আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অক্সফোর্ডে অদ্ভুত ইন্টারভিউ: বলুনতো ডিমটা কেন গোল?

বাঙ্গালী জাতির গৌরবময় ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয় সংস্কৃতির জন্য অপমানজনক কোনকিছু এই ব্লগে লেখা যাবে না।

খুব বেশি না ভেবেই বলুন দেখি, ডিম কেন গোল! কি পারছেন না? কোই বাত নেহি। এবার বলুন দিনে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর দিয়ে কতোখানা মহাপতঙ্গ উড়াল দেয়? কি এটাও পারছেন না? আচ্ছা ম্যানহোল আছে, কিন' উইমেনহোল কেন নেই? কিছুটা ঘাবড়ে গেছেন বোঝা যাচ্ছে। আচ্ছা এবার সহজ ও শেষ প্রশ্ন বলুনতো, দর্শনের শিক্ষকরা কেনো জুতো পরে না? এবার বোধহয় কিছুটা সাহস পেলেন বুকে। সবাইতো খালি পায়ে থাকে না।

কেউ কেউ জুতো পরে। এগুলো মনগড়া প্রশ্ন নয়। বিশ্বের অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয় অক্সফোর্ড এ জাতীয় প্রশ্ন করে ইন্টারভিউ বোর্ডে। অক্সফোর্ডের কলেজগুলোতে প্রবেশের জন্য এ জাতীয় প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েই ঢুকতে পারবেন। আর এতো শুধু একটি নমুনা এর বাইরেও এতো এনত্দার-বেনত্দার প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় ভর্তিচ্ছুদের যে কেউ ভাইভা বোর্ডেই ভেবে বসে, অনেক হয়েছে এবার খোদা হাফেজ।

এ ধরনের সাক্ষাৎকারের একটি উদ্দেশ্য আছে। অক্সফোর্ডের ইন্টারভিউ পর্যনত্দ যেতে এমনিতেই বেশ কিছু ধাপ পেরোতে হয়। আর প্রতিটি ধাপেই জ্ঞান-গরিমার ব্যাপক পরীক্ষা দিয়ে উৎরাতে হয়। সেক্ষেত্রে ইন্টারভিউ বোর্ডটি থাকে ভর্তিচ্ছু কতোটা মনোযোগ ও দ্রুততার সঙ্গে পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারে সেটা যাচাই করা। যেমন মুরগির উপবৃত্তাকার ডিম আজীবন সাধনা করলেও যে আকার বদলাবে না সেটি নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।

কিন' এ পরিস্থিতিতে আপনি কতোটা দ্রুততার সঙ্গে পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে পারেন সেটাই বিবেচ্্য। অক্সফোর্ডের সেন্ট পিটার্স কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ও ডিন ডক্টর হার্টমুর্ট মেয়র বিবিসি প্রতিবেদকের সঙ্গে কথোপকথনে চলতি সেশনের ইন্টারভিউর প্রশ্ন সম্পর্কে বলেন, 'রাজনীতির ওপর পড়ালেখা করতে হলে আপনাকে কিছু বিষয় আগে থেকেই আত্দস্থ করতে হবে। এই যেমন এবার ইন্টারভিউতে একজন প্রার্থী আমার রুমে প্রবেশ করলো। আমি তার দিকে না তাকিয়েই তাকে 'জেন' বলে সম্বোধন করলাম। আমি জানতাম সে ছেলে।

তারপরও তার অভিব্যক্তি বোঝার জন্য আই-কন্টাক্ট এড়িয়ে চললাম। বোঝা গেলো সে সত্যিই হতচকিয়ে গেছে। আমি তার দিকে না তাকলেও বুঝতে পারছিলাম সে আমাকে হয় পাগল না হয় আত্দভোলা হিসেবে ভেবেছে। কিন' সে জানলো না এর মধ্যে দিয়েই তার ভাইভা হয়ে গেলো। অদ্ভুত ধরনের ভাইভা মোকাবিলা করে এলিনা কর্প এখন অক্সফোর্ডের নিউ কলেজে চিকিৎসাশাস্ত্রে অধ্যয়ন করছেন।

তার ভাইভা বোর্ডে তাকে রাজনীতি নিয়ে আধঘণ্টা লেকচার ঝাড়তে হয়েছিল। সেই সঙ্গে তার রাজনীতি সচেতনতা নিয়েই কথা বলতে হয়েছিল ভাইভা বোর্ডে। এমিলি চিকিৎসাশাস্ত্রে পড়ালেখা করতে এসে গুণগান গেয়েছেন রাজনীতির। আবার মানবিক বিষয়ে অধ্যয়ন করতে এসে শেক্সপিয়ারের নাটক আর রবার্ট ব্রাউনিংয়ের কবিতাকেও ব্যবচ্ছেদ করতে হয়েছে অনেক ছাত্রের। এতো নাটকীয়তার পরও অক্সফোর্ড অক্সফোর্ডই।

প্রতি বছর বিশ্বের নানা প্রানত্দ থেকে অসংখ্য শিক্ষার্থী পাড়ি জমায় বিশ্বের অন্যতম এ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার জন্য। আর অক্সফোর্ড কতর্ৃপক্ষও প্রচলিত রাসত্দায় না দৌড়ে প্রার্থীর উপস্থিত বুদ্ধি, তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ও সিদ্ধানত্দ গ্রহণের বিষয়টির প্রমাণ পেয়েই গ্রিন কার্ড দেয় অক্সফোর্ডে প্রবেশের।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।