timursblog@yahoo.com
'তাহলে,' ভাবল মেরি । 'আমি ওকে খুন করে ফেলেছি । '
কীভাবে এত দ্রুত ওর মন পরিষ্কার হয়ে গেল তা এক আশ্চর্য ব্যাপার । দ্রুত চিন্তা করতে লাগলো ও । একজন ডিকেটটিভের বউ হিসেবে শাস্তি কী হবে জানা আছে তার ।
তাতে কিছু আসে যায় না, বরং সেটাকে একধরনের মুক্তি হিসেবেই দেখবে ও । কিন্তু পেটের বাচ্চাটার কী হবে ? খুনী মায়েদের না জন্মানো বাচ্চাদের সম্বন্ধে আইন কী বলেছে ? মা আর বাচ্চা দুটোই কী ঝুলবে ? না কি ওরা দশমাস অপেক্ষা করবে ? কী শাস্তি দেবে ওরা ?
মেরি ম্যালোনি জানে না । তবে কোন ঝুঁকি নিতে যাচ্ছে না ও ।
ভেড়ার রানটা কিচেনে নিয়ে একটা প্যানে রেখে আভেনে রেখে তন্দুরের আঁচটা বাড়িয়ে দিল মেরি । তারপর হাত ধুয়ে উপরতলার বেডরুমে ছুটল ও ।
আয়নার সামনে বসে চুল ঠিক করলো, সামান্য মেক আপ ছোঁয়াল । একবার হাসার চেষ্টা করে দেখল, অদ্ভুত দেখাচ্ছে । আবার হাসল ও ।
'হ্যালো স্যাম,' হাসিখুশি গলায় জোরে জোরে বলল ও ।
গলাটাও অদ্ভুত শোনাচ্ছে ।
'কিছু আলু দরকার আমার । হ্যাঁ, একক্যান মটরশুঁটিও চাই । '
এবার হাসি আর গলার আওয়াজ দুটো ই ভাল আসছে । দুয়েকবার রিহার্সাল দিয়ে এক দৌড়ে নীচে নেমে কোটটা গায়ে দিয়ে পিছনের দরজা দিয়ে বেরিয়ে বাগান পার হয়ে হয়ে রাস্তায় নামল মেরি ।
এখন প্রায় ছয়টা বাজে ।
গ্রোসারি শপে এখনো আলো জ্বলছে ।
'হ্যালো স্যাম,' হেসে কাউন্টারের পিছনের লোকটাকে ডাকলো মেরি ।
'গুড ইভনিং মিসেস ম্যালোনি, কী করতে পারি আপনার জন্য?'
'কিছু আলু দরকার আমার । হ্যাঁ, একক্যান মটরশুঁটিও চাই । '
তাক থেকে মটরশুঁটি পাড়ার জন্য মেরির দিকে পিছনে ফিরল স্যাম ।
'প্যাট্রিক আজ বাইরে খাবে না ঠিক করেছে, আমরা সাধারনত বিষ্যুদবার দিন বাইরে কোথাও খেয়ে আসি,' জানাল মেরি । 'আর বাসায়ও কোন সব্জি নেই । '
'তাহলে মাংস নিলে কেমন হয় মিসেস ম্যালোনি ?'
'নাহ, আমার ফ্রিজারে একটা আস্ত ভেড়ার রান আছে । '
'আমি ফ্রোজেন মাংস রান্না করে দেখিনি কখনো স্যাম । আপনার মনে হয় সব ঠিক মত হবে ?'
'আমি মনে করি না,' বলল দোকানদার ।
'এতে কিছু ফারাক বোঝা যাবে । আপনাকে আইডাহো আলু দেবো ?'
'চমৎকার । দুটো দিন । '
'আর কিছু ?' মাথা একদিকে কাত করল স্যাম । 'খাবার পরে খাওয়ার জন্য কিছু লাগবে ?'
'আপনার সাজেশন কী স্যাম?'
'চিজকেকের একটা বড় স্লাইস নিলে কেমন হয়? আমি জানি ও এটা পছন্দ করে ।
'
'পার্ফেক্ট,' বলল মেরি । 'ওর ভারী পছন্দ চিজকেক । '
সবকিছু প্যাকেটে মোড়ানো হয়ে গেলে জিনিসের দাম দিয়ে সবচেয়ে মধুর হাসিটা উপহার দিল মেরি । 'থ্যাংকইউ স্যাম, গুডনাইট । '
'গুডনাইট মিসেস ম্যালোনি, থ্যাংকইউ ।
'
দ্রুত পায়ে ফিরে চলল মেরি, এখন পর্যন্ত সব ঠিকঠাকই চলছে । সে বাড়ি যাচ্ছে আর তার স্বামী রাতের কাবারের অপেক্ষায় আছে । সে রাতের খাবার খুব যত্ন নিয়ে রাঁধতে যাচ্ছে । এখন যদি সে বাড়ি ফিরে কোন অদ্ভুত বা ট্র্যাজিক কিছু দেখেতো সে শকে হিস্টিরিয়াগ্রস্ত হতেই পারে । আসলে এরকম কিছু যে ঘটবে সে জানেই না !
এইভাবেই করতে হবে গোটা ব্যাপারটা, মনে মনে বলল ও ।
সবকিছূ যেন স্বাভাবিক আর প্রাণবন্ত হয় । কোন অভিনয়ের দরকারই আর হবে না ।
তাই হাসতে হাসতে একটা গানের কলি যখন কিচেনের দরজা দিয়ে ঘরে ঢুকলো মেরি ।
'প্যাট্রিক!' জোরে ডাকলো ও । 'প্যাট্রিক ডার্লিং! কোথায় তুমি ?'
ঠোঙ্গাটা টেবিলে রেখে লিভিং রুমের দিকে এগিয়ে গেল ও ।
ওখানেই পড়ে আছে প্যাট্রিক, পা গুলো বাঁকা হয়ে আছে, আর একটা হাত চাপা পড়েছে শরীরের নীচে । দৃশ্যটা দেখে সত্যিই শক পেল মেরি । সমস্ত পুরনো প্রেম আর স্মৃতি উথলে উঠছে তার । দৌড়ে এসে হাঁটু গেড়ে বসে কাঁদতে শুরু করলো ও । কোন অভিনয়ের দরকার হল না ।
কয়েক মিনিট পরে উঠে পুলিশ স্টেশনে ফোন করল ও । নাম্বার জানাই আছেই ওর, আরেক প্রান্তের লোকটা ধরতেই বলল মেরি, 'প্যাট্রিক মারা গেছে !'
'কে বলছেন?'
'ম্যালোনি, মিসেস প্যাট্রিক ম্যালোনি । '
'আপনি বলতে চাইছেন প্যাট্রিক ম্যালোনি মারা গেছেন । '
'আমার তাই মনে হয়,' ফোঁপাতে ফোঁপাতে বলল ও । 'মেঝের উপর পড়ে আছে ও ।
' আমার ধারনা ও মারা গেছে । '
'এক্ষুনি আসছি আমরা,' বলে ফোন কেটে দিল পুলিশ লোকটা ।
খুব দ্রুত চলে এল পুলিশের গাড়ি, যখন মেরি দরজা খুলল দুজন পুলিশ ঢুকল বাড়ির ভিতর । ওদেরকে চেনে মেরি, আসলে থানার প্রাব সবাইকেই চেনে সে । ধপাস করে একট আচেয়ারে বসে পড়ল ও ।
তারপর প্যাট্রিকের পাশে হাঁটু গেড়ে বসে থাকা লোকটা, যার নাম ও'ম্যালি, পাশে গিয়ে দাঁড়াল ।
'ও কী মারা গেছে?' চিৎকার করে জানতে চাইল মেরি ।
'আমি দুঃখিত, ব্যাপার তাই । কী করে ঘটল এটা?'
অল্প কথায় মেরি জানালো কী ভাবে গ্রোসারের দোকান থেকে ফিরে এসে প্যাট্রিককে এইভাবে পড়ে থাকতে দেখেছে সে । ও যখন কাঁদছে, কথা বলছে কাঁদছে, নুনান নামে অন্য লোকটা মৃত লোকটার মাথার পিছনে জমাট বাঁধা রক্তের ছোপ দেখতে পেল ।
ও'ম্যালিকে দেখাতেই সে ফোনের দিকে এগিয়ে গেল ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।