কত অজানারে!
যারা আমার আগের লেখাগুলোর অন্তত কয়েক লাইনও পড়েছেন তাদের নিশ্চই আমার আই কিউ লেভেল নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। আর যারা পড়েননি তাদের জন্য বলি, আমার বুদ্ধি শুদ্ধি বন্য প্রানীদের চাইতেও কম, প্রায় গৃহপালিত প্রানীদের মত। এই বিলো আই কিউ এর জন্য আমি ইদানিং বেশ সমস্যায় পড়্ছি।
সমস্যার শুরু কিছুদিন আগে। ঢাকা ভার্সিটির সুইমিং পুলে গেছি সাঁতার শিখতে।
প্রতিদিন নাকানি চুবানি আর কোচের ধমক্ ধামক্ খাই, আর তার চেয়ে বেশি খাই পানি। এর মধ্যে একদিন দেখি আমার পাশ দিয়ে ছোট্ট একটা মেয়ে, এই ৩/৪ বছর বয়স, একদম তর তর করে সাঁত্রিয়ে চলে গেল। এদিকে তা দেখতে গিয়ে আমি আরো কয়েক ঢোক পানি খেয়ে (নাকি পান করে?) ফেললাম। কিন্তু এর পরে যে ঘটনাটা দেখলাম তা আমার দেখা সেরা দৃশ্য। মেয়েটা সাঁত্রিয়ে চলেগেল এই আমাদের চেয়ে দেখতে দু এক বছরের বড় এরকম এক ছেলের কাছে।
লোক না বলে ছেলে বলছি কারন লোকটাকে দেখে আর যাই হোক লোক লোক মনে হয় না। ছেলেই মনে হয়। ছেলেটা বাচ্চা টাকে বকা ঝকা দিচ্ছে কিভাবে সাঁত্রাতে হবে তা বলে দিচ্ছে। হাতে ধরে শিখিয়ে দিচ্ছে। আবার না পারলে শাস্তির ভয়ও দিচ্ছে।
বাচ্চাটার মধ্যে অবশ্য শাস্তি নিয়ে কোন মাথা ব্যথা নাই। তার কাছে সবই মঁজা। এরকম কয়েক দিন দেখার পরে একদিন বাচ্চাটা আমার প্রায় কাছে চলে এসেছে। আমি সুযোগ বুঝে জিজ্ঞেস করলাম , উনি তোমার ভাইয়া নাকি ? মেয়েটা অবাক হয়ে বলে, "ওমা! ওইটাতো আব্বু!" শুনে আমিতো বাক্হারা। যাকে বলে একেবারে হতভম্ব! আমার সাথের বন্ধুরাও অবাক।
এর পর থেকে প্রতিদিনই বাবা আর মেয়ের সাঁতার শেখানো আর শেখার দৃশ্য দেখি। আর মনের মধ্যে মুগ্ধতা, আনন্দ, বিস্ময়, দুঃখ, হতাশা আর ঈর্ষার মিশ্র এক অনুভুতি খেলা করে। দেখতে দেখতে আমার মধ্যে একধরনের পিতৃত্ব জেগে উঠতে থাকে। বন্ধুদের বলি, কি করা যায় বল্তো? অই ব্যাটা আমাদের দেখিয়ে দেখিয়ে এই ভাবে মেয়েকে সাঁতার শেখাবে আর আমরা চেয়ে চেয়ে দেখবো আর আঙ্গুল চুস্বো? ওরা বলে, কি আর করবি হুঠকরে তো আর বাচ্চা পয়দা করতে পারবিনা। আমি বলি, দরকার হলে দত্তক নিব।
তবু শালা এইখানে বাচ্চা নিয়ে সাঁতার না কাটলে আমার চলবেনা। ওরা বুঝলো আমার মাথাটা আজকে আবার গেছে। কোন রকমে ধরে পরে আমাকে নিয়ে এল হলে।
সমস্যটা এইখানেই ক্লাইমেক্সে পৌছায়। আমাকে বাচ্চা দত্তক দিবে কে? আবার বাচ্চা পেলে রাখব কোথায়।
তাই ভাবলাম মা হতে ইচ্ছুক এমন কোন মেয়ে খুঁজে পাওয়া যায় কি না? কিন্তু এতে আবার বাগড়া বাধালো উইকিপিডিয়া। এতে 'আই কিঊ' দিয়ে সার্চ দিয়ে দেখলাম দুজন মানুষের আই কিউ ব্যবধান ৩০ এর বেশি হয়ে গেলে নাকি তাদের মধ্যে কোন রকমের কমিউনিকেশনই সম্ভব না। আর বাচ্চা বানানো তো অনেক দূরের কথা! তাই পড়েছি বিপদে। আমার চেয়ে কম আই কিউ তো পাওয়া যাবেইনা! তাই বেশির দিকে মানে বন্য প্রানী রেঞ্জে বুদ্ধি সুদ্ধিওয়ালা তাও আবার ইমিডিয়েটলি মা হতে ইচ্ছুক এমন মেয়ে খুঁজে খুঁজে হয়রান হচ্ছি। এদিকে আমার ইচ্ছে ঘুড়িটাও প্রায় ভোকাট্টা।
তাই বিদায়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।