আমি বলছি যাব যাব, ঘর বলছে না; অবাধ্য সেই দুয়ার আমার, আটকে রাখে পা...
বৃষ্টি পড়ছে। নুপুরের শব্দের মতন। কলেজ পালিয়ে বেশ ভাবের মধ্যে আছি। গুড়ি গুড়ি রাশি রাশি বৃষ্টি কনা বাতাসে। এ সময়ে দুহাত ছড়িয়ে হাঁটার মজাই আলাদা।
চোখে মুখে যখন গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি এসে পড়ে তখন কিযে শিহরন উঠে মনে...। আচ্ছা স্বর্গে কি বৃষ্টি হয়? হবার কথা না; স্বর্গে যারা যাবে তারা হচ্ছে শরীর ঢাকা মহিলা আর দাঁড়িরাখা বুড্ডারা। তারা কেউই বৃষ্টি তেমন একটা পছন্দ করে না।
শহরে বৃষ্টি হলে অনেক সুবিধা পাওয়া যায়। যেমন রাস্তা ঘাট ফাঁকা থাকে।
রাস্তায় ভাঙ্গারি বাসগুলোর ভিড় কম থাকে। আরও কিছু সুবিধা থাকে, যেমন এই সময়টায় বেশ কয়েকটি বিরল দৃশ্য চোখে পড়ে। প্রায়ই প্রতিটি এলাকায়ই টোকাইরা দল বেঁধে গোছল করে। ওদের বৃষ্টিভেজাগুলো এত মধুর হয়...। কত সুন্দর করেইনা ওরা হাসতে পারে, উল্লাস করতে পারে।
আহা... মনের ভেতর সংশয় না রেখে মানুষগুলো যদি ওভাবে হাসতে জানতো...।
একটা বয়স থাকে মজাগুলোকে মজ্জায় মজ্জায় উপভোগ করার। আমি সে সময়ের শেষ প্রান্তে। কিছুদিন পর যদি এমনটা করি, তখন কেউ বলবে ব্যাটা মর্জিনার কারনে পাগল অইয়্যা গেছে। কেউ বলবে ব্যাটার মাথায় বুদ্ধিশুদ্ধি নাই।
খায়া-দায়া কাজ কাম নাই... এ বয়সে কেউ এমন ভিমরুতি করে? তাই এখন বৃষ্টিতে ভিজতে হলে একটা কারন সবারই চাই-ই চাই। আমার লোক দেখানো কারনে হচ্ছে... কলেজ থেকে ফিরছি; পিঠে ব্যাগ। ছাতা নেই। তাই ভিজে ভিজে আসতে হচ্ছে। এমনই...।
এলাকায় একটা ফোন ফ্যাক্সের দোকান আছে। সে দোকানের মালিক ছেলেটি প্রতিদিনই আমাকে দেখে বলবে... কি ভাই, আজকেও ছাতা নিতে ভুলে গেছেন? আমি উত্তর দেইনা; মুছকি হাসি।
এই গুড়িগুড়ি, আধভেজা বৃষ্টিতে ভেজার মজাই আলাদা। সারাটা শরীর জুড়ে একটা বৃষ্টি বৃষ্টি ঘ্রাণ ছড়িয়ে থাকে। বাকি দিনটায় মনটা ভরে থাকে অচেনা ভালোলাগায়।
নিজের অনুভূতির পৃথিবীটাকে অনেক পোক্ত, অনেক ভরাট মনে হয়। সারাজীবন মানুষ পাগল থাকে না। আমার এই পাগলামীগুলোও কিছুদিন পর যান্ত্রিক হয়ে যাবে জানি, তারপরও যে কিছুটা সুখস্মৃতি, কিছুটা পাগলামী রেখে যাচ্ছি... তা কজনেই বা রাখতে জানে?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।