i'm lost and alone and i'm fair and i'm free you am what you is and i are who i be what i'm lacking in strength i make up for in smarts you keep your stability i'll keep my heart
এই গল্পটা আমার বাংলায় লেখা দুই নাম্বার গল্প। সম্ভবত 1997/98 এর দিকে। পরবাস পত্রিকায় বের হয়েছিল। বেশ বড় গল্প তাই কয়েকটা ভাগে আপলোড করছি। একবারে এত টাইপ করতে পারি না।
-------------------
স্কুল ছুটির পর আবার মনের মধ্যে অভিমানটা ঘুরপাক খাচ্ছিল তিতলির। আজকে তো ওর কোন দোষ ছিল না, তবুও মা কেন সবার সামনে ওইভাবে বললো? থাক উচিৎ শিক্ষা হবে মার, যখন দেখবে একটুকরা টিফিনও সে ছুঁয়ে দেখেনি। মনে মনে ঠিক করে নিচ্ছিল কি ভাবে মার চোখের সামনে খাবার টেবিলের উপর ঠকাস করে টিফিন বাক্সটা রাখতে হবে, তারপর গটগট করে হেঁটে ঘরের ভেতর চলে যেতে হবে। যাতে সবাই বুঝতে পারে, কে কি ভাবলো আর কত দুঃখ পেল, তাতে ওর কিচ্ছু যায় আসে না।
বেশ কিছুদিন আগে, বাবা তখন অফিসে আর রণক স্কুলে, তিতলির একটু জ্বর জ্বর থাকায় মা তাকে স্কুলে যেতে দেয়নি।
দাদীর কাছে রেখে গিয়েছিল বাজারে যাবার সময়। তখনই ঘটনাটা ঘটেছিল।
ডিসেম্বারের শীত বেশ জাঁকিয়ে বসেছিল। একটা চাদর পেঁচিয়ে দাদীর সাথে সামনের বারান্দায় বসে কথা বলছিল তিতলি। এই বারান্দা থেকে পুরো ফুলার রোড চোখে পরে।
রাস্তার উল্টো দিকেই তিতলির ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল। আর স্কুলের পাশেই ঢাকা ইউনিভার্সিটি। দাদী মাঝেমাঝেই এখানে একা বসে থাকেন। তাঁর নাকি মানুষ দেখতে ভালো লাগে। মাঝে মাঝেই মনের দুঃখে বলেন ' এই রাস্তা দিয়া কত মানু যাইতেয়াছে, কোনদিন আমার ইকবালটারে দেখিনা'।
ইকবাল তিতলির ফুফাতো ভাই। ফুফুকে কখনো দেখেনি সে। বাবা মায়ের বিয়ের অনেক আগেই মারা গিয়েছেন তিনি। ইকবাল সম্পর্কেও তেমন কোন স্মৃতি তার নেই। দু'একবার দেখেছে, এইটুকুই শুধু।
বড়দের আলাপের ছাড়াছাড়া গল্প শুনে বুঝতে পেরেছে একটা মোটর গ্যারেজে চাকরী করতো ইকবাল। তারপর একদিন কি কি যেন চুরি করে পালিয়ে গেছে। এখনো কেউ তার কোন খবর জানে না। কেউ তেমন পাত্তাও দেয়না ব্যাপারটা। শুধু দাদীই মাঝে মাঝে তার কথা বলে।
মাঝে মাঝে দাদীর জন্য খুব মায়া হয় তিতলির, তখন বুড়ীর সাথে গল্প করতে বসে। রাজ্যের কত গল্প যে আছে দাদীর কাছে! মাঝে মাঝে দীর্ঘশ্বাস ফেলে দাদার কথা বলে, আদর করে ডাকে 'বুইড়্যা'।
হঠাৎ সামনের দরজায় কে জেন কড়া নাড়লো। ভিখিরীই হবে, কারণ মেহমানরা তো কলিং বেল বাজায়। তিতলি গিয়ে দরজা খুলে দেখে তার ধারণাই ঠিক।
এক মহিলা ভিক্ষা চাইতে এসেছে, গায়ে ছেঁড়া একটা অসম্ভব ময়লা শাড়ী আর কোলে ছোট একটা বাচ্চা, বারে বারে শীতে কেঁপে উঠছে। মহিলা চেষ্টা করছে তার গায়ের গরম দিয়ে বাচ্চাটাকে শীত থেকে রক্ষা করতে, কিন্তু পারছে না। তিতলির ওদের দেখে কষ্ট হলো। মহিলা বললো -
'আফা শীতে কষ্ট পাইতেছি, পুরান ধুরান জামা থাকলে দিবেন। '
'আপনি দাঁড়ান, আমি দেখছি।
'
তিতলি দৌঁড়ে মায়ের ঘরে গেল জামা খুঁজতে। বিছানার উপরে মায়ের একটা শাল পড়ে ছিল সে সেইটাই দিয়ে দিল ভিক্ষুককে। মহিলা খুশী হয়ে তাকে অনেক আদর করে চলে গেল।
তিতলিরও মন ভালো হয়ে গেল কারো জন্য কিছু করতে পেরেছে ভেবে। কিন্তু সে শুধূ খানিকক্ষনের ব্যাপার।
আবার দাদীর কাছে বারান্দায় ফিরে যেতেই দাদী লাগালো এক ধমক।
'তোর মায়ে তোরে পিডাইয়া আর রাখতো না, নয়া শালটা ফকিরনী বেডিরে দিয়া দিলি?'
দাদীর কথায় তেমন পাত্তা না দিয়ে তিতলি বললো 'মোটেই মা কিছু বলবেনা। মার এরকম শাল অনেক আছে। বরং যাকে আমি দিয়েছি উনার শালটা কাজে লাগবে। মা খুশীই হবে।
'
'হ! খুশী ট্যার পাইবি। আসুক তোর বাপে আ্ইজকা। '
(চলবে
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।