আ মা র আ মি
ফয়সাল মারা গেল শুক্রবার। আমারই কলিগ, যদিও আমরা এক অফিসে কাজ করি না। তবু ওদের অফিসে যাই প্রায়ই, আমার আরও দুইটা বন্ধু ওখানেই কাজ করে। ফয়সালের মৃত্যুতে কষ্ট পেয়েছি অনেক। আমি শোক বইতে লিখিনি কিছুই, আসলে কিছু লেখারও ছিলো না।
মৃত্যুর কোন স্বান্তনা নেই, হয়না।
খুব মজা করতো ছেলেটা। বন্ধুর সাথে বেড়াতে গিয়েছিলো দিনাজপুর, ফেরার পথে দূর্ঘটনা, বাসের সাথে ধাক্কা। ওর মৃত্যুর দুদিন পর ওদের অফিসে গেলাম আগের মতই। ওর ডেস্কের সামনে গেলাম, কি মনে করে বসলাম ওর চেয়ারটাতে।
সামনের পিসিটা বন্ধ, ওর নামেই লক করা। আমি জানি, ওর মেইল বক্স ওপেন করলে এখনো হয়তো দেখা যাবে বেশ কিছু মেইল, ওর উত্তরের জন্য অপেক্ষা করে আছে। খুঁজলে হয়তো খাম পাওয়া যাবে কিছু না খোলা। আমি ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখছিলাম সব, আর হঠাৎ করেই আমার বুকের মধ্যে নিজের মৃত্যু চিন্তাটা মোচর দিয়ে উঠলো খুব।
আমার মৃত্যু নিয়ে ভয় নেই খুব একটা, তবে আফসোস আছে অনেক।
যখন বন্দি থাকি কোথাও, বুকের মধ্যে হাহাকার থাকে পুরাটা সময়। কোথায় যেন কি হয়ে যাচ্ছে, কোথায় যেন একটা সুন্দর ফুল ফুটেছে, কোথায় যেন আকাশটা আজ খুব নীল, কোথাও এখন ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি, আর আমি নেই সেখানে। আর মৃত্যুর পর এই না থাকাটাই চিরস্থায়ী। এক মৃত্যুর পাশে এসেই মৃত্যুটা খুব কাছে চলে এলো তাড়াতাড়ি।
চারদিকে ইদানীং খুব মৃত্যুর খবর শুনি।
আমার বাবার বয়সি বা তার কম অনেকেই মারা যাচ্ছেন ইদানীং। বাবা সেই মৃত্যুর জানাজায় গিয়ে দোয়া করেন। হয়তো ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখেন মৃতের স্মৃতি। কেমন লাগে তার তখন? তিনি কি মৃতুকে খুজে পান আরও কাছে? আমার বাবার জন্য চিন্তা হয় খুব, কষ্ট হয়।
পৃথিবীর সব বাবা-মা সুস্থ থাকুক, আগলে রাখুক প্রতিটি সন্তানকে বুকের মধ্যে।
ছবির জন্য কৃতজ্ঞতা
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।