আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রেজাল্ট আনতে গিয়ে অবশেষে "ত্রি-ধোলাই" থেকে "প্রীতি-ধোলাই" হজম করে প্রত্যাবর্তন



"আজ রেজাল্ট আনতে যাব, ফিরে আসতে পারি কিনা সন্দেহ আছে!" সন্দেহ ছিল তীব্র, কিন্তু ব্লগের ভাই ও বোনদের আর্শীবাদে অবশেষে ত্রি-ধোলাই থেকে প্রীতি-ধোলাই খেয়ে পাশ করার সাধ মিটলেও ফিরে আসতে সমর্থ হয়েছি। গত পরশু রেজাল্ট আনতে গিয়েছিলাম ৩ জনই। আমার ভিতরটা তখনও কাঁপছিল। আমি তো জানি রেজাল্ট কি হয়েছে কিন্তু কি হতে যাচ্ছে সেটা জানা ছিল না। আমার ভাবলেশহীন চেহারার দিকে তাকিয়ে ওরা কিছু হয়ত আঁচ করতে পেরেছিল তাইত জনাতে চাইল কি হয়েছে আমার? ব্যাপারটা এড়িয়ে গেলেও ঘটনাস্থলে কি ঘটতে যাচ্ছে সে চিন্তায়-ই মগ্ন ছিলাম।

যথাসময়ে পৌছালাম কেন্দ্রে। দূর থেকেই দেখা যাচ্ছে নোটিশবোর্ডে টাঙানো রেজাল্ট শীট। যতই কাছে যাচ্ছি ততই যেন কি মনে করে বারবার এলোমেলো হচ্ছি। এবার রোল নাম্বার মেলানোর পালা। ওদের তিন জনের একের পর একজন মিলিয়ে কোথাও শীটে খুঁজে পেলনা তখন আমার দিকে এগিয়ে এসে আমার নাম্বারটা দেখতে চাইল।

আমি কি বলব, বললাম “কি হবে আর দেখে, আরে কোথাও নেই বাদ দে”। সেকেন্ড বিশেক পরেই মাসুদ চেচিয়ে উঠে ”(অশ্লীল শব্দ), এইটা কার নাম্বার” কার? বলে সামনে এগিয়ে এমন ভাব করলাম মনে হল আমি কিছুই দেখতে পাচ্ছিনা আর ওরা যা দেখছে ভূল। কোথায়? বলা মাত্রই আমাকে টেনে নিয়ে নাম্বারটির সামনে টেনে নিয়ে চোখ দিয়ে দেখিয়ে দিল, তাড়াতাড়ি বললাম “আরে টাইপিং মিসটেক হইছে, আমার নাম্বার আসতেই পারেনা, আমি এর বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করব, যে খাতা খালি রেখে বের হয় সে আবার পরীক্ষায় পাশ করে কিভাবে?” ওরা ঠিকই বুঝতে পারছিল যে, পুরোটা চাপা পিটাইতেছি। এবার শুরু হল মাহেন্দ্রক্ষণ, তিনজনই এগিয়ে এসে আমাকে ধরে শুরু করল “ত্রি-ধোলাই”, আমি যতই বলি “বিশ্বাস কর এর ভিতর কোথাও না কোথাও ঘাপলা আছে” ততই “ত্রি-ধোলাই” আরো বেশী হয়। পরে আশেপাশের লোকজন পকেটমার সন্দেহে “ত্রি-ধোলাই’কে যখন “গণ-ধোলাই”-এ রুপ দিতে যাচ্ছিল তখন ওরা তিনজন একসাথে “ত্রি-ধোলাই”-কে “প্রীতি-ধোলাই” নামকরণ করে কোনমতে আমাকে “গণ-ধোলাই” থেকে উদ্ধার করল।

ততক্ষনে “ত্রি-ধোলাই” খেয়ে পরীক্ষায় পাশ করার সাধ আমার মিটে গিয়েছে। গতকাল শুক্রবার, ৩জনই আমার অফিসে এল। শরীরে আংশিক “ত্রি-ধোলাই” এর ব্যাথা থাকলেও তেমন মারাত্মক ছিলনা কিন্তু ওদের দেখা মাত্রই ব্যাথাটায় কেমন জানি শরীরটা শির শির করে উঠল। “দোস্ত ভয় নাই, আজ আর ধোলাই দিবনা, আল¬াহ যা করেন মঙ্গলের জন্যই করেন” একজন বলল। মানে জানতে চাইলে, অপরজন বলল “দোস্ত আমরা এ টার্মে চান্স পাইনাই ভালই হইছে, নেক্সট টার্মে প্রিপারেশন নিয়ে পরীক্ষা দেব, কিন্তু লাভ যেটা হইছে তা হল তুমি আমাদের সিনিয়র হইয়া গেলা, তবে অসুবিধা নাই এই জন্যে তুমি যা যা এ্যাসাইমেন্ট, নোট রেডী করবা সেইগুলা আমাদের চালান করবা, আমরা শুধু কপি, পেষ্ট এর উপর চালাইয়া যামু” আমার দোস্তদের বুদ্ধি দেখে হাসব কি কাঁদব কিছুই মাথায় আসলনা, শুধু মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকল “ত্রি-ধোলাই” থেকে “প্রীতি-ধোলাই” এর স্মৃতি।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.