আমার সাথে যোগাযোগ করতে http://bn.jinnatulhasan.com/blog এ ভিজিট করুন।
প্রথমে যখন ক্যাডেট কলেজে ঢুঁকি তখন কেবলমাত্র রুই মাছ আমাদের খাবারের তালিকায় ছিল সপ্তাহে একদিন। মাঝে মাঝে তো মুখে দিয়ে বমি চলে আসতো, এমন না যে মাছগুলো পচা ছিল। আমাদেরকে বাজারের বড় বড় মাছগুলোই খাওয়ানো হতো কিন্তু রান্নার গুনে (!!!) ওগুলো মুখে দেওয়া যেত না।
অনেক পরে সর্ষে বাটা ইলিশ আমাদের খাদ্য তালিকায় যুক্ত করা হল।
সব রের্কড ভঙ্গ করে সব ক্যাডেট সেই ইলিশ মাছ খুবই পছন্দ করল। যেটা সাধারনত হয় না। বাবুর্চিরা যাই রাধুক ক্যাডেটরা সেটাই খেতে চায় না, এটা ছিল অনেকটা ট্রাডিশনের মতো।
যাইহোক, যেহেতু ইলিশে অনেক কাঁটা আর চামুচ দিয়ে কাঁটা বাছা কঠিন তাই স্যাররা ডিসিশন দিলেন যেদিন করে ইলিশ দেওয়া হবে সেইদিন কেবল মাত্র ক্যাডেটরা হাত দিয়ে ভাল খেতে পারবে।
ওয়াও ..... খুব খুশির সংবাদ।
কারন চামুচ দিয়ে খেতে গেলে কিছুটা হলেও সময় বেশি লাগে, তাই খাওয়ার পরিমানও কমে যায়।
ব্যাস ... খেল তো কেবল শুরু। ইলিশ দেওয়ার প্রথম দিন। জম্পেস রান্না হয়েছে, কত দিন পরে ইলিশ ... সবাই ধুমায় খাওয়া শুরু করল, অনেকটা জান প্রান ছেড়ে দিয়ে খাওয়া যাকে বলে। একটু পরেই বেয়ারারা আর ভাত আনতে ভেতরে যায় না।
বুঝতে আর বাকি রইল না যে ভাতে টান পড়েছে। আর খাবারে টান পড়লেই ক্যাডেট পাগল হয়ে যায়। যত না ক্ষুধা, তার চেয়ে বেশি চ্যাচামেচি .... এক শিয়াল কইছে ওই আরোও ভাত লাগতো হতো সবাই মিলে চিৎকার আমারও ভাত লাগবে। বেয়ারারা তো অস্থির একবার এই টেবিলে যায় তো অন্য টেবিলে যায়।
আলমাস ভাই ভাত আনেন, ওহিদুর ভাই ভাত লাগবে - একেক জনের একেক চিৎকার।
তুমুল আনন্দ ... নিয়ম ভাঙ্গার উচ্চছলতা।
ওইদিন কোনো রকমে স্যাররা রক্ষা পেয়েছিলেন। একই ঘটনা বার বার ঘটতে থাকলো।
অবশেষে স্যাররা ডিসিশন দিল হয় ইলিশ খাওয়া বন্ধ করতে হবে নতুনা চামুচ দিয়ে ভাত খাওয়া। ক্যাডেট তো ইলিশের ব্যাপারে অনড়, তাই চামুচ দিয়ে খাওয়া বন্ধ হল।
তারপর খুব কমই ভাতে টান পড়েছিল।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।