন - এখন সময় হলো এগিয়ে যাওয়ার এবং সেই জন্যেই কানাডা যুদ্ধাপরাধের বিষয়টা যথেষ্ঠ গুরুত্ব দিচ্ছে।
তিনি আরো বলেন - কানাডা কখনই যুদ্ধাপরাধী, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধী আর গনহত্যাকারীদের জন্যে স্বর্গরাজ্য হতে পারে না।
উল্লেখ্য যে, কানাডা ১৯৭৭ সাল থেকে এই পর্যন্ত ৫৪ জন যুদ্ধাপরাদীর নাগরিকত্ব বাতিল করে বিচারের জন্যে পাঠিয়েছে।
(২)
খবরটা পড়ছি - আর ভাবছি - বাংলাদেশের দূর্ভাগ্য সেই দেশের দালালরা এখন দেশের নীতি নির্ধারন করে। দালালদের নেতা মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ককে স্বীকৃতি দেবে কি দেবে না তা নিয়ে আলোচনা করে তথাকথিত মুক্ত সাংবাদিকতার ছদ্মবেশধারী পত্রিকাগুলো।
দালালরা নিজেদের রক্ষার জন্যে যতরকম যুক্তি - তর্ক - প্রমান - অপ্রমান দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করবেই।
কারন সেটা তাদের জীবন-মৃত্যুর প্রশ্ন। কিন্তু হতাশ হয়ে দেখি একদল মানুষ উন্নয়নের নাম করে বা নিরপেক্ষতার নাম করে দালালদের রক্ষায় এগিয়ে আসে। আবার দেখলাম একজন লেখক বুদ্ধিজীবি মানবতার নামে দালালদের পক্ষে নৈব্যক্তিক মনোভাব দেখিয়ে বিরাট সাহিত্য করছেন।
কিন্তু যখন দেখি কানাডায় কোন যুদ্ধাপরাদীর বা দালালের খবর দেখি - কই তখনতো কাউকে দেখিনা সেই দালালদের পক্ষে কথা বলতে। নানান অজুহাতে বিচারকে প্রভাবিত বা বাতিলের দাবী করতে।
উপরে যে দুই জনের নাম দেখা যাচ্ছে - তাদের একজনের বয়স বর্তমানে ৯০ - এলঝাইমার রোগে প্রায় অচল। কিন্তু কেহ তাদের জন্যে মানবতার জিকির তোলে ক্ষমার কথা বলছে না। কি সরকারী দল - কি বিরোধী দল - কেউই তাদের রাজনৈতিক স্বার্থে এই মামলাকে ব্যবহার তো করছেই না - বরঞ্চ বিরোধী দল তাদের ডিপোর্ট করতে বিলম্বের কারনে সরকারের কড়া সমালোচনা করছে।
মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধকারী - গনহত্যার সহায়তাকারীদের আইনের বাইরে রেখে যতই সুশাসন আর মানবিক সমাজ নির্মানের চেষ্টা করা হোক - সেটা ব্যর্থ হতে বাধ্য। বাংলাদেশের মানুষ যতদ্রুত এই সত্যটা উপলদ্ধি করতে পারবে ততই মঙ্গল।
সুতরাং আসুন সবাই মিলে ১৯৭১ এর যুদ্ধাপরাধী দালাল এবং ঘাতকদের বিচারে সোচ্চার হয়ে বাংলাদেশকে একটা সভ্য ও মানবিক দেশ হিসাবে গড়ে তুলতে ঐক্যবদ্ধ হই। মানবতার জয় অনিবার্য!
(সূত্র - টরন্টো স্টার - মে ২৫, ২০০৭)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।