বাঙ্গালী জাতির গৌরবময় ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয় সংস্কৃতির জন্য অপমানজনক কোনকিছু এই ব্লগে লেখা যাবে না।
সেলফে সাজানো রয়েছে প্রিয় সায়েন্স ফিকশন, গানের সিডি_ সব, সবই পড়ে আছে। আর তুমি প্রিয় রঙিন দুনিয়া থেকে মুখ ফিরিয়ে আছ অন্যদিকে। তোমার জীবন থেমে আছে, সবকিছু বিবর্ণ আর বিস্ট্বাদ লাগছে। সব ভালোলাগা সরিয়ে মনে ভর করেছে রাজ্যের হতাশা।
আলো-আধাঁরির এ সময়ে জানি, তোমাদের অনেকের মনের ভেতরেই জমে আছে অকারণ বিষণম্নতা, মনে তোমার মন খারাপের অনুভূতি ! নাহ, বল্পব্দু, ভেঙে পড়ো না প্টি্নজ। চলো দেখা যাক এ মনের অসুখ থেকে সবাই মিলে বেরিয়ে আসা যায় কি-না।
চেনা মুখ, অচেনা ছবি : বিজ্ঞানীদের গবেষণা বলছে, পৃথিবীজুড়েই বয়ঃসল্পিব্দ কালের এই অসুখটা সবার ওপরে ভর করে। এর মানে হলো তোমার মতোই ডেনমার্কের কোনো বল্পব্দুও টিভি দেখা নিয়ে মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে মন খারাপ করে থাকে। তবে সব মন খারাপ করাকেই অবশ্য বিষণম্নতা বলা হয় না।
যদি এ খারাপ লাগা বহুদিন ধরে চলতেই থাকে তখনই সমস্যা। যেমন তানিয়ার কথাই ধরো না। সাতদিন আগে ওর মা পড়া নিয়ে ওকে বাল্পব্দবীদের মায়ের সামনে বকা দেন। তারপর থেকে ওর কেবলই মনে হচ্ছে 'সব মান-সল্ফ্মান শেষ হয়ে গেল! আর বেঁচে থাকার মানে কী?' দিন যত যাচ্ছে তানিয়ার এ অনুভূতি তীব্র থেকে আরো তীব্রতর হচ্ছে। বলছি তেমায়, এটাই বিষণম্নতা।
আর এখানে তানিয়ার কথাটা জানিয়ে দিলাম কারণ বিজ্ঞানীরা বলেছেন, ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের মধ্যেই বিষণম্নতার হার বেশি।
আর হয়তো অবাক হবে শুনলে, এ অনুপাতটা 1ঃ2!
থেমে যাওয়া দিনকাল : আচ্ছা এতসব কথা শুনে এখন যদি প্রশম্ন করো যে, বিষণম্নতা কেন হয় তাহলে কিন্তু তোমাকে খুব বুদব্দিমান বলা যাবে না। তুমি নিজেই নিজেকে প্রশম্ন করে দেখ এর পেছনে কত শত-সহস্র কারণ জড়িয়ে আছে। ঈদে ছোট বোনকে বেশি দামি পোশাক কিনে দেওয়ার দুঃখ, স্ট্কুল বা কলেজের হাজারো পড়ার চাপ, স্ট্কুলের ত্রিক্রকেট দলে সুযোগ না পাওয়ার দুঃখ, নতুন এমপি থ্রি প্ট্নেয়ার কিনতে না পারার কষদ্ব... কত্তকিছু আছে মন খারাপ করার। ও, আসল ব্যাপার তো বলাই হয়নি।
এই বয়ঃসল্পিব্দর বয়সে হূদয়ঘটিত ব্যাপারে যতটা মন খরাপ করে অন্য কোনোকিছুতে এতটা করে না। পছন্দের কথা বলতে না পারা, আবার বলেও সাড়া না পাওয়া অথবা চলতে চলতে থেমে যাওয়া_ এসব হতাশা বুকে চেপে কতজন যে একা একা কেঁদে যায় তার খবর কে রাখে! তবে বিষণম্নতার পেছনে কিন্তু উত্তরাধিকার সহৃত্রে পাওয়া কিছু দুষদ্ব জিনও কাজ করে। তবে এটা একটা সল্ফ্ভাবনা মাত্র।
লক্ষণ সুবিধার নয় : কেউ বিষণম্ন হলে ঘুম কমে যেতে পারে। আবার উল্কেল্টাটাও হয়।
অর্থাৎ ঘুম বেড়ে যায় ভয়ানকভাবে কিংবা ঘুমের রুটিন একেবারে বদলে যায়। যখন তখন ঘুম, যখন তখন জাগা। শুধু ঘুম নয়, কাউকে বিষণম্নতায় পেলে অনেক কিছুই বদলে যায়। হয়তো দেখবে তোমার কোনো চঞ্চল বল্পব্দু একেবারে চুপ হয়ে গেছে। এমনটা হলে ভালো করে খোঁজ নাও।
দেখবে নিশ্চয় গোলমাল কিছু একটা হয়েছেই। আবার বাসায় যদি দেখ ছোট বোনটা খুবই খিটখিটে মেজাজের হয়ে গেছে, ওর সঙ্গে ভালো করে কথাই বলা যায় না, বারবার দপদপ জ্বলে ওঠে তখনই বুঝবে লক্ষণ সুবিধার নয়। অথবা তোমার নিজের কথাই ধরো না। হঠাৎই শরীর ভীষণ দুর্বল লাগছে। মাথা ঝিমঝিম করছে।
অথবা শরীরের কোথাও ব্যথা হচ্ছে অথচ কোথাও আঘাত লাগেনি। তখন বুঝবে তোমার ভেতরে নিশ্চয় গোলমাল কিছু হয়েছে। তোমার মন হয়তো কোনোকিছু মেনে নিতে পারছে না, তাই জানিয়ে দিচ্ছে নানা সংকেত দিয়ে!
দুঃসময়ের যাত্রী : আমাদের অনেকের মা-বাবারা বিষণম্নতা বা মন খারাপ এসব ব্যাপারকে একেবারেই পাত্তা দেন না। তারা বলেন , মন খারাপ আবার কী, এটা ন্যাকামি ছাড়া কিছু নয়। স্রেফ পড়ালেখা না করার ফন্দি।
কিন্তু না, বিষণম্নতা মোটেই হেলাফেলার ব্যাপার নয়। কারণ এটা একটা সুস্ট্থ মানুষকে ধীরে ধীরে নিঃশেষ করে দেয়। একেবারে জীবন্মৃত বানিয়ে ছাড়ে। ফলে ভেতরে ভেতরে নিজের সব আত্দ্মবিশ্বাস, সব স্ট্বপম্ন একেবারে ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। অর্থাৎ বিষণম্নতা তোমার ভালো চিনস্নার ক্ষমতা নষদ্ব করে দেয়।
তখন কেবলই মনে হয় 'আমাকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না। '
ফিরে এসো হূদয়নগরে : তোমাদের বয়সে বিষণম্নতা একটা খুবই স্ট্বাভাবিক ব্যাপার। শরীরের পরিবর্তনশীল হরমোন এ বিভ্রাট তৈরি করে। তুমি, এরকম হলে সব সময় চেষদ্বা করবে আত্দ্মবিশ্বাস ঠিক রাখতে। এ জন্য সব সময় একা একা থাকাটা একদমই বাদ দিতে হবে।
বাসায় থাকলে সবার সঙ্গে দিনটা ভাগ করে নাও। তারপরও বিরক্ত লাগলে প্রিয় সব গান শোনো, সিনেমা দেখো, বই পড়ো। দেখবে সুর আর কবিতার ছন্দে ছন্দে দুঃখগুলো কমে যাচ্ছে। এতেও যদি কাজ না হয় তবে তোমার কষদ্বের কথাগুলো প্রিয় কাউকে বল। দেখবে অনেক হালকা লাগবে।
আর সব সময় মন খরাপ লাগলে বেশিক্ষণ ঘরবন্দি থেক না। বাইরে গিয়ে একটু ঘোরাফেরা করো। বল্পব্দুদের সঙ্গে আড্ডা দাও। মানুষের সঙ্গে কথা বললে সবকিছুই সহজ হয়ে আসে। আর মন খারাপ যদি পড়ালেখা নিয়ে হয় তবে বলি, ভেঙে পড়ো না, চেষদ্বা করে যাও।
চেষদ্বা করে যদি একবার ভালো করতে পার তখন পেছনের সব ভুলে যেতে পারবে। আর তোমার কোনো বল্পব্দু যদি বিষণম্নতায় জড়ায় তবে তাকে সব সময় সঙ্গ দাও। তার সঙ্গে গল্কপ্প করো। অনেক অনেক স্ট্বপেম্নর কথা শোনাও। আর তারপর চলে যাও সেই স্ট্বপেম্নর জগতে, যেখানে সকাল-সল্পব্দ্যা কাটে শুধুই আলোর গল্কেপ্প।
:::লতিফুল হক-বিশিষ্ট মনরোগ চিকিৎসক:::
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।