গভীর কিছু শেখার আছে ....
১৩ জুলাই শুক্রবার চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হলো কালচারাল জার্নালিস্ট ফোরাম অফ বাংলাদেশ (সিজেএফবি) ও আরটিভির যৌথ উদ্যোগে পারফরম্যান্স অ্যাওয়ার্ড-২০০৬। ২০০১ সাল থেকে সিজেএফবি এ পারফরম্যান্স অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান চালু করে। আর এবার তাদের সঙ্গী হয়েছে আরটিভি। জমকালো ও চমকপ্রদ এবারের অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা সিটি কর্পরেশনের মেয়র সাদেক হোসেন খোকা। অনুষ্ঠানে টেলিকম পার্টনার ছিল একটেল, স্টাইল পার্টনার মাত্রা, বিউটি পার্টনার পারসোনা ও ড্রিংক পার্টনার ইওরো কোলা।
পুরো অনুষ্ঠানের অন্যতম যথার্থ ও যোগ্য পুরস্কার হিসেবে চিহ্নিত করা যেতে পারে লাইফ টাইম অ্যাচিভমেন্টকে। আলী যাকের, শবনম, আলম খান ও আজম খানকে এ অ্যাওয়ার্ড দেয়া হয়।
কালচারাল জার্নালিস্টদের বিচারে এ অ্যাওয়ার্ডগুলো দেয়া হলেও এবার একটি জুরি বোর্ডের মাধ্যমে একে আরো স্বচ্ছ হিসেবে প্রমাণ করার চেষ্টা আয়োজকরা করলেও তা কতোটুকু যথার্থ হয়েছে তা কিন্তু প্রশ্নই থেকে যাচ্ছে!
বিগত সরকারের আমলে অপারেশন ক্লিন হার্টের পর জাতীয় সংসদে দায়মুক্তি অধ্যাদেশের মাধ্যমে পুরো ব্যাপারটির যেভাবে নিষ্পত্তি ঘটে এবারের অ্যাওয়ার্ডেও জুরি বোর্ডের কাজও যেন ছিল অ্যাওয়ার্ডগুলোর স্বীকৃতি দেয়া মাত্র!
অথচ কে কোন ক্ষেত্রে কেন অ্যাওয়ার্ডটি পাচ্ছে বা অন্য মনোনয়নপ্রাপ্তদের তুলনায় তার অ্যাওয়ার্ডটি পাওয়া কতোটুকু যৌক্তিক তা জুরি বোর্ড ভেবে দেখেছেন কিনা তা অ্যাওয়ার্ডের তালিকা দেখলেই বোঝা যাবে। হয়তো এ কারণেই অনুষ্ঠানস্থলের অনেক দর্শককে কোনো কোনো ব্যক্তির অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্তি নিয়ে বাণিজ্য হয়েছে বলেও মন্তব্য করতে শোনা গেছে।
ছোট্ট একটি উদাহরণ দিলেই হয়তো বিষয়টি আরেকটু পরিষ্কার হবে।
সেরা সুরকার হিসেবে মনোনয়ন দেয়া হয় সুরকার প্রিন্স মাহমুদ, হাবীব ওয়াহিদ ও রাজেশকে। অথচ সেরা সুরকারের অ্যাওয়ার্ডটি জেতেন রাজেশ। সুরকার হিসেবে তিনজনই নিজ নিজ ক্ষেত্রে পরিচিত হলেও যখনই একসঙ্গে তিনজনের নাম এসে যাচ্ছে ও তা থেকে সেরা নির্বাচন করা হচ্ছে তখনই কিন্তু মানের ব্যাপারে অটোমেটিকালিই প্রশ্ন চলে আসছে। প্রিন্স মাহমুদ আর হাবীবের সঙ্গে রাজেশের স্ট্যান্ডার্ড কিভাবে তুলনীয় হতে পারে তা নিয়ে মিউজিকপ্রেমী যে কোনো ব্যক্তিই ধরতে পারবে।
আবার সেরা বিজ্ঞাপন হিসেবে মনোনয়ন পাওয়া তিনটি টেলিকম কম্পানির মধ্যে একটেল জয়ের বিজ্ঞাপনটিকে সেরা বলে নির্বাচিত করা হয়েছে।
একটেল অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানের টেলিকম পার্টনার হয়েছে বলেই কি এমনটি করা হলোÑ এমন মন্তব্য শোনা গেল পেছনের সারিতে বসা দর্শকদের কাছ থেকে। কারণ বাংলালিংকের দিন বদলের মতন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পাওয়া একটি বিজ্ঞাপনকে পাশ কাটিয়ে একটেলের অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্তি স্বাভাবিকভাবেই দর্শকদের ভাবতে বাধ্য করে যে একটেলের বদলে বাংলালিংক যদি অনুষ্ঠানের টেলিকম পার্টনার হতো তবে হয়তো দিন বদলই সেরা বিজ্ঞাপন হিসেবে অ্যাওয়ার্ড পেতো!
পারফরম্যান্স অ্যাওয়ার্ড নিয়ে বিতর্ক হওয়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু যখন সেটি খুব বেশি পরিমাণেই হয়, তখন কিন্তু পুরো প্রক্রিয়াটিকেই তা প্রশ্নবিদ্ধ করে। আমন্ত্রিত দর্শকদের মুখেই যদি অ্যাওয়ার্ড নিয়ে বাণিজ্য হয়েছে টাইপের মন্তব্য শোনা যায়, তবে তা কেবল অনুষ্ঠান আয়োজক বিনোদন সাংবাদিকদের কাধেই বর্তায় না, বরং সব বিনোদন সাংবাদিকের কাধেই তার দায় এসে পড়ে। বিষয়টি অবশ্যই এমন হওয়া উচিত নয় যে, শর্ষের মধ্যেই ভূত থাকলে ভূত তাড়াবে কে!
সুতরাং ভবিষ্যতে এ ধরনের পারফরম্যান্স অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানের বিভিন্ন ক্যাটেগরিতে অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্তদের ক্ষেত্রে আরো স্বচ্ছতা ও যোগ্যতার মূল্যায়ন যথার্থ হওয়াই উচিত বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।