স্বেচ্ছাচার না করা গেলে তারে স্বাধীনতা বলে না। স্বাধীনতা মানেই স্বেচ্ছাচারের অধিকার।
[রং=#808080] সুলতান দ্বিতীয় আবদুল হামিদের নিরাপদ জীবন [/রং]
তুর্কির সুলতান দ্বিতীয় আবদুল হামিদ (Abdul Hamid II, 1842-1918) তার শাসনকালে (1876-1909) রেড সুলতান নামে বিখ্যাত হইছিলেন। বিপুল রক্তপাত ঘটাইয়া লাল-এর এই গৌরব তিনি অর্জন করেন। পূর্বসূরির অপসারণ তারে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করছিল।
আবদুল হামিদের নিরাপত্তা বিষয়ক সু্যররিয়াল অবসেশন জগতে নতুন ইতিহাস তৈরি করে। তারে ঘিরা থাকা কয়েক হাজার আরব বডিগার্ডের সশস্ত্র প্রহরা তিনি অপ্রতুল জ্ঞান করতেন। Yilditz-এর পাহাড়ি এলাকায় খ্রিস্টানগো সমাধিক্ষেত্র উজাড় কইরা তিনি দুর্গম প্রাসাদ নিমর্াণ করছিলেন। প্রাসাদ বানাইতে আসছিল 12 জন আর্কিটেক্ট। এগো প্রত্যেকের প্রতি আদেশ আছিল অন্য 11 জন কি করতেছে না করতেছে তা জানন যাইব না।
না জাইনাই আপনাপন অংশ কমপ্লিট করেন স্থপতিরা। প্রাসাদের দেয়ালে দেয়ালে আয়না বসাইয়া দিছিলেন সুলতান, যাতে যে কোনো কোণ থিকা যে কারো মুভমেন্টে নজর রাখন যায়।
বিলিডংয়ের বেশিরভাগ রুম আন্ডারগ্রাউন্ড প্যাসেজের মারফতে অন্য রুমের লগে যুক্ত আছিল। কেবল সুলতানই জানতেন কোন ঘরের লগে কোন ঘরের যোগ। তার পারমানেন্টলি লোডেড রিভলবার আছিল হাজারে খানেক।
প্রাসাদের গোপন জায়গায় লুকানো থাকতো এগুলি। গুপ্তঘাতক ঠেকানোর জন্য ঘরে ঘরে পাইতা রাখছিলেন গুপ্ত ফাঁদ আর মেকানিক্যালি কন্ট্রোলড বন্দুক।
সম্ভাব্য আততায়ীগো গতিবিধি পর্যবেক্ষণের জন্য প্রাসাদরে কেন্দ্র কইরা আবদুল হামিদ একটা ছদ্ম শহর বসান। এতে আছিল 20টা ভুয়া কফিশপ, যেগুলি চালাইতো সুলতানের গুপ্তচরেরা। Yilditz শহরে সুলতানের প্রায় বিশ হাজার গুপ্তচর নিজেরা নিজেগো আর সুলতানের বডিগার্ডগো উপরে নজরদারি করতে থাকতো।
সুলতান এগো কাউরেই বিশ্বাস করতেন না। তিনি নির্ভর করতেন রাস্তায় রাসস্তায় ঝুলাইয়া দেওয়া খাঁচাবন্দি শ' খানেক টিয়াপাখিরে, যারা আগন্তুক দেখলেই চেচাইয়া কানে তালা লাগাইয়া দিত।
আবদুল হামিদ বিষপ্রয়োগের ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করছিলেন। তিনি গোপন কূপ থিকা আনা মোহরমারা কন্টেইনারের পানি পান করতেন। তার ডেইরি ফার্মে চবি্বশ ঘণ্টা নিরাপত্তার ব্যবস্থা আছিল।
সুলতানের কিচেন আছিল ব্যাংক ভল্টের মতো সুরক্ষিত। তার জন্য রান্না করা খাবারের প্রতি পদ তিন অংশে ভাগ করা হইতো। প্রথমে প্রথম ভাগ খাইত সুলতানের স্বাস্থ্য ও জীবন তদারককারী কর্মকতর্া। দ্বিতীয় ভাগ বিলাই-কুত্তারে খাওয়ানো হইতো। খাদ্যগ্রহণান্তে সব রকম প্রাণী বাঁইচা থাকলে পরে তৃতীয় অংশের খাবার সিল কইরা পাঠানো হইতো মহামতি সুলতানরে।
খাবারের ব্যাপারে অত্যন্ত খুঁতখুঁতে আবদুল হামিদ প্রায় কিছুই খাইতেন না। বেশির ভাগ সময়ই তিনি খাইতেন ভিটামিন পিল। সুলতানের পোশাকে কেউ বিষ মাখাইয়া রাখতে পারে এই আশঙ্কায় পরনের আগে খোজাগো পরাইয়া কাপড় গরম করাইয়া নিতেন তিনি।
সুলতান দ্বিতীয় আবদুল হামিদ মুক্তা-খচিত রিভলভার লইয়া ঘুরতেন। তার সামনে কেউ নড়াচড়া করতে বা পকেটে হাত ঢুকাইতে সাহস করতো না।
একবার এক মালি তারে কুর্নিশ করার জন্য মাথা নোয়াইছিল, লগে লগে গুলি কইরা মালির নত মাথা সোজা কইরা দিছিলেন সুলতান।
আরেকবার তার নিজের মেয়ে তারে পিছন থিকা আহলাদের ধাক্কা দিলে তিনি চমকাইয়া গিয়া এত দ্রুত রিভলভার বাইর কইরা গুললি মাইরা দেন যে মারা যাওনের পরেই কেবল বুঝতে পারছিলেন কারে তিনি গুলি করছেন।
ক্ষমতা হারানোর 9 বছর পরে সুলতান দ্বিতীয় আবদুল হামিদ তার নিরাপদ মৃতু্য বরণ করতে পারছিলেন।
তথ্যসূত্র : [ইটালিক] Oddballs and Eccentrics[/ইটালিক] by Karl Shaw ।
লেখাটা শুদ্ধ নাগরিক 'ডায়ালেক্টে' যায়যায়দিন পত্রিকার 7/9/6 সংখ্যায় ছাপা হইছিল।
ছবি : সুলতান দ্্বিতীয় আবদুল হামিদ 1890; সিংহাসন থিকা উচ্ছেদের পর পর চারজন ঘনিষ্ঠ লোকের সঙ্গে হতচকিত রেড সুলতান।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।