সাহিত্যের সাইটhttp://www.samowiki.net। বইয়ের সাইট http://www.boierdokan.com
এইচএসসি কোর্সে আমাদের পদ্মানদীর মাঝির প্রথম চ্যাপ্টারটা পড়ানো হতো। বাংলাদেশে এইচএসসি পাশ অনেক জ্ঞানী ব্যক্তি আছেন যারা স্রেফ ওই একটি চ্যাপ্টারকেই পদ্মানদীর মাঝি ভাবেন। ওই চ্যাপ্টারটা পদ্মানদীর মাঝির অংশ বটে, কিন্তু পদ্মানদীর মাঝি না। ইন্টারমেডিয়েটেই উপন্যাসটি পড়ার সুবিধা হয়েছিল আমার।
পুতুল নাচের ইতিকথা পড়ার পরও এইটাই আমার প্রিয় উপন্যাস থেকে গিয়েছিল। সুমন চৌধুরী ছাড়া আমার পরিচিত ব্যক্তিদের মধ্যে আর কেউ পুরো মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় পড়েছেন বলে জানি না। ফলে তিনিই বলতে পারবেন মানিকের রচনাবলীর মধ্যে পদ্মানদীর মাঝি, পুতুলনাচের ইতিকথা, দিবারাত্রির কাব্য এই তিনটার সঙ্গে আর কোনগুলো এককাতারে বিবেচিত হতে পারে।
উপন্যাসটি পড়ার পর বিশেষ করে একটি বিষয় আমার মাথায় গেঁথে গিয়েছিল। একটি চরিত্র আমাকে ভীষণভাবে আলোড়িত করেছিল।
চরিত্রটির নাম হোসেন মিয়া। বিষয়টির নাম ময়নাদ্বীপ। অনেক পরে জানতে পেরেছিলাম আহমদ ছফাকে এই বিষয়টি আলোড়িত ও চিন্তিত করছিল। তিনি বাঙালি মুসলমানের মন বইয়ে এ সংক্রান্ত দারুণ একটা প্রবন্ধ লিখেছেন।
১৯৯৩ সালে যখন পদ্মানদীর মাঝি সিনেমা হলো তখনও ভাল সাহিত্য বনাম সিনেমার সংঘর্ষ সম্পর্কে তেমন কোনো ধারণা রাখি না।
কুষ্টিয়া শহরে পদ্মানদীর মাঝির বিশাল পোস্টারে চম্পা ও রূপা গাঙ্গুলির মুখের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকতাম। কিন্তু এত বছরেও গৌতম ঘোষ পরিচালিত এই সিনেমাটি দেখা হয়েছিল না। দেখলাম সেদিন। ২০০৭ সালের মার্চে। ভারতের একটা টিভি চ্যানেলে।
ডিভিডি কেনার কথাও চিন্তা করলাম দেখার পর। কারণ সিনেমাটা আমার ভাল লেখেছিল।
যতদূর মনে আছে শুটিং-এর সময় গৌতম গোষ বাংলাদেশে এসে বলেছিলেন সে পদ্মাও নাই সে পদ্মানদীর মাঝিও নাই। কিন্তু তার মধ্যেও তিনি পদ্মানদীর মাঝিকে সার্বিকভাবে চিত্রায়িত করার চেষ্টা করেছেন। বিশেষ করে ফোকাস করেছেন ময়না দ্বীপকে।
আমার মতে, মানিকের ফোকাসেও মূলত ময়নাদ্বীপই ছিল। পরিপ্রেক্ষিতের প্রয়োজনে পদ্মাপার, দারিদ্র ইত্যাদি এসেছে। ফলে পদ্মানদীর মাঝি আমার ভাল লেগেছে। উৎপল দ্ত্ত ছাড়া আর কে যে হোসেন মিয়া হতে পারতো? ভাগ্যিস তার মৃত্যুর আগে সিনেমাটা শেষ হয়েছিল।
(উৎসর্গ : মেন্টাল)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।