আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একেলে মানুষের সেকেলে ভাবনা

কত প্রতীক্ষা গেল হলো না সূর্যোদয়

আমার এ লেখাটি পড়ে অনেকেই আমাকে সেকেলে ভাববেন আবার অনেকে ভাবতে পারেন আমি উল্টো স্রোতের মানুষ। তবে আমার ভাবনাটি একেবারে অমূলক নয় বলেই আমার বিশ্বাস। আর আমার ভাবনাটি হচ্ছে প্রযুক্তি কী আমাদেরকে পিছনের দিকে টানছে ক্রমশ। কিছু প্রতিষ্ঠিত সত্য আমার এই ভাবনাকে অবশ্যই যৌক্তিক ভিত্তির ওপর দাড় করিয়ে দেয়। যেমন ধরুন আমাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ সম্পর্কে একটি ভাবনা অবশ্যই যৌক্তিক যে আমরা নয় মাসে অপেক্ষাকৃত কম নির্যাতিত হয়ে স্বাধীনতা পেয়েছি জন্যেই আমাদের অনেকেই এটিকে মহান স্বাধীনতার বছর না বলে বলি ‘গন্ডগোলের বছর’ (হায় স্বাধীনতা!) আবার প্রেমে পড়ার ক্ষেত্রেও এমনি একটি প্রতিষ্ঠিত সত্য হলো সহজে পাওয়া কিম্বা প্রতিবন্ধকতাহীন প্রেম খুব বেশীদুর এগোয় না।

এটি বড়জোর বাড়ির উঠোন পার হতে পারে বড় রাস্তায় ওঠে না। লাইলী মজনু শিরী ফরহাদ সম্ভবত এজন্যই আজ অব্দি বেচে আছেন আর মহল্লার কনক কিম্বা জুই মরে ভুত হয়ে গেছেন কবেই। ওদের ভালোবাসা অনেক মূল্যে কেনা আর এদেরটা বিনামূল্যে কেনা। পার্থক্যটা সম্ভবত এখানেই। আমার মেধাবী এক বন্ধু বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বার সময় ছুটিতে বাড়ী এলে এলাকার ছাত্রদের বিনামূল্যে পড়াতেন।

কদিন পর দেখা গেল কোন ছাত্রই তার কাছে আর পড়তে আসছে না। অথচ ঐ বন্ধুটিই যখন কোচিং সেন্টার খুলে বসলো এবং চড়া মাসিক ফি তে ছাত্র পড়ানো শুরু করলো। এক মাসের মাথায়ই রমরমা ব্যবসা জমে উঠলো। এখন ওর কোচিংএ ভর্তি হবার জন্য রীতিমত যুদ্ধ করতে হয়। কারন কী।

কারণ একটাই মূল্য আর বিনামূল্য। জ্ঞান চর্চার বিষয়টিও কী আমাদের দেশে এমন হয়ে গেছে। মুল্য আর বিনামূল্যের ঘুর্ণাবর্তে জ্ঞানচর্চা কী স্থিমিত হয়ে পড়ছে? আমার তো বিশ্বাস তাই। রবীন্দ্রনাথ নজরুল জগদীশ চন্দ্র বসু এদের হাতের মুঠোয় তো অবারিত তথ্য সম্ভার ছিল না। এরা তো ইচ্ছে করলেই টলস্টয় বা সেক্সপিয়র পড়তে পারতেন না।

এরা তো ইচ্ছে করলেই ইলেকট্রনের গঠন প্রকৃতি জানতে পেতেন না। এগুলো জানার জন্যে তারা যে কতটা কষ্ট করেছেন তা সম্ভবত যারা ‘কিচ্ছা’ বলতে পারে তারা বলতে পারবেন। আর আজ ‘এক ক্লিকে দুনিয়া হাজির’ তবু একটাও রবীন্দ্র নজরুল জে সি বসু তৈরী হয়না। তাহলে প্রযুক্তি কী আমাদেক পিছনে টানছে? নাকি বিনামূল্য বিনাশ্রমে সব পাচ্ছি বলে এর যথাযথ প্রয়োগ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। পিছিয়ে যাচ্ছে যুবসমাজ পিছাচ্ছে দেশ।

বিষয়টি ভাবার সময় বোধহয় আস্তে আস্তে ফুরিয়ে যাচ্ছে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।