তোমার সুরে সুরে সুর মেলাতে
১৩ জুলাই, ২০০৬
সময়: বিকাল ৫:৩০-৬:৪৫
হাসানের টং দোকান, বনানী
টয়োটা আর.এ.ভি.টা হাসানের দোকানের ঠিক পাশে পার্ক করলো নিপুন। গাড়িটা ওর মার জন্য কেনা হলেও মা ব্যবহার করেন কেবল বাজার করার আর খালা-মামাদের বাসায় যাবার সময়। বাকিটা সময় নিপুনই নিজেই নিজের মনে করে চালায়। গাড়ি থেকে বের হয়ে হাসানের ছোট্ট টং দোকানটায় বসল নিপুন। বেঞ্চে একজন রিক্সাওয়ালা বসে চা খাচ্ছিলেন।
নিপুন বসতেই বেচারা সংকোচে দূরে সিঁটিয়ে বসলেন, নিপুনের গায়ে যেন তাঁর নোংরা স্পর্ষ না লাগে। মনটা খারাপ হয়ে গেল নিপুনের, হায়রে আমার দেশটা, এত ভেদাভেদ মানুষে?
"ঠিক মত বসেন চাচা, এত দূরে বসেছেন, পড়ে যাবেন তো বেঞ্চ থেকে। "
লাল দাঁত বের করে হাসে কেবল চাচা, কাছে আসার কোন লক্ষণ দেখায় না।
"হাসান, বাকিরা আসে নাই?"
"তমাল ভাই আইছিল। কেউ নাই দেইখা গেছে গা।
কইছে আবার আইব পরে। আপনারে চা দিমু?"
"দে!"
"সিগারেট?"
"দে!"
সিগারেট ধরিয়ে চায়ে চুমুক দিতে দিতেই ফয়সাল চলে আসে। রিক্সা থেকে নেমে বলে,
"দোস, ভাংতি আছে? পাঁচটা টাকা দে তো। "
ফয়সাল একটা এন.জি.ও তে কাজ করে এবং কোন বিচিত্র কারনে কোনকালেই ওর কাছে ভাংতি থাকে না।
"নাই।
মানিব্যাগ নিয়া বাইর হই নাই আজকে। "
"মানিব্যাগ ছাড়া আবালের মত বাইর হইছস ক্যান? বাসায় থাকলেই পারতি। "
"মানিব্যাগ আনি নাই, কারন মানিব্যাগে পয়সা নাই। তোমাগো মত চাকরি করি নাকি আমি? বেকার!"
কথা না বাড়িয়ে হাসানের কাছ থেকে টাকা নিয়ে রিক্সাওয়ালাকে ভাড়া দিয়ে দেয় ফয়সাল। নিপুনের বাবার এত টাকা আছে যে দশটা নিপুন কাজ না করলেও তাঁদের কিছু যাবে আসবে না।
সে সুযোগে বাবা-মার একমাত্র ছেলে ইচ্ছা করেই কোন কাজ করে না, ওর সারা দিনের কাজ হলো গিটার বাজানো, গান শোনা আর ডি.ভি.ডি.তে সিনেমা দেখা।
আরেকটা রিক্সায় রানা আর তমালও চলে আসে।
"রানা তমালকে পাইলি কই?" জিজ্ঞাস করে নিপুন।
"কাহিনী রে ব্যাটা, বিশাল কাহিনী। দেখি রাস্তায় দাঁড়িয়ে এক গরম ললনার সাথে আলাপ করছে।
কসম দোস, আমাকে দেইখা তমাল না চেনার ভান করে!"
বিরক্তি নিয়ে তাকালো তমাল। সবার মধ্যে ওই সবচেয়ে সিরিয়াস। তাই প্রকৃতির নিয়ম মেনে ঠাট্টা-মস্করাও ওর সাথে একটু বেশিই হয়,
"মেয়ে আমাদের কাস্টোমার কেয়ারে কাজ করে। কলিগ টাইপ আরকি। রাস্তায় দেখা হইছে কথা বলব না?"
"তুই কাজ করিস মার্কেটিং সেকশনে।
কাস্টোমার কেয়ারের মেয়ে তোর কলিগ হয় কেমনে শুনি?" জিজ্ঞাস করে ফয়সাল।
তমাল বাংলালিংকে জয়েন করেছে গত ছ'মাস হলো। সেটা জাহির করতে সে ইদানিং সারাক্ষণ বাংলালিংকের একটা টিশার্ট পরে থাকে, সেটা নিয়েও বন্ধু মহলে ভালোই হাসি-ঠাট্টা হয়। তমাল জবাব দেয়ার আগেই কথা কেড়ে নিল রানা,
"সেইটা বড় কথা না। শালা মাইয়া আছে দেখে আমাকে রিক্সায় দেখেও না চেনার ভান করছে, এটার বিচার কর!"
"তোরে আমি দেখি নাই।
তুই আইছস পেছন থেকে, আমি আগে কেমনে দেখুম শুনি?"
"হ ভাই, রিক্সা চড়ি তো, আমাদের বন্ধু বলতে লজ্জা লাগে না? সেইটা কও?"
তমাল কোন উত্তর দেয় না। আজ সবাই একসাথে ওকে বাগে পেয়েছে, কিছু না বলাটাই এখন শ্রেয়।
এই নিয়ে খানিকক্ষণ রগড় চলার পর সবাই সিরিয়াস হয়ে যায়। একটু পরেই রাজীবের সাথে দেখা করার কথা, তার আগে ওদের এই গোপন বৈঠক। আলোচনার বিষয়বস্তু তৃণা।
রাজীবের স্বভাবটা ওদের চেয়ে বেশি কেউ জানে না। সেই স্কুল-কলেজ থেকে বন্ধু ওরা। সবাই জানে রাজীব জাত প্লেয়ার। ওর কতজন বান্ধবী এসেছে আর গেছে তার হিসাব ওরাও ভালো মত জানে না। কিন্তু তৃণার ব্যাপারটা আলাদা।
এত সিরিয়াস ওরা রাজীবকে আর কখনও দেখেনি।
চায়ে চুমুক দিতে দিতে বলে ফয়সাল,
"আমার এই মিটিংটা মোটেই ভালো লাগছে না। রাজু আমাদের দোস্ত, কিছু বলতে হলে ওকেই সরাসরি বলব। পেছনে আলাপ করবো কেন?"
"পেছনে আলাপ কই দেখলি?" বিরক্ত নিয়ে বলে রানা, "যা আলাপ হবে তা তো একটু পরে রাজীবকে জানাবোই? আর ও এখন পুরা অন্ধ, ওকে কিছু বলার আগে আমাদের সবাইকে একমত হয়ে একসাথে বলতে হবে। এছাড়া ওকে মানানো যাবে না।
"
"ঠিক!" সায় জানালো নিপুন, "এই তৃণা মেয়েটার ব্যাপারে একটা ডিসিশন আজই নিতে হবে। "
"সমস্যা কি?" বলল তমাল, "রাজীবের লাইফ, রাজীব ডিসাইড করবে, আমি বলার কে? আমি এই আলাপে নাই। "
"দোস্ত, আমাদের কোন বন্ধু একটা নষ্ট মেয়ের সাথে জড়িয়ে পড়বে, আমাদের সেখানে কিছু বলার নাই? কেন, রাজু দোস্ত না আমাদের?" এত আবেগ নিয়ে কথাটা বলল রানা যে জবাব খুঁজে পেল না তমাল। ফয়সাল বলল,
"মেয়েটা হয়তো নষ্ট ছিল, সেটা আমাদের রাজুও ছিল। কিন্তু এখনও যে আছে তার কি প্রমান।
হ্য়তো রাজীবের সাথে থাকার পর বদলে গেছে। "
"আমি একটা কথা বলতে চাই..." হাত তুলল নিপুন, "গত সপ্তাহে তৃণাকে দেখেছি আমি, ক্যাফে ম্যাংগোতে। একটা ছেলের সাথে। "
"তো?" প্রশ্ল করলো তমাল, "ছেলে বন্ধুর সাথে দেখা করতে মানা?"
"যা করতে দেখেছি তা বন্ধুদের সাথে কোন মেয়ে করে না দোস্ত। "
কথাটা শুনে আর কিছু বলার থাকলো না কারোরই।
কাপের পর কাপ চা আর সিগারেটের পর সিগারেট পুড়িয়ে একটা সিদ্ধান্তে চলে আসলো সবাই।
***
১৩ জুলাই, ২০০৬
সময়: সন্ধ্যা ৭:০০-রাত ১১:০০
এন.এস.ইউ. ক্যাম্পাস, বনানী এবং
বসুন্ধরা হাউজিং, বারিধারা
ঘামে ভিজে বেসমেন্ট থেকে উঠে আসলো রাজীব। অনেক দিন খেলা হয়নি বলে শরীরে জড়তা এসে গেছে। একটু খেললেই হাঁফ ধরে যায় এখন। তিনটে সেট খেলেই এই অবস্থা।
বেরুতেই নিপুনের গাড়ি দেখলো রাজীব। বাব্বা আজ দেখি টাইমে চলে আসা হয়েছে। গাড়ি থেকে নামলো না নিপুন, গলা বের করে বলল,
"রাজু, ওঠ ওঠ তাড়াতাড়ি গাড়িতে ওঠ। "
দৌড়ে গাড়িতে উঠে ওবাক হয়ে গেল ও,
"তোরা সবাই একসাথে? কাহিনী কি?"
"কাহিনী বলা হবে বসুন্ধরায় যাবার পর। " হাত বাড়িয়ে সিডি প্লেয়ারটা চালু করে দেয় নিপুন।
বারিধারায় বসুন্ধরার প্লট বরাদ্দ যতই দেয়া হোক, এখনও জায়গাটা প্রায় পুরোটাই ফাঁকা। এদিকে দক্ষিণের লেকটারও কিছু অংশ ভরাট করা হয়েছে। বড় বড় ঘাশ আর কাশবনে ঘেরা লেকটা রাজীবদের খুবই প্রিয়। জায়গাটা সুন্দর তো বটেই, তার চেয়ে বড় হলো খুবই নির্জন। মাঝে মাঝে বসুন্ধরার নিজস্ব সিকিউরিটি এসে কি হচ্ছে দেখে যায় এছাড়া আর কোন উৎপাত নেই।
তাই প্রায়ই নিপুনের গাড়ি নিয়ে সবাই সুর্য ডোবার ঠিক আগ মুহুর্তে ওখানে চলে যায়। সাথে থাকে বড় দু'টো কোকের বোতল , চিপস কিংবা নান-কাবাব। খাওয়ার সাথে সুর্য ডোবা, চাঁদ দেখা আর আড্ডা সবই হয়। পঁচা শামুকের শহরে এটা ওদের নিজেদের প্রবাল দ্বীপ।
গাড়ি পার্ক করেই নিপুনের মনে হয় সাথে সিগারেট নেই,
"সিগারেট আছে কারও সাথে?"
"আছে।
" ছোট্ট করে জবাব দেয় তমাল।
"সাবাশ। "
গাড়ি থেকে নেমে বনেটের উপর উঠে বসে সবাই।
সারাটা রাস্তা কি হয়েছে তার কিছুই বলা হয়নি রাজীবকে, কিন্তু রাজীব অনুমান করেছে কেন হঠাৎ কোন জানান না দিয়ে ওকে এখানে তুলে আনা হয়েছে। এমনটা হতে পারে সেটা অবচেতন ভাবেই জানত ও, তাই মানসিক প্রস্তুতিটাও হয়তো কোন একভাবে নেয়া ছিল।
কোন তাফালিং না করে আসল কথা চলে গেল রানা,
"তোকে কেন এ জায়গায় এনেছি জানিস?"
"না বললে জানবো কিভাবে?"
"তৃণার সাথে তোর রিলেশনটা কি?"
এই ভয়টাই ছিল রাজীবের,
"জাস্ট ফ্রেন্ডস!" তোতা পাখির মত বলল রাজীব।
"দেখ দোস্ত, জাস্ট ফ্রেন্ডস যে না সেটা একটা বেকুবও বুঝবে। তোকে আগে দেখি নাই আমরা অন্য মেয়েদের সাথে?"
কোন উত্তর দেয় না রাজীব।
ফয়সাল বলে,
"অন্য কোন মেয়ে হলে কিছু বলতাম না তোকে। আমরাও চাই তুই র্যানডম টাংকিবাজী ছেড়ে কারও সাথে থিতু হো, কিন্ত হোয়াই তৃণা?"
"কেন তৃণার সাথেই বা সমস্যা কি?" নিজের গলার ঝাঁঝ দেখে নিজেই অবাক হয়ে গেল রাজীব।
"তাহলে তুই স্বীকার করছিস তৃণার সাথে কিছু আছে তোর?" বলল তমাল।
ভুল বুঝে ডিফেন্সে চলে গেল রাজীব,
"তা তো বলিনি! কিন্তু তোদেরই বা মনে হলো কেন ওর সাথে কিছু আছে?"
"শুনবি?" বলল রানা, "আচ্ছা শোন তাহলে। আগে তুই প্রতিটা সময় মেয়েদের পেছনে ছোঁক ছোঁক করতি। কদিন পর পরই নতুন কোন মেয়ের গল্প বলতি আমাদেরকে। তৃণার সাথে পরিচয় হবার পরে কোন কোন মেয়েকে ডেট করেছিস তুই?"
"অনেক, কয়টা শুনতে চাস?"
"জাস্ট তিনটা মেয়ের নাম বল।
"
অনেক খুঁজেও একটা নাম মনে করতে পরল না রাজীব।
"আচ্ছা বাদ দে। দিনে কয়বার কথা হয় তৃণার সাথে ফোনে?"
"দুই বার, তিন বার। "
"মিথ্যা কথা বলবি না দোস্ত!" বলল তমাল।
"মিথ্যা কই বললাম?"
"দে, তোর মোবাইলা দে, কল হিস্টরি দেখি?"
মোবাইল বের করার কোন গরজ দেখায় না রাজীব।
"দোস্ত, ইউ হ্যাভ চেঞ্জড, অবকোর্স ইন এ গুড ওয়ে! কিন্তু তৃণা কিন্তু বদলায়নি। ও যেমন ছিল তেমনই আছে। "
"সেটা তুই কিভাবে জানিস?"
"নিপুন, বলতো ওকে কি দেখেছিস। "
শুনে কানটা গরম হয়ে ওঠে ওর। এমনটাই কথা ছিল, কেউ কাউকে কোন কাজে বাঁধা দেবে না।
কিন্তু কোন এক বিচিত্র কারনে রাজীবের অন্য কোথাও মন টানেনি। অবচেতন ভাবে ভেবে নিয়েছিল তৃণাও হয়তো... অনেকে অনেক কথা বলেছে ওকে, কিন্তু ও কখনও তৃণাকে জিজ্ঞেস করতে পারেনি। কোন মুখেই বা জিজ্ঞাস করবে, ওই তো বড় গলায় বলেছিল কেবলই "বন্ধুত্ব" আর কিছু নয়।
"দোস্ত, ছোটবেলা থেকে চিনি আমরা একে অন্যকে। আমাদের কাছে কেন লুকাচ্ছিস? তুই জানিস যে কোন সমস্যায় আমরা আছি তোর সাথে জানিস না?" বলে ফয়সাল।
"জানি!"
"তাহলে?"
"শুনবি তোরা? আচ্ছা শোন তাহলে, তোদেরকে বলিনি লজ্জায়!" ধরা গলায় বলে রাজীব।
"লজ্জা! কিসের লজ্জা?" অবাক হয় রানা।
"এই আমাকে তো তোরা চিনিস না! যদি হাসিস, যদি আমাকে নিয়ে ঠাট্টা করিস!" কিছু বলতে যাচ্ছিল রানা, থামিয়ে দিল রাজীব, "আমি জানিনা দোস্ত ইফ ইটস লাভ ওর নট। কিন্তু আমি মেয়েটার উপর অনেক নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি কোন কারনে। মেয়েটা অনেক ছোট খাট জিনিস নিয়ে শাষন করে আমাকে, আমার কবে কোন মিটিং, কবে কোন খাবারটা ভাল লেগেছিল সেটা ভোলে না কখনই।
সব মিলিয়ে কেমন জানি একটা ভাল লাগা আছে। এটা প্রেম কি না আমি জানি না। " কথা গুলো অনেক দিন থেকেই মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল, বন্ধুদেরকে বলতে পেরে হালকা লাগলো রাজীবের।
"আচ্ছা, প্রেম কি না বোঝার উপায় আছে..." বলল রানা, "ওকে বিয়ে করবি তুই? ইচ্ছে করে বিয়ে করতে?"
মাথাটা ফাঁকা হয়ে গেল রাজীবের, এভাবে তো কখনও ভাবেনি ও, "জানি না!"
"চিন্তা কর। চিন্ত করে বল।
"
"হয়তো করবো, জানি না দোস্ত! বিয়ের কথা কখনও মাথায় আসেনি। "
"শোন রাজু, আমরা কি ঠিক করেছি সেটা শোন। " বলল নিপুন, "আমরা জানি এখন আমরা যদি বলি ওকে ভুলে যা সেটা পারবি না তুই। তাই তৃণার সাথে আলাপ কর। আমরা যা বললাম সেটা ওকে বুঝিয়ে বল।
আমাদের মনে হয় কোন কারনে তুই খুব সিরিয়াস হয়ে যাচ্ছিস..."
"আমি জানি কেন, ব্যাপারটা কিন্তু পরিস্কার," বলল ফয়সাল, "অন্য মেয়েরা সবাই রাজুর মতই ছিল, কিন্তু তৃণা ওকে আলাদা অ্যাটেনশন দিচ্ছে, কেয়ার নিচ্ছে, তাই..."
"বাদ দেতো ফয়সাল, আগে আমার কথাটা শেষ করতে দে" বলল নিপুন, "তুই তৃণাকে আস্ক আউট কর। ফর্মালি। বল তুই দেখতে চাস এই সম্পর্কের আসলেই কোন শেষ আছে নাকি। ও যদি একই রকম অনুভব করে, যদি রাজী থাকে তাহলে একটু সময় নিয়েই দেখ, আর না থাকলে না হয় আবার বন্ধুত্বে ফিরে যাবি। কিন্তু সেটা যেন কেবল বন্ধুত্বই হয়, এখন যা চলছে তা না।
"
কোন জবাব মুখে আসে না রাজীবের।
"এতে আরেকটা জিনিস কি হবে জানিস রাজু?" বলল তমাল, "তুই জানতে পারবি মেয়েটা সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে কতটা পারঙ্গম। সিরিয়াস রিলেশনে ও এখন যা করে বেড়াচ্ছে তা করতে পারবে না, এই জিনিসটা তুই ওকে ক্লিয়ার করে দিস। তাই 'হ্যাঁ' বলার পরেও যদি ও যাচ্ছেতাই করে বেড়ায় তাহলে তুই নিশ্চিত বুঝে যাবি মেয়েটা তোর যোগ্য নয়। "
"হুম!"
"হুম মানে কি? রাজী? আস্ক আউট করবি?" রানা জিজ্ঞেস করলো।
"কবে করতে হবে?"
"কবে মানে? পারলে আজই। নাহ, আজ না। কাল শুক্রবার, তুই না হয় কাল সামনা সামনি দেখা করে জিজ্ঞেস করিস। ঠিক আছে?"
"আচ্ছা। "
এত সহজে রাজীব রাজী হয়ে যাবে সেটা কেউ ভাবেনি বলেই বিস্ময়টা একটু বেশীই বোধ হয় সবার, রানা জিজ্ঞেস করে,
"আচ্ছা মানে? করবি?"
"করবো!"
"গুড!" এছাড়া আর কিছু বলার থাকে না রানার।
বাকি সময়টা বিরাট চাঁদের নিচে (কোন বিচিত্র কারনে জায়গাটা থেকে চাঁদটা একটু বড়ই দেখায়) নিপাট আড্ডাতেই কেটে যায়। ঘরোয়া থেকে কাবাব আনা হয়েছিল, সে কাবাবেরও সদ্যবহার হয়। রাজীবকে জানানো হয় না যে ওরা সবাই নিঃশ্চিত ভাবেই ধরে নিয়েছে যে তৃণা "না" বলবে আর ওর হাত থেকে মুক্তি পেয়ে যাবে রাজীব। কিন্তু পরদিন জুম্মা শেষে সবাই একটা বিস্ময়কর টেক্সট মেসেজ পায় রাজীবের কাছ থেকে।
ছোট্ট মেসেজটায় কেবল একটা কথাই লেখা,
"শী সেইড ইয়েস!"
© অমিত আহমেদ
(চলবে)
গন্দম - পর্ব ১ | গন্দম - পর্ব ২ | গন্দম - পর্ব ৩ | গন্দম - পর্ব ৪ | গন্দম - পর্ব ৫ | গন্দম - পর্ব ৬ | গন্দম - পর্ব ৭.১ | গন্দম - পর্ব ৭.২ | গন্দম - পর্ব ৮.১
বি.দ্র.:
১) "এ গল্পের প্রত্যেকটা চরিত্র কাল্পনিক, জীবিত বা মৃত কারও সাথে কোন সাদৃশ্য পাওয়া গেলে তা নেহায়তই কাকতালীয় হিসেবে গন্য হবে।
"
২) ভালোবাসার পাঠকদেরকে গন্দমের গত পর্বের প্রথম মন্তব্যটি পড়ার অনুরোধ করছি।
৩) আগামী পর্ব একদিন পরে দেয়া হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।