আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এইক্ষণে আমার ভাবনা যাহা, এই খানে তার ছায়া ফেলিবার চাই

কখনো চাই নাই দূরে থাকি...তবু দূরগুলো বারে বারে আসে...

এই মুহুর্তে আওয়ামি লীগ, বিএনপি কিম্বা জামায়াত যা করতাছে সেইটা নিয়া শংকিত হওয়ার কি কিছু আছে? তারা কি এমন কিছু করতাছে যেইটা তাগো কাছ থেইকা অপ্রত্যাশিত ছিলো? আমার কাছে একদমই তা মনে হয় না। এই ব্লগেও এই রম বক্তব্য আসছে। আওয়ামি লীগের মারদাঙ্গা অবস্থান নিয়া অনেকেই কইছেন এবং মনে হয় অনেকে বিশ্বাসও করেন 5 বছর তাগো উপর দিয়া যেই স্টিম রোলার চলছে তার প্রতিক্রিয়া হিসাবে এইরম করাটা খুব বেশি অপ্রত্যাশিত না। আবার একই রম সিদ্ধান্ত নিয়া অন্য ব্যখ্যা আছে, আওয়ামি লীগের চরিত্রটাই এইরম, তারা আসলে নৈরাজ্যের রাজনীতি পছন্দ করে। কিন্তু যেইরম বিশ্লেষনেই যাই না কেন শেষ মেষ এইটা খুব অপ্রত্যাশিত লাগতাছেনা আমার।

গত 5 বছর আগেও এই দেশের ইসলামী রাষ্ট্রের ধ্বজা ধরতে জামায়াত ছিলো সবচেয়ে আগাইয়া। জনগোষ্ঠীর যেই অংশ ইসলামী রাষ্ট্র কায়েমের স্বপ্ন দেখে এখনো, তারা ছিলো জামায়াতে ইসলামীর সাথেই। তারেই বড় শক্তি হিসাবে মাইনা নিয়া একধরনের নির্ভরতা ছিলো। কিন্তু ক্ষমতায় যাওনের পর, বিশেষ কইরা বিএনপির মতোএকটা মডারেট মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের সাথে জোট কইরা ক্ষমতায় যাওনের পর, ঐ অংশ তার উপর থেইকা আস্থা প্রত্যাহার করতে শুরু করে। যার পথ ধইরা শক্তিশালী হইছে ইসলামের জঙ্গী বাদী ধারা।

হয়তো অনেক জায়গায় ঐ অংশ রাজনৈতিক ফায়দা লুটনের স্বার্থে জামায়াতের সহযোগিতাও পাইছে। সেই জামায়াত এখন সরকারী ক্ষমতার বাইরে যাওনের প্রক্রিয়ায়, আবার একটা নির্বাচনী ঝামেলার মুখোমুখি, এইরম অবস্থায় সে খুব স্বাভাবিক ভাবেই চাইবো আবার ঐ জনগোষ্ঠীর সমর্থন। আর তাই ইসলামী রাষ্ট্রের আপাতঃ বিরোধী পক্ষ, যার সাথে যুদ্ধে নামলে ব্যাপারটা দৃশ্যমান হইবো, সেই আওয়ামি লীগের সামনে আছে। এইটাই স্বাভাবিক, জামায়াতের জনপ্রিয় প্রতিপক্ষ হিসাবে আওয়ামি লীগ! আর বিএনপি আছে মাইনকা চিপায়। বহুদিন ধইরাই তার দল ভাঙনের শব্দ পাওন যাইতেছিলো।

এর আগে বিকল্প ধারা গঠিত হওনের টাইমেই শোনা যাইতেছিলো যে দলের অনেক সিনিয়র কর্মীরা দল ছাইড়া বড়রুদ্দোজা সাহেবের সাথে যাইবো। কিন্তু তখন যে কোন ভাবেই হোক বিএনপি এইটা ঠেকাইয়া রাখতে পারছিলো। এক্কেরে শেষ মুহুর্তে আইসা আর সক্ষম হয় নাই তারা। দলের একগাদা নেতাকর্মী চইলা গেছে। ব্ল্লগে অনেকে এইটারে কইছে সুখের মাছিগো ভাইগা যাওয়া।

কিন্তু তারা এই প্রক্রিয়ার কথাটা ভুইলা গেছিলো মনে হয়। কে জানে তারা এতো খেপছে ক্যান! নিজেরা হয়তো বেশি দুনর্ীতি করতে না পাইরা খেপছে কিম্বা বাচ্চা তারেকের ধমকে রাজনীতি করতে তারা অপমানিত হইছে, কিছু একটা হইবো। কিন্তু এইরম টাইমে প্রশাসনের হালকা অসমর্থনে বিএনপির একটু দিশেহারা হওয়াটাই স্বাভাবিক। কিছু জায়গাতে তারা পালটা প্রতিরোধে সচেষ্ট থাকবো এইটাই নিয়ম। কিন্তু দলত্যাগীরা যে তাগো মনোবল কিছুটা হইলেও ভাঙছে সেইটা পরে তাগো প্রতিক্রিয়ায় বুঝতে খুব অসুবিধা হয় না।

এতোসব কইয়া আমিইবা কি কইতে চাইলাম! আমার সেই পুরানা মার্ক্সিস্ট দৃষ্টিভঙ্গীরেই আবার মনে পরলো। পুঁজিবাদীরা একটা দেশে আসলে যেমনে সম্ভব তেমনে নিয়ন্ত্রণ করনের কৌশলে লিপ্ত হয়। নৈরাজ্যরে ব্যবহার কইরা তারা অতীতে বহুত ফায়দা লুটছে। এইবারো কতোক্ষণ তারা নৈরাজ্যে থাকে সেইটা ভাববার বিষয়। আধুনিক বিশ্বের যেই ক্যাওজ এর কথা পুঁজিবাদীরা কয়, এই নৈরাজ্য তারই সমার্থক করে তারা।

নৈরাজ্যে তারা সুস্থির থাকে, নৈরাজ্যে তারা দৃশ্যমান থাকে, নৈরাজ্যে তারা রোমাঞ্চে থাকে এইটাই সত্য! আমি নিজে মনে করি নৈরাজ্যের জাস্টিফিকেশন নির্ভর করে আসলে কোন শ্রেণীর স্বার্থে সেইটা হইতেছে। অনেকে হয়তো বিরক্ত হইবেন আবার ক্যান এইসব প্যাচাল! কিন্তু এই পোমো দুনিয়ায় দাঁড়াইয়াই কইতে চাই শ্রেণী স্বার্থই সকল অনর্থের মূল। এইটারে ভাঙতে হইলে যারা এই মুহূর্তে শিকার তাগো সামনে আইনা তারপরেই কেন্দ্রটারে ভাঙতে হইবো। এখন কেন্দ্র ভাঙনের চিন্তায় সব কিছু থেইকা দূরে সইরা থাকাটা আসলে খুব আনন্দ দায়ক হয় না। টেলিভিশনে বৈঠা দিয়া মানুষ মারার দৃশ্য খুব উপভোগ্য না, যখন জানি এইটাতে আমার আপনেরসাধারণের কোন লাভ নাই।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।