মায়াবতির মায়াভরা মুখখানি ভেসে ওঠে। আনমনে তাকেই ভাবি। মুঠোফোনটা বেজে উঠলে ভাবি এ বুঝি মায়াবতির ফোন এলো। অজানা নাম্বার গুলো রিসিভ করতাম না আমি। অথচ এখন অজানার প্রতিক্ষায় আমি ।
অজানা নম্বর থেকে সেই সুপ্রিয় অতি আপন কন্ঠে একজন বলে উঠবে ।
হ্যালো এটাকি সেলিম জামশেদ?আমি মায়াবতি। আপনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চাই। ছায়ানটে আসবেন প্লিজ।
শুধইু নিছক কল্পনা।
যা হবার নয়। তাই ভাবছি!অন্য কোন উপায়ে মায়াবতির সাথে দেখা হওয়ার কোন সম্ভাবনাই নাই।
অফিসিয়াল কাজকর্মে মন বসে না। কেন যে মায়াবতীর কনটাক্ট নাম্বার নেইনি। সে তো আর আমাকে কল দেয়ার বিশেষ কোন কারন নাই।
এতক্ষণে হয়তো ভুলেই গেছে । যাক দিন যাচ্ছে আমার তারই ফোন কামনায়।
এরই মধ্যে হঠাৎ করে বেজে ওঠে মুঠোফোন। "সেলিম ফোন রিসিভ করতে এত দেরী কেন?তোমার সুন্দরী কলিগের সাথে আড্ডা মারো সব সময় তাই না। "
আমার জীবনে ছায়াবতীর আগমন হয়েছে বেশ আগেই।
রবীন্দ্রনাথের ভাষায় না চাহিলে যারে পাওয়া যায় তেয়াগেলে আসে হাতে প্রভাতে যে ধন হারায়েছি আমি পেয়েছি আধার রাতে।
ছায়াবতি আমার পিছনে ছায়ার মতই লেগে আছে । তাকে আমি ছোট বোনের মত স্নেহ্ করি। আর সে আমাকে বালকবন্ধুর মত ভালোবাসে। খোঁজ খবর যত্ন যত্তিতেও একশ তে একশ দশ।
তার আগমন ওপর ওয়ালার নির্দেশে। কোথ্থেকে আমার নাম্বার পেয়েছে তার কোন সুরাহা এখনো করতে পারিনি। ওই ব্যাপারটি সে সুকৌশলে এড়িয়ে যায়। হঠাৎ একদিন তার কল আসে। দারুণ সুমিষ্ঠ কন্ঠ।
আমাকে ফোন করার সঙ্গে সঙ্গে মেয়ে কন্ঠ অজানা কন্ঠ বুঝে মোটামুটি তাচ্ছিল্যের সঙ্গে কল টা কেটে দিই। সেই রাতে বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনাল। ব্রাজিলের সঙ্গে ফ্রান্সের । ২০০৬ সালের ঘটনা। শহিদুল্লাহ হলে বড় পর্দায় খেলা দেখার অন্যতম সংগঠক আমি।
ব্রাজিলের সাম্বা নৃত্য সম্বলিত গানটা বার বার বাজাচিছ। আর সাম্বা নাচ দেয়ার ব্যর্থ চেষ্টা করে যাচ্ছি। উত্তাল সকল ব্রাজিল সমর্থক। ব্রাজিল টিমের দারুন ভক্ত আমি। তিন বার ব্রাজিল গানটা বাজালাম।
বিধিবাম। ব্রাজিল হেরে বসলো। এক জিদান সব ছারখার করে দিলো। রোনাল্ডো বোতলবন্দি আলাউদ্দিনের জ্বিনের মত চরম ফ্লপ। আফসোস আরো বেড়ে গেলো ।
রাগ ওঠলো কোচের উপর। আমার প্রিয় খেলোয়ার রোমারিওকে দলে নেয় নাই। সারারাত আর ঘুম হলো না। একটা মেয়েকে অবজ্ঞা করা খুব গর্হিত মনে হলো। কোন কিছু খারাপ হলেই কেন যেন নিজের দূষ গুলো বের করার অভ্যাস হয়েছে।
তাই এই দূষ অন্বেষণ কর্মসূচি। ছায়াবতিকে অবজ্ঞা করার শাস্তি হিসেবে ব্রাজিল পরাস্ত। কত বড় সর্বনাশ হলো!
সকালবেলায় ছায়াবতির কল। আমি খুব আন্তরিকভাবে রিসিভ করি। বুঝলাম তিনি ইংলিশ মিডিয়ামের ছাত্রি।
আকারে ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিলেন তার সুন্দর্যগাথা আর
প্রাচুর্যের বয়ান। তার কথাগুলো শিশু শুলভ। তার আগ্রহে মনে হলো দেখা যাক কোন অচিন দেশের রাজকন্যা উঠলো আমার নায়। তার অনুরোধে আমাদের প্রথম সাক্ষাৎ চারুকলার বকুলতলায়। তাকে কে যেন বিরক্ত করছে।
আমার রাজত্বে কার এত বড় স্পর্ধা। জীবনে দেখিনাই। একমাত্র মুঠোফোনটাই ভরসা । শার্ট প্যান্ট পড়া একটা মেয়ে কি যেন আঁকছে। সেটা ছিলো শুক্রবার ।
সকাল ১০ টা বাজে। তাকে নিশ্চিৎ করলাম কল দিয়ে। চশমাখানা মুখ থেকে খোলার সঙ্গে সঙ্গে তার পটলচেরা সুরমামাখা চোখ। যেন
প্রহরশেষে দিনের আলোয় সেদিন চৈত্রমাস
তোমার চোখে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ।
এর চেয়েও সুন্দর।
আমি কিন্তু আমার পরিচয়ে যাই নাই। তাকে কোন ছেলে নাকি ডিস্টার্ব করছে তাই আমার এক বিশ্বস্ত বন্ধু তাকে সেভ করার জন্য পাঠাচ্ছি। এই বাহানায় আমিই সেখানে হাজির। আমি ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে একদল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জোটে গেল । আমাকে সালাম কালাম শুরু হয়ে গেল।
তাদের বিদায় দিয়ে ছায়াবতির সঙ্গে দৃষ্টি বিনিময়। ততক্ষণে আপদ কেটে গেছে।
আপনি টিনা।
হা।
সেলিম আপনার কে হয়?
ফ্রেন্ড
ফ্রেন্ড?
হা বয় ফ্রেন্ড
কোথায় সেলিম আর কোথায় আপনি? তার সঙ্গে আপনি পুরাই বেমানান
এর মধ্যে বাদামওয়ালার আগমন।
প্রেম হবে বাদাম চলবে না সেতো অসম্ভব ঘটনা।
এই বাদাম ওযালা তুমি বল সেলিম ভাইয়ের সঙ্গে এই মেয়েকে মানাবে?
বাদমাওয়ালা ভ্যাবচ্যাকা খেয়ে গেল?কি উত্তর দিবে? আমি ইশারা করার সঙ্গে সঙ্গে না সূচক জবাব। দেখলাম টিনা রেগে লাল হয়ে গেছে।
বিদায়ের আগে বললাম সেলিম ভাইকে আমরা খুব ভয় পাই। আপনি তার কাছে নালিশ দিয়েন না তাহলে আমি শেষ।
আপনি তাকে ভুলে যান । তার পিছনে অনেক লম্বা লাইন।
টিনা ওয়েস্টার্ন পোষাকে সদ্য আকাশ থেকে নামা পরী। দেখে মনে হচ্ছে বার বছরের বালিকা। স্রষ্টা যে মানুষকে সর্বশ্রেষ্ঠ সুরতে সৃষ্টি করেছেন।
তার জলন্ত উদাহরন টিনা। ওকে স্হে করা যায়। আদর করে চুম্বনও দেয়া যায়। কিন্তু ওষ্ঠে নয় তার ললাটে্ । মনে হচ্ছিলো তাকে একটা আইচক্রিম খাওয়াই।
কিংবা আমার প্রিয় ফুসকা। বেশিক্ষণ থাকা যাবে না। ওর জন্য মায়া বেড়ে যাচ্ছে । ধরা পরে যাব। এদিকটায় লোকজন বাড়ছে।
তাকে পরিচয় দিলাম আমি রাহুল। সেলিম ভাই জনপ্রিয় লোক কিন্তু দেখতে ভালো না। আপনার মাথা থেকে সেলিম ভাইয়ের চিন্তা ডিলিট করেন। ভালো থাকবেন। আসি।
বারো বছরের বালিকা আমার প্রেমিকা হয় কিভাবে?তবে সে একটা শোপিচ সুকেছে সাজিয়ে রাখার মতন সুন্দর নিষ্পাপ।
জুমআর নামায় পড়লাম এর মধ্যেই ছায়াবতির কল।
হ্যালো সেলিম !এ কাকে পাঠিয়েছো?
কেন? আমার অত্যন্ত বিশ্বস্ত একজন।
তুমি নাকি দেখতে অসুন্দর?
হা। আগেইতো বলেছি।
রাহুল দেখতে কেমন?
চেহারা সুন্দর হলেই তো আর মানুষ ভালো হয় না।
একদম ঠিক তবে রাহুল দেখতেও ভালো আর ছেলে হিসেবে আরো ভালো।
মোটেই না। সে বলে কি তুমি নাকি কুৎসিত। তোমার সঙ্গে আমাকে মানাবে না।
আর কখনো ওই ফাজিলটাকে আমার কছে পাঠাবে না।
সে আমাকে সেইরকমই বলেছে। সহজ সরল মানুষ সত্য কথা বলে ফেলেছে। আপনি আমি হযত মানানসই নই। এমনটা তো অসম্ভব ব্যাপার না তাইনা?আচ্ছা সে আর আপনার কাছে যাবে না।
ভালো থাকবেন।
মনে হচ্ছিলো ওই বাদরটাকে থাপ্পর দিয়ে দাত ফেলে দেই।
আচ্ছা ওই ছেলের সাথে আপনাকে মানাবে?
কখ্খনোই না।
আমার ও তাই মনে হয়।
বোঝাই যচ্ছিলো মায়াবতির রাগ তখন চরমে।
ছায়াবতি কল কেটে দিলো।
আমি মনে মনে নিজেকে অপরাধী ভাবতে থাকি?ধনীর দুলালী । অনেক আহলাদী মেয়ে। তার জন্য শুভকামনা করতে থাকি। একজন রাজপুত্র তার জীবনে আসুক।
আশংকা হয়। অভিমান করে আবার দুর্ঘটনা না ঘটায়। মরে টরে গেলে মহাবিপদ। সে মরে গেলে আমারও নিঘৃাত মৃত্যু!তাকে ধীরে সুস্থে প্রেমের আসক্তি কাটানো লাগবে। আমার উপর তার সে কি অধিকার?তার জন্য আমার একটাই কামনা।
কন্যা ভুল করিস না.......
সে ছায়ার মত আমার পিছু লেগেই আছে। তাকে আমার অবস্থা ও অবস্থানের ফিরিস্তি দিতে দিতে আমার জান শেষ। আমার রাশির দূষ। মেয়েরা কেন উতলা হয়ে যায় স্রষ্টাই জানে। একজন হস্ত রেখাবিশারদ আমার হাত দেখে বলেছিলো সাবধান বিয়ের আগে সতীত্ব হারাবেন না।
আমি জিজ্ঞাসা করি সতিত্ব?
আরে ভাই বুইঝা নেন। আপনার কন্যা রাশি। ছোট বড় নাই। যে মেয়ে সাক্ষাৎ পাবে সেই উতলা হবে। বড় ছোট নাই!সাবধান।
তবে আপনি কিন্তু একজন মেয়ের প্রেমে পড়বেন। কিন্তু ।
কিন্তু কি?
থাক না বলি। ব্যাপারটা ভালো না।
তার কথা আমি ঠিকই বিশ্বাস করেছেলাম।
কিন্তু মায়াবতী তো আমার জন্য উতলা হয় নাই। একটা বার কলও দেয় নাই। ছায়াবতীর অসংখ্য কলের ভিতর একটি কল কি মায়াবতির হতে পারে না?
মায়াবতি
তুমি কোন কাননের ফুল কোন গগণের তারা
তোমায় কোথায় দেখেছি যেন কোন স্বপনের পারা
কবে তুমি গেয়েছিলে আখির পানে চেয়ে ছিলে
ভুলে গিয়েছি
শুধু মনের মধ্যে জেগে আছে
ঐ নয়নের তারা।
চলবে......
---------------------------------------------------------------
বাচ্চু রাজাকারের ফাসির হুকুম হলো
আব্বু রাজাকার গুলোর দেরী কেন?
একটা খুনের সাজা মৃত্যু দন্ড
একটা ধর্ষণের সাজাও মৃত্যু
তাহলে গণহত্যা গণধর্ষণ দেশের সম্পদ বিনাশ আর দেশ দ্রোহিতা এর কি শাস্তি হওয়া উচিৎ?
মৃত্যুদন্ড নিশ্চয়ই?কিন্তু এত দেরিতে কেন?তার তো বৃদ্ধই হয়ে গেছে। তাদের দ্রুত বিচার কামনা করছি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।