পথ চলতে গিয়ে হোঁচট খাওয়াতেও কিন্তু আনন্দ কম না !
আজ বুয়েটে গিয়েছিলাম, প্রিয় বুয়েটে। উদ্দেশ্য DSP প্রোজেক্টের অগ্রগতি আরিফ স্যারকে দেখানো + বুয়েট খোলার কতটা কি হল - তা জানা।
প্রথমেই দুঃসংবাদ। ল্যাব + অফিস + টিচার্স কমন রুম সব চষেও স্যারক পাওয়া গেল না। ওনার মুঠোফোন সব সময় বন্ধ পাই।
বাসার ল্যান্ডফোনে যোগাযোগ করে জানা গেল স্যার দেশে নেই। ফিরবেন দশ দিন পর। অনেক খেটেখুটে কাজটা এগিয়ে এনেছিলাম, আবার আটকে গেল। কী হবে আর এগিয়ে? বুয়েটও তো আটকে আছে। খোলার কোন হদিস পেলাম না।
মেইন গেট দিয়ে বেরুতে গিয়ে দেখি লোকজনকে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। ছাত্রদেরতো নয়ই। আমি অবশ্য ব্যাংকের পেছনে চিপা রাস্তা দিয়ে ঢোকার সময় কোন বাধা পাইনি। তবে লাইব্রেরিতে ঢুকতে গিয়ে ছাত্র পরিচয় দেয়ায় আটকে গিয়েছিলাম। সিনিয়র সাকিব ভাইকে দেখলাম।
তিনি মনে হয় সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ঢুকেছেন। এক যুগল রিকশা থেকে নেমে ভেতরে ঢোকার জন্য গার্ডের সাথে অনেকক্ষন চাপাচাপি করল, নীরস গার্ড তাদের প্রেমের মর্ম বুঝল না। তাই ইউটার্ন। (শ-কার) আমরা ক্লাস করার চান্স পাই না, আর তারা এসেছে প্রেম করতে। (দুঃখিত, আমিও বোধহয় গার্ডের মত নীরস হয়ে গেছি।
)
আরেকজন ভদ্রলোকও গেটের কাছে আটকে গেলেন। তিনি কম্পটোলার অফিসে যাবেন। বারবার বলছেন, "আমি একজন অফিসার"। কিন্তু তার ছোকরা টাইপের ছেহারায় গার্ডের মন গলছে না। অন্যদিকে আমাকে দেখে সসম্মানে গেট খুলে বেরুবার পথ করে দিল।
(বুড়োটে চেহারার জন্য কখনো কখনো সুবিধাও পাওয়া যায় )।
গেটের নাটক শেষ করে পা বাড়াই পলাশীর দিকে। সবসময় গমগম করা জায়গাটায় কেমন যেন শুনশান নীরবতা। ফটোকপি দোকানগুলোর মামারা মেশিন বন্ধ করে শূন্য চোখে রাস্তার দিকে তাকিয়ে আছেন, যদি কোন চোথাবাজ ছাত্র চোখে পড়ে। আমাকে দেখেও জাহাঙ্গীর ভাই বা মুনীর মামা ডাকল না।
তারা জানে- এই শূন্য মরূদ্যানে আমি বিশেষ কোন চোথার বাণী বয়ে আনতে পারিনি। পলাশীর প্রান্তর আজ যেন মানবতার পরাজয়ের শোকে মূহ্যমান। দ্রুত পা চালিয়ে পরাজিত সৈনিকের মত অনেকটা পালিয়ে এলাম সেখান থেকে।
জানিনা আবার কবে মাথা উচুঁ করে ফিরতে পারব আমাদের প্রিয় বুয়েটে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।