জীবন আসলে চিল্লাপাল্লা ছাড়া কিছুই না। সেটাই করতে চাই, মনের সুখে, ইচ্ছা মতন। ১৯৯৪ থেকে ২০১৩, মাত্র ১৯ বছর।
এর মধ্যেই ঋতুপর্ণ ঘোষের মেধা এবং প্রতিভার ফসল মোট ১৯টি ছবি। প্রত্যেকটি ছবিই সতন্ত্র,অনবদ্য।
১৯টি ছবির মধ্যে ১২টি জাতীয় পুরষ্কার জয় করেছিল। সত্যজিৎ রায়, মৃণাল সেন, ঋত্বিক ঘটক পরবর্তী বাংলা সিনেমার নতুন এক ধারা তৈরি করেছিলেন ঋতুপর্ণ।
''হীরের আংটি''-র হাত ধরে পথ চলা শুরু। শেষ হয়ে গেল ''চিত্রাঙ্গদায়''-য় এসে। অসম্পূর্ণ রয়ে গেল তাঁর ব্যোমকেশ বক্সী।
মাঝে উপহার দিয়েছেন উনিশে এপ্রিল, দহন, উৎসব, চোখের বালি, দোসর, রেনকোট, শুভ মহরত, সব চরিত্র কাল্পনিক, নৌকাডুবি সহ এক গুচ্ছ রত্ন। তাঁর গল্প উপস্থাপনের ধরণ তাঁর প্রায় প্রতিটি সিনেমাকেই দর্শকের চোখে কবিতার ছোঁয়াচ লাগাত। শুধু চলচ্চিত্র পরিচালনার গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ ছিল না তাঁর প্রতিভা। দুটি বহুল প্রচলিত বাংলা ম্যাগাজিনের সম্পাদক হিসাবেও দাপটে কাজ করেছেন তিনি।
আরেকটি প্রেমের গল্প, মেমরিস ইন মার্চ ও চিত্রাঙ্গদা -এই তিনটি সিনেমায় অভিনেতা ঋতুপর্ণ ঘোষের অনন্য অভিনয় প্রতিভার সাক্ষী থেকেছেন দর্শকরা।
তাঁর মৃত্যুতে ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতে অপূরণীয় এক শূন্যস্থান তৈরি হল। তিনি হয়ত থাকলেন না, কিন্তু তাঁর সৃষ্টি যুগ যুগ ধরে বেঁচে থাকবে আপামর চলচ্চিত্র প্রেমিদের অন্তরে।
বর্ণময় এই চলিচ্চিত্র নির্মাতার জীবনবৃত্তান্ত দেখলেই শ্রদ্ধায় মাথা নত হয়ে আসে চলচ্চিত্র বোদ্ধাদের।
চলুন একনজরে দেখে নিই ঋতুপর্ণের জীবনী,
জন্ম- ৩১ অগাট, ১৯৬৩
পড়াশোনা- সাউথ পয়েন্ট হাই স্কুল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়
কেরিয়ার- বিজ্ঞাপন জগতে প্রথম কর্মজীবন শুরু
ফিল্মোগ্রাফি
পরিচালক ঋতুপর্ণ
১৯৯৪- হীরের আংটি
১৯৯৪- উনিশে এপ্রিল ( জাতীয় পুরস্কার শ্রেষ্ঠ পরিচালক, জাতীয় পুরস্কার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী- দেবশ্রী রায়)
১৯৯৭- দহন ( জাতীয় পুরস্কার শ্রেষ্ঠ স্ক্রিন প্লে, জাতীয় পুরস্কার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী- ইন্দ্রাণী হালদার, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত)
১৯৯৯- বাড়িওয়ালি ( জাতীয় পুরস্কার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী-কিরণ খের, শ্রেষ্ঠ সহঅভিনেত্রী- সুদীপ্তা চক্রবর্তী)
১৯৯৯- অসুখ ( জাতীয় পুরস্কার- বাংলা ভাষায় শ্রেষ্ঠ সিনেমা)
২০০০- উৎসব ( শ্রেষ্ঠ পরিচালকের জাতীয় পুরস্কার)
২০০২- তিতলি
২০০৩- শুভ মহরত (জাতীয় পুরস্কার- বাংলা ভাষার শ্রেষ্ঠ সিনেমা, শ্রেষ্ঠ সহঅভিনেত্রী- রাখী)
২০০৩- চোখের বালি ( জাতীয় পুরস্কার- শ্রেষ্ঠ বাংলা সিনেমা)
২০০৪- রেইনকোট ( হিন্দি ভাষায় শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের জাতীয় পুরস্কার)
২০০৫- অন্তরমহল
২০০৬- দোসর ( জাতীয় পুরস্কার, বিশেষ জুরি পুরস্কার- প্রসেনজিৎ চক্রবর্তী)
২০০৭- দ্য লাস্ট লিয়র ( ইংরেজি ভাষায় শ্রেষ্ঠ ছবির জাতীয় পুরস্কার)
২০০৮- খেলা
২০০৮- সব চরিত্র কাল্পনিক (জাতীয় পুরস্কার শ্রেষ্ঠ বাংলা সিনেমা)
২০১০- আবহমান ( জাতীয় পুরস্কার শ্রেষ্ঠ পরিচালক, বাংলা ভাষায় শ্রেষ্ঠ ছবির জাতীয় পুরস্কার, শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর জাতীয় পুরস্কার)
২০১০- নৌকাডুবি
২০১২- সানগ্লাস
২০১২- চিত্রাঙ্গদা ( বিশেষ জুরি পুরস্কার, অভিনেতা ঋতুপর্ণ ঘোষ)
অনান্য পুরস্কার
১৯৯৯- 'অসুখ' -এর জন্য বোম্বে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎস্বে বিশেষ পুরস্কার,
২০০০- বাড়িওয়ালির জন্য বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসবে এনইটিপিএসি পুরস্কার
২০০২- বোম্বে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বিশেষ পুরস্কার 'তিতলি'-র জন্য
অভিনেতা ঋতুপর্ণ
২০১১- আর একটি প্রেমের গল্প
২০১১- মেমরিস ইন মার্চ
২০১২- চিত্রাঙ্গদা
বাংলা চলচ্চিত্র আপনাকে চিরকাল মনে রাখবে দাদা।
Rest In Peace...
তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া এবং জি নিউজ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।