বৃহস্পতিবার হাই কোর্টের বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক এবং বিচারপতি এবিএম আলতাফ হোসেনের বেঞ্চে একটি রিটের শুনানি হয়।
গত ১৯ মে দেয়া এই রিটের আদেশে তাজরীনের মালিককে আদালতে হাজির করতে স্বরাষ্ট্র সচিব, শ্রম সচিব, বিজিএমইএ সভাপতি, পুলিশের মহাপরিদর্শককে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।
পাশাপাশি মালিকের ‘ইচ্ছাকৃত অবহেলায়’ ১১২ শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় তাকে গ্রেপ্তারে বিবাদীদের ‘নিষ্ক্রিয়তা’ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তাও জানাতে বলা হয়।
সকালে আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিত রায় বলেন, তাজরীনের মালিক যাতে দেশ ত্যাগ করতে না পারেন সে জন্য জল-স্থল-বিমান বন্দরে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে দেলোয়ারকে পাওয়া যায়নি।
এর মধ্যেই আদালতে হাজির হন তাজরীনের মালিক।
আদালতে তিনি বলেন, “আমি স্বাভাবিক জীবন যাপনই করছি। ব্যবসা বাণিজ্য নিয়ে আছি। অফিসে যাচ্ছি। কাজকর্ম করছি।
কেউ আমাকে আনতে যায়নি। তবে আদালত আদেশ দিয়েছে শুনে চলে এলাম। ”
ওই রিটের আদেশে তাজরীন বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ থাকলেও নির্ধারিত দিনে সেই প্রতিবেদনও আদালতে জমা পড়েনি।
পরে আদালত আগামী ৯ জুনের মধ্যে ওই প্রতিবেদন আদালতে জমা দিতে স্বরাষ্ট্র সচিবকে নির্দেশ দেয়। একই দিন তাজরীন মালিককেও আদালতে আসতে বলা হয়।
নৃ-বিজ্ঞানী নাজনীন আকতার বানু, সায়েদা গুলরুখ কামাল ও মাহমুদুল হাসান সুমনের পক্ষে গত ২৮ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া রিটটি দায়ের করেন।
গত বছরের ২৪ নভেম্বর তাজরীনে ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় শতাধিক শ্র্রমিক প্রাণ হারান, পুড়ে যাওয়ার কারণে যাদের অনেকেরই পরিচয় জানা যায়নি। আগুন লাগার সময় কারখানার কলাপসিবল গেইটে তালা থাকায় হতাহতের সংখ্যা এতো বেড়েছে বলে অভিযোগ করেন বেঁচে যাওয়া শ্রমিকরা।
এই রিটের পর আশুলিয়ার পোশাক কারখানা তাজরীন ফ্যাশনসের মালিক দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে একটি হত্যা মামলা করেন নিহত শ্রমিক রেহানা বেগমের ভাই মো. মতিন।
মামলায় তাজরীন মালিক ছাড়াও অজ্ঞাত পরিচয় ২০ থেকে ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
‘অন্য দেশ হলে প্রণোদনা পেতাম’
এদিকে আদালত থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় তাজরীন ফ্যাশনসের মালিক দেলোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, অন্য দেশে হলে তিনি সরকারের আর্থিক প্রণোদনা পেতেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমি পালিয়ে যাব কেন? আমার বিরুদ্ধে কোন পরোয়ানা নেই। তাজরীনের ঘটনায় আমার কোন দোষ নেই। সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে, এ ঘটনায় দোষীদের বের করে বিচারের আওতায় আনা। ”
“এত বড় একটা ঘটনা ঘটলো।
এত ক্ষয়ক্ষতি হলো। অথচ মালিককে কোন অর্থনৈতিক সহায়তা না দিয়ে উল্টো সবাই তাকে জেলে ভরতে চাচ্ছে। বিদেশে এ ধরনের ঘটনা ঘটলে মালিককে সরকারের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা দেয়া হতো। ”
তবে এ ধরনের ঘটনার পর কোন দেশে মালিককে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে- এমন প্রশ্নে সায় দেননি তিনি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।