আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মিউনিখে এবছরের আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেষ্টিভ্যাল

সময়, কবিতা, ছোটগল্প, দেশ, দেশাচার

মিউনিখে এবছরের আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেষ্টিভ্যাল চলছে। প্রতিবারই ভারতীয় ও জার্মান ছবিই দেখে থাকি। তবে এবার দুই ইরানী পরিচালকের একজনের আফগানিস্তানে ও আরেকজনের ইরাকে করা ছবি দেখলাম। তবে প্রথম ছবিটি ভাল লেগেছে বেশী। ইরানী ছবি পরিচালিকা তালিবান পরবর্তী আফগানিস্তানে দুটো শিশুর জীবন নিয়ে ছবিটি তৈরী করেছেন।

ওরা দশ ও আট বছরের দুই ভাই বোন। বাবা তালিবানে যোগ দিয়েছিল বলে জেলে। মা বাবার জন্যে পাঁচ বছর অপেক্ষা করে বিয়ে করেছিল আবার। তালিবানোত্তর আফগান সমজেও তা বেশ্যাবৃত্তির সামিল। সেজন্যে তাকেও জেল খাটতে হচ্ছে।

বাচ্চা দুজনকে মায়ের কাছে যাবার অনুমতি দেয়া হচ্ছে না। জেলের একজন পাহাড়াদার জানালো চুরি করলে ওরা মায়ের সাথে জেলেই থাকতে পারবে। শিশুদুটি তাই করলো, বড়জন ধরা পড়লো ও তাকে জেলে পাঠানো হলো, তবে মায়ের সঙ্গে নয়। যে বাচ্চাদুটো মূল চরিত্রে অভিনয় করেছে, তারা আফগানী টোকাই। অদ্ভুত সুন্দর অভিনয় করেছে।

আরেকটি ছবির কাহিনী জুড়ে সাদ্দাম আর মার্কিনী ফ্রন্টের মাঝে ইরাকী সাধারণ শিয়া সমাজ। একদিকে সাদ্দামের অত্যাচার ও আরেকদিকে মার্কিনী বোমাবর্ষন। এর মাঝে এক বাগদাদ ইউনিভার্সিটির ছাত্রী ও তার ভালবাসা। বিয়ের দিনই তার ভালবাসার জনকে হত্যা করে সাদ্দামের বাথ পার্টির সদস্যরা। সে পাগল হয়ে মানসিক হাসপাতালে ভর্তি হয়।

ক'দিন পরেই সে হাসপাতালেই বোমা বর্ষন করে আমেরিকানরা। প্রতিটি ছবিতেই ছরিত্রগুলো চাওয়া পাওয়া অতি সাধারণ। আর এই সাধারন চাওয়া পাওয়াকে ধুলিস্যাত করছে ধর্মের কারনে সৃষ্ট সামাজিক পার্থক্য আর তাকে পুজি করে ছোবল মারা আন্তর্জাতিক রাজনীতির সাপ। এর প্রভাবে পিষ্ট মানুষের প্রতি মানুষের ভালবাসা। ধর্ম যদি মানবিকতার সাথে দুরত্ব রেখে চলে, তখন তা অত্যাচার হয়ে দাড়ায়।

রাজনীতি সে সুযোগ গ্রহন করে নিজের স্বার্থপ্রতিষ্ঠায় প্রয়াসী হবার সুযোগ পেয়ে যায়। তথাকথিত ধার্মিক বা ধর্মান্ধরা তাই করছে। আমার কাছে আবারো পরিস্কার হলো, ধর্ম ও রাষ্ট্রনীতির একত্রীকরনের জগাখচুড়ী একটা সাধারন সমাজের জন্যে কতোটা ক্ষতিকারক হতে পারে। এতে সংখালঘুদের যে অমানবিক অত্যাচার চালানো হয়, তার ভয়ংকর চরিত্র ধুলিস্যাত করে মানুয়ের আশা আকাঙ্খাকে। আমরা ধর্মকে আকড়ে ধরে আমাদের সহনশীলতা বর্জন করে অমানুষে পরিনত হই।

যে ধর্ম মানুষকে মানুষ না করে পশুতে পরিনত করে, তার প্রতি আমার কোন সন্মান নেই, তা যে ধর্মই হোক না কেন। আগে মানুষ হয়ে পরে ধর্মপালন করলে হয়তো ধর্মের ভালো দিকগুলোই আমাদের সামনে স্পষ্ট হতো বেশী। আমরা তা না করে অমানুষের মতো মানববিধ্বংসী কর্মে মত্ত।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।