হলুদ কেন্দ্রবিশিষ্ট ছোট সাদা বুনো ফুলের নামই ডেইজি (অবশ্য পাশের বাড়ির উন্মনা উর্বশীটির নামও ডেইজি)।
বানোয়াট অভিধানের ভাষায়, এ ফুলকে যে যন্ত্র নির্মমভাবে কাটে তাই ডেইজি কাটার। বাগানের আনাচে কানাচে অনাদরে বেড়ে ওঠা এ ফুলরাশির ওপর লনমোয়ার (ঘাস কাটা বা ছাটার যন্ত্র) যখন খেয়ালি অত্যাচার চালায় তখন সেই ফুলরাশির শব্দহীন ফরিয়াদ জানানো ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না। ঠিক তেমনিভাবে বোলার যখন কবজির শিল্পিত কারুকাজে স্ট্যাম্পের দিকে গ্রাব তথা ডেইজি কাটার ছুড়ে দেন, তখন স্ট্রাইকিং ব্যাটসম্যানের পক্ষে অসহায়ভাবে চেয়ে থাকা ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না। কারণ ডেইজি কাটার ব্যাটসম্যানের সামনে ধপাস করে পড়ে মাথা খুব একটা উচু (বাউন্স) করে না।
বরং অনুগত শিক্ষার্থীর মতো মাথা নিছু করেই স্ট্যাম্পের গায়ে ঢু মারে, বেইল উড়ে যায়।
মজার ব্যাপার হচ্ছে বোলার নিজেও নিশ্চিত হতে পারেন না, এই মাত্র ছুড়ে দেয়া ডেলিভারিটি ডেইজি কাটার বনতে যাচ্ছে। বলা যায়, বোলার নিজের অজান্তেই ব্যাটসম্যানের জন্য ডেথ ওয়ারেন্টটি ইস্যু করে দেন।
ডেইজি কাটারের অস্ত্রটা দ্বিমুখী এবং তা অসামান্য কার্যকর। হয় তা ব্যাটসম্যানকে এলবিডাবলিউর ফাঁদে ফেলবে, নয়তো স্ট্যাম্প ভেঙে দেবে।
সাধারণত বাসি উইকেটে ডেইজি কাটার আত্মপ্রকাশ করে। ব্যাটসম্যান সাধারণত বাউন্সই আশা করেন। কিন্তু নতমুখী বলটি মাটির কাছাকাটি থাকতেই পছন্দ করে। কল্লা তুলতে যেন নববধূর মতো লজ্জা পায়। কিন্তু তার ঘোমটার নিচে শাণিত থাকে দুমুখো মারণাস্ত্র।
ব্যাটসম্যান আত্মরক্ষার কোনো মওকা পায় না।
নিন্দুকেরা বলেন, টাকা যখন তার নোংরা নাকটি ক্রিকেটারদের সামনে মুলোর মতো ঝুলিয়ে দেয় আর ক্রিকেটাররা যখন তা গোগ্রাসে গিলে তখন তা হয় ম্যাচ ফিক্সিং। কিন্তু ডেইজি কাটারের কোনো ব্যাংক একাউন্ট না থাকায় তা ম্যাচ ফিক্সিং মুখো হয় না। বরং গ্রাউন্ডম্যানদের সঙ্গে দোস্তালি পাতিয়ে এবড়ো থেবড়ো পিচ আদায় করে পিচ ফিক্সিং-এ মাতে আর টপাটপ উইকেট গিলে।
অবশ্য ডেইজি কাটারে দুধারী অস্ত্র থেকে নিস্তার পাবার জন্য হালজমানার ব্যাটসম্যানরা বেশ সতর্ক থাকেন।
কিন্তু কপাল মন্দ হলে প্রত্যাশার গুড়েবালি উড়ে এসে হানা দেয়। হায়! ডেইজি কাটার : তোমার দুধারী অস্ত্র ব্যাটসম্যানের দীর্ঘশ্বাসে কালো হয়ে গেছে!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।