কিচ কিচ কুচ কুচ কাচ কাচ কোচ কোচ!!!
১০/ প্রোফেসর শঙ্কু ও রোবু (সন্দেশ। মাঘ, ফাল্গুন ১৩৭৪) – শঙ্কু এক অতি বুদ্ধিমান রোবট তৈরি করেছেন। এ রোবট জানে অনেক কিছু, অঙ্কও কষতে পারে পণ্ডিতের মত। অথচ দূরদেশের আরেক রোবট বিজ্ঞানী যখন নিজের নাম জিজ্ঞেস করেন রোবুকে, তখন রোবু একদম চুপ হয়ে যায়। অথচ সেই বিজ্ঞানীর নামধাম কাজকর্ম সবকিছুর তথ্যই ভালোভাবে পোরা ছিল রোবুর যান্ত্রিক মস্তিষ্কে।
কেন রোবুর এই ব্যর্থতা? তবে কি রোবু নষ্টই হয়ে গেল? নাকি...?
১১/ প্রোফেসর শঙ্কু ও রক্তমৎস্য রহস্য (সন্দেশ। বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ ১৩৭৫) – পৃথিবীর বিভিন্ন অংশের সমুদ্রতটে একাধিক মানুষ এক রহস্যময় লাল মাছের কামড়ে মারা গেলেন। শঙ্কু গেলেন সুমাক্রাফট নামক আধুনিক জলযানে করে গভীর সমুদ্রতলে। গিয়ে কি দেখলেন তিনি? রক্তমৎস্য কি সত্যিই পৃথিবীর কোন প্রাণী?
১২/ প্রোফেসর শঙ্কু ও কোচাবাম্বার গুহা (সন্দেশ। ফাল্গুন, চৈত্র ১৩৭৫, বৈশাখ ১৩৭৬) – প্রাচীন গুহায় প্রাচীন চিত্রকর্ম।
শঙ্কু পাঠোদ্ধার করে বুঝলেন, এ সবই আসলে হিজিবিজি নয়, বৈজ্ঞানিক ফরমুলা। জীবন হাতে নিয়ে শঙ্কুর গুহার অনেক অনেক গহীনে গমন। অতঃপর তার সাথে দেখা হয়ে গেল বহু বহু বছর ধরে বেঁচে থাকা এক প্রাগৈতিহাসিক মানবের সাথে।
১৩/ প্রোফেসর শঙ্কু ও গোরিলা (সন্দেশ। শারদীয়া ১৩৭৬) – অদ্ভুত এক বাটির মত যন্ত্র।
সেই যন্ত্র মাথায় পড়লে যেকোনো মানুষ বা বাঁদরজাতীয় প্রাণী বশ মানতে বাধ্য। ঘটনাক্রমে সেই যন্ত্র মাথায় পড়লেন শঙ্কু। গিয়ে পড়লেন গহীন জঙ্গলের এক জায়গায়, যেখানে অসংখ্য গোরিলাকে যন্ত্রের সাহায্যে বশ করে সারা পৃথিবী শাসন করার চিন্তা করছে এক উন্মাদ পুরুষ।
১৪/ প্রোফেসর শঙ্কু ও বাগদাদের বাক্স (সন্দেশ। ফাল্গুন-চৈত্র ১৩৭৬) – বিখ্যাত জাদুকর গেমাল নিশাহির অল হারারিৎ এর সমাধিতে পাওয়া গেল সুপ্রাচীন এক যন্ত্র।
কি সেই যন্ত্র? শঙ্কু কি পারবেন সেই যন্ত্রের রহস্য ভেদ করতে? পারলে কি সেটা মানবজাতির জন্য ভালো বয়ে নিয়ে আসবে? নাকি মন্দ?
১৫/ স্বপ্নদ্বীপ (সন্দেশ। বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ ১৩৭৮) – পৃথিবীর মানচিত্রে নেই সেই দ্বীপ। সেই দ্বীপে অদ্ভুত সব গাছ। আর আশ্চর্য ব্যাপার, পৃথিবীর বিভিন্ন স্থান হতে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক, শিক্ষক ইত্যাদি বুদ্ধিমান মানুষ স্বপ্ন দেখতে শুরু করলেন এমন একটা দ্বীপের। যেন এটা তাদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে।
শঙ্কু গেলেন সেই দ্বীপে। তারপর? দ্বীপের গাছগুলোর খাদ্য কি সত্যিই “জ্ঞান”?
১৬/ আশ্চর্য প্রাণী (সন্দেশ। শারদীয়া ১৩৭৮) – ছোট একটা কাঁচের জারে ঘটছে বিবর্তন। বিগ ব্যাং, পানি, মাটি। জলচর, উভচর, স্থলচর।
মানুষ। এদিকে শঙ্কুর জীবননাশের চেষ্টা। কে বাঁচাল শেষমেশ শঙ্কুকে? আর বিবর্তনের ধারায় মানুষেরই বা কি হল? (শঙ্কু সিরিজের সেরা গল্প এটি, স্পয়লার দিয়ে মজাটা নষ্ট করতে চাচ্ছি না)
১৭/ মরুরহস্য (সন্দেশ। বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ ১৩৭৯) – ডিমেট্রিয়াস কে? তিনি উধাও হলেনই বা কেন? যে তল্লাটে বাঘ ভাল্লুক থাকার কোন সম্ভাবনাই নেই সেই তল্লাটে ভাল্লুকের লোম কেন? বাঘের গর্জন কেন? গল্পের শেষে হাজার হাজার শকুনি মারতে কেন শঙ্কুকে অ্যানাইহিলিন পিস্তলটা বের করতেই হল? (শঙ্কু সিরিজের দ্বিতীয় সেরা, স্পয়লার দেয়া অপরাধ হয়ে যাবে)
১৮/ কর্ভাস (আনন্দমেলা। পূজাবার্ষিকী ১৩৭৯) – শঙ্কুর আবিষ্কৃত যন্ত্রঃ অরনিথন।
এর সাহায্যে শিক্ষিত হয়ে উঠল কর্ভাস নামের কাকটি। কর্ভাসকে বাগাতে চাইলেন লোভী জাদুকর আর্গাস। শেষমেশ শুরু হল কাক ও মানুষের বুদ্ধির লড়াই।
১৯/ একশৃঙ্গ অভিযান (সন্দেশ। অগ্রহায়ণ, পৌষ, মাঘ, ফাল্গুন, চৈত্র ১৩৮০) – শঙ্কুর তিব্বত অভিযান।
মৃত অভিযাত্রীর ডায়রিতে লেখা পাওয়া গেল – ‘আই স এ হার্ড অফ ইউনিকর্নস টু ডে। আই রাইট দিস ইন ফুল পোজেশন অফ মাই সেনসেস...টুডে আই ফ্লু উইথ দ্য টু হান্ডরেড ইয়ার ওল্ড লামা...’ শেষ পর্যন্ত কি শঙ্কুও পেয়েছিল ইউনিকর্নের খোঁজ? উড়েছিল আকাশে? নাকি দেখা পেয়েছিল আরও স্বপ্নীল, আরও অবাস্তব এক আশ্চর্য জগতের?
২০/ ডক্টর শেরিং এর স্মরণশক্তি (আনন্দমেলা। পূজাবার্ষিকী ১৩৮১) – শঙ্কুর আবিষ্কৃত আশ্চর্য যন্ত্র রিমেমব্রেন ব্যবহার করে ফিরিয়ে আনা হল সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত ডক্টর শেরিং এর স্মৃতি। তারপরই মোড় পাল্টে গেল সব ঘটনার।
২১/ হিপনোজেন (সন্দেশ।
বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ, আষাঢ় ১৩৮৩) – মৃত মানুষ জীবিত হয়ে উঠল স্বঘোষিত পৃথিবীশ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী অ্যালেক্সান্ডার ক্রাগের অত্যাশ্চর্য যন্ত্রপাতির গুণে। ক্রাগ চাইল শঙ্কুর সহায়তায় সারা পৃথিবী দখল করতে। কিন্তু...
২২/ শঙ্কুর শনির দশা (আনন্দমেলা। পূজাবার্ষিকী ১৩৮৩) – জ্যোতিষীর ভবিষ্যৎবাণীঃ চরম সংকট ধেয়ে আসছে শঙ্কুর জীবনে। শঙ্কুর সবচেয়ে বড় শত্রু শঙ্কু নিজেই।
তা-ই হল। নিজেকে ধ্বংস করতে উঠেপড়ে লাগলো শঙ্কু। শেষ পর্যন্ত ধ্বংস হল কে?
২৩/ শঙ্কুর সুবর্ণ সুযোগ (সন্দেশ। বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ, আষাঢ় ১৩৮৪) – নিলামে পাওয়া গেল বহু পুরনো পুঁথি। সেই পুঁথিতে আছে সোনা বানানোর ফর্মুলা।
প্ল্যানচেটে নামানো হল বিখ্যাত আলকেমিস্ট জাবির ইবনে হাইয়ানের প্রেতাত্মা। একসময় তৈরি হল সোনা, কিন্তু সেই সাথে সত্যি হল প্রেতাত্মার বাণীঃ দ্যা প্রাইস অফ গোল্ড ইজ দ্যা প্রাইস অফ লাইফ।
২৪/ মানরো দ্বীপের রহস্য (আনন্দমেলা। পূজাবার্ষিকী ১৩৮৪) – সাগরে ভেসে আসা বোতলের মধ্যে পাওয়া গেল চারশ বছর পুরনো চিরকুট। আশ্চর্য এক ফল খেলে মানুষ বেঁচে থাকে অনন্তকাল, কিন্তু অনন্তকাল বেঁচে থাকার জন্য ত্যাগও করতে হয় কিছু একটা।
কি সেটা?
২৫/ কম্পু (আনন্দমেলা। পূজাবার্ষিকী ১৩৮৫) – মানুষের তৈরি আশ্চর্য এক যান্ত্রিক মস্তিষ্ক কম্পু। সবধরনের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে সে। কিন্তু একসময় কম্পু হয়ে গেল স্বয়ংসম্পূর্ণ, মানুষের নিয়ন্ত্রণ থেকে পালিয়ে গেল সে। অতঃপর...
২৬/ মহাকাশের দূত (আনন্দমেলা।
পূজাবার্ষিকী ১৩৮৬) – পাঁচ হাজার বছর পরপর মানুষের সভ্যতাকে কিছুটা সামনের দিকে এগিয়ে দেবার জন্য ভিনগ্রহ হতে আসে মহাজাগতিক প্রাণী। এবারও এল মানবসভ্যতাকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে চারটা প্রধান সমস্যার সমাধান নিয়েঃ ইচ্ছামত আবহাওয়া বদলানো, দূষিত বায়ুকে শুদ্ধ করার উপায়, সূর্যের রশ্মিকে বৈদ্যুতিক শক্তির পূর্ণ বিকল্প হিসেবে ব্যবহারের উপায় আর সমুদ্রগর্ভে মানুষ বসবাসের উপায়। কিন্তু...মটরদানার অর্ধেক সাইজের নীল পাথরটা আসলে কি?
২৭/ নকুড়বাবু ও এল ডোরাডো (আনন্দমেলা। পূজাবার্ষিকী ১৩৮৭) – আশ্চর্য মানুষ এই নকুড়বাবু। টেলিপ্যাথি, থটরিডিং, ক্লেয়ারভয়েন্স, অতীত-ভবিষ্যৎ দর্শন ইত্যাদি অনেক গুণের সমন্বয় তিনি।
এই নকুড়বাবুর হাত ধরে লোভী ধনকুবের সলোমন ব্লুমগার্টেন হেলিকপ্টার থেকে এল ডোরাডোর ছবি দেখে জঙ্গলের মধ্যে নামলেন। তারপর...
২৮/ শঙ্কুর কঙ্গো অভিযান (আনন্দমেলা। পূজাবার্ষিকী ১৩৮৮) – ব্লু ডায়মন্ড। এমনিতে দাম কম হলেও ইলেক্ট্রনিক্সে ব্যবহৃত হয় প্রচুর পরিমাণ। আবার একের পর এক অভিযাত্রী দল অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে কঙ্গোর জঙ্গলে।
তাদের খোঁজে শেষমেশ কঙ্গোর জঙ্গলে শঙ্কু এবং আরও অনেকে। অতঃপর সামনে এসে দাঁড়াল ভয়াবহ ডায়নোসর টির্যা নোসোরাস এক্স।
২৯/ প্রোফেসর শঙ্কু ও ইউ.এফ.ও (আনন্দমেলা। পূজাবার্ষিকী ১৩৮৯) – আকাশে নাকি দেখা গেছে ইউএফও। একের পর এক ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ নিদর্শনসমূহ।
তাজমহল ধ্বংস করার জন্য ইউএফও যখন ভারতে নির্দিষ্ট স্থানে এল, অবাক হয়ে গেল ইউএফওর মালিক, কারণ তাজমহল ধ্বংস হবে কিভাবে, সেটা তো এখনও বানানোই হয় নি! তবে কি ইউএফও পৌঁছে গেছে অতীতে?
৩০/ আশ্চর্জন্তু (আনন্দমেলা। পূজাবার্ষিকী ১৩৯০) – অদ্ভুত এক প্রাণী। সব রকম অবস্থার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারে সে। আশ্চর্য তার অভিযোজন ক্ষমতা, যেন রূপকথাকেও হার মানায়।
৩১/ প্রোফেসর রন্ডির টাইম মেশিন (আনন্দমেলা।
পূজাবার্ষিকী ১৩৯২) – আশ্চর্য এক টাইম মেশিন আবিষ্কার করেছেন প্রোফেসর রন্ডি। তার টাইম মেশিনে চড়েই শঙ্কু দেখলেন, ভবিষ্যতের নির্দিষ্ট সময়ে শঙ্কুর উপর নেমে আসছে ভয়াবহ দুর্যোগ। এবং সেটা আসছে রন্ডির কাছ থেকেই।
৩২/ শঙ্কু ও আদিম মানুষ (আনন্দমেলা। পূজাবার্ষিকী ১৩৯৩) – গহীন জঙ্গলে হারিয়ে গেল অভিযাত্রী তরুণ অভিযাত্রী হেরম্যান বুশ।
শঙ্কু আবিষ্কার করল এভলিউটিন, যার সাহায্যে যেকোনো প্রাণী বিবর্তনের পথে খুব দ্রুত রূপান্তর হতে থাকে। নৃতত্ত্ববিদ হাইনরিখ ক্লাইনের আবিষ্কৃত বিবর্তনের দিক থেকে ত্রিশ লক্ষ বছর পিছিয়ে থাকা আদিম মানবের গায়ে এভলিউটিন ইঞ্জেকশন পুশ করতেই জমে উঠল খেলা...আরে! এ কে!
৩৩/ নেফ্রুদেৎ এর সমাধি (সন্দেশ। শারদীয়া ১৩৯৩) – বহু প্রাচীন এক সমাধিতে পাওয়া গেল মহামূল্যবান ধাতু – হীরা। মমির গলায় ঝুলে থাকা হীরের গয়না দেখে সম্প্রতি হীরের গয়না হারিয়েছে এমন একজন সম্ভ্রান্ত ইংরেজ মহিলা দাবী করে বসলেন, এ গয়না আসলে তারই হারিয়ে যাওয়া গয়না। প্রত্নতাত্ত্বিকদের দিকে ছুটে এল সন্দেহের তীর।
অবশেষে সব সন্দেহের অবসান ঘটিয়ে শঙ্কু বানাতে সক্ষম হলেন...কী বানাতে সক্ষম হলেন তিনি?
৩৪/ শঙ্কুর পরলোকচর্চা (আনন্দমেলা। পূজাবার্ষিকী ১৩৯৪) – কম্পিউডিয়াম, অর্থাৎ কম্পিউটারাইজড মিডিয়াম। এর সাহায্যে মানব মিডিয়ামের সাহায্য ছাড়াই প্ল্যানচেটে আত্মা নামানো যায়। কিন্তু প্রাথমিকভাবে কারো আত্মা নামিয়েই মানুষকে বিশ্বাস করানো যায় না ব্যাপারটা, প্রায় সবাই ভাবে বুজরুকি। শেষমেশ “ওটা”র আত্মা নামানোর পরই মানুষ অবশেষে নির্দ্বিধায় স্বীকার করে নেয় যন্ত্রটির কার্যকারিতা...কিন্তু ওটা কি?
৩৫/ শঙ্কু ও ফ্রাঙ্কেনস্টাইন (আনন্দমেলা।
পূজাবার্ষিকী ১৩৯৫) – প্রায় এক শতাব্দী আগে মৃত মানুষ জীবিত করা নিয়ে গবেষণা করে লেখা ভিক্টর ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইন নামক জনৈক ব্যক্তির ডায়রি কোনোভাবে হাতে পড়ে শঙ্কুর। ভিক্টরের ডায়রি ও ল্যাবরেটরি ব্যবহার করে মৃত মানুষের জীবন বাঁচাতে সক্ষম হয় শঙ্কু। আর তারপরই শুরু হয় আসল কাহিনী। প্রচণ্ড ইহুদিবিদ্বেষী নেতা হানস রেডেলের আকস্মিক মৃত্যুর পর তার সাঙ্গোপাঙ্গরা শঙ্কুকে ধরে নিয়ে যায় রেডেলকে জীবিত করার জন্য। শঙ্কু পড়ে যায় উভয় সংকটে।
একদিকে নিজের জীবন, অন্যদিকে হাজার হাজার নিরীহ ইহুদীর জীবন ও সুখশান্তি। শেষ পর্যন্ত কি করবে শঙ্কু?
৩৬/ ডাঃ দানিয়েলির আবিষ্কার (সন্দেশ। শারদীয়া ১৩৯৫) – আশ্চর্য ওষুধ আবিষ্কার করেন ডাঃ দানিয়েলি। এই ওষুধের গুণে মানুষের চরিত্রের শুধুমাত্র খারাপ দিকগুলোকে উজ্জীবিত করা যায়। এবং এরপরই শুরু হয় একের পর এক খুন।
শেষমেশ লক্ষ্য হয় শঙ্কু নিজেই। তারপর...?
৩৭/ ডন ক্রিস্টোবাল্ডির ভবিষ্যদ্বাণী (আনন্দমেলা। পূজাবার্ষিকী ১৩৯৬) – পৃথিবীর এক গোপন দ্বীপে আশ্চর্য এক প্রজাতির বসবাস। এই প্রজাতি মানুষ থেকে অনেক উন্নত। কতটা উন্নত, সেটা দেখানোর জন্য সেই প্রজাতির একজন মানুষের বেশ ধরে মানুষের রাজ্যে চলে আসে।
কিন্তু শেষমেশ মানুষের লোভ তাকে আবার নিজের আলয়ে ফিরে যেতে বাধ্য করে।
৩৮/ স্বর্ণপর্ণী (আনন্দমেলা। পূজাবার্ষিকী ১৩৯৭) – বাবার কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে গহীন জঙ্গলে স্বর্ণপর্ণী গাছের সন্ধান লাভ করল শঙ্কু। এটা দিয়েই তৈরি হতে লাগলো মিরাকিউরল। জার্মানিতে প্রায় গৃহবন্দী এক ইহুদী প্রোফেসরের রোগমুক্তির কাজে লাগলো এই মিরাকিউরল, কিন্তু শঙ্কু বন্দি হলেন কুখ্যাত ব্ল্যাকশার্ট বাহিনীর হাতে।
অতঃপর হিটলারের অন্যতম সহচর গোয়েরিং এর গ্ল্যান্ড ডিসফাংশনের চিকিৎসা চাওয়া হল শঙ্কুর কাছে, মনের দুঃখে এবং নিরুপায় হয়ে শঙ্কু তার মিরাকিউরল বড়ি গোয়েরিং কে দিয়ে আসতে বাধ্য হলেন। কিন্তু তারপর?
এছাড়া “ইনটেলেকট্রন” ও “ড্রেক্সেল আইল্যান্ডের ঘটনা” নামের দুটো গল্প সত্যজিৎ অসমাপ্ত রেখে মারা গিয়েছেন, সে দুটো অসমাপ্ত অবস্থায়ই ছাপা হয়েছিল আনন্দমেলা। পূজাবার্ষিকী ১৩৯৯ সংখ্যায়।
এটা তো গেল কাহিনীর দিকটা। সত্যজিতের ভাষাটা কেমন? এক কথায় – চমৎকার।
বাহুল্য নামের ব্যাপারটা বোধহয় সত্যজিৎ জানতেনই না। এমন একটাও জায়গা খুঁজে পাওয়া যাবে না যেখানে অনর্থক গল্প বড় করা হয়েছে, বা ভাষার অসহ্য কারুকার্য দেখানো হয়েছে, বা বাক্য অনর্থক বড় করা হয়েছে, বা অযথাই কঠিন কঠিন শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে, অথবা কথোপকথন অতিরিক্ত হয়ে গেছে, অথবা বিজ্ঞানের কচকচানি মাত্রাতিরিক্ত হয়ে উঠেছে। সত্যজিৎ সরল, সাবলীল, প্রাঞ্জল। শঙ্কুর গল্পের মধ্যে সবসময়ই একটা সাসপেন্স, একটা গল্প ধরলে শেষ না করে ওঠার কায়দা নেই।
কাদের জন্য লেখা হয়েছিল শঙ্কু? দেখেশুনে মনে হয় হয়তো কিশোর বা বাচ্চাদের জন্য।
তবে এটা ঠিক যে কিশোর-কিশোরী-যুবক-যুবতী-প্রৌঢ়-প্রৌঢ়া-বৃদ্ধ-বৃদ্ধা সব বয়সের সব রুচির সবাই শঙ্কু প্রাণভরে উপভোগ করতে পারবেন। এখানে যেমন লঘুপাক সায়েন্স ফিকশন আছে, তেমন আছে রোমহর্ষক অ্যাডভেঞ্চার। সব বয়সের সবার জন্যই মানানসই বটে এই শঙ্কু।
সব কথার শেষ কথা, বড় বড় টেক্সটবই ক্লাস কোচিং ক্রিকেট ফুটবল ক্যারাম দাবা স্টার জলসা জি বাংলা সিনেমা মুভি সিরিয়াল রূপচর্চা ঝগড়া ডেটিং বেটিং মেটিং ইত্যাদির ফাঁকে সময় পেলে অবশ্যই পড়ে ফেলা চাই প্রোফেসর শঙ্কুর সবগুলো কাহিনী। নাহলে কিন্তু পস্তাবেন, এই বলে দিচ্ছি।
সালেহ তিয়াস
১৫/০৯/২০১৩
রাত ১টা ৫৬ মিনিট
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।