পচা কথা বলি। আবালেরা অফ যাও।
স্বর্গে মহা ক্যাচাল লাগিয়া গিয়াছে। পালের গোদা স্বর্গদূতগণের মধ্যে কাজকর্মে ফাঁকি দিয়া দুই নম্বরি কাজে মন দেয়ার কারণে স্বর্গের বড়বড় কাজ সব ভজঘট লাগিবার যোগাড়।
গুজরিলের দায়িত্ব ছিলো প্রাণসংহারের।
সে বড়সড় একখানি রশ্মিনির্মিত দাও লইয়া ঘুরিয়া বেড়ায়, কারো আয়ু ফুরাইলে সে গিয়া দাও দিয়া কোপাইয়া সংশ্লিষ্ট হতভাগ্যের জান কাটিয়া লইয়া আসে। সম্প্রতি তাহার কী জানি হইয়াছে, সে আনমনা হইয়া থাকে, মাঝে মাঝে বিনা কারণেই এর ওর জান স্তুপাকারে কাটিয়া লইয়া আসে, আবার কারো কারো আয়ু ফুরাইয়া লাট হওয়া সত্ত্বেও তাহার ধারেকাছে যায় না। অনেকে ধারণা করিতেছে এর পিছনে দুনর্ীতি আছে। গুজরিলের সয়সম্পত্তির একটা হিসাব লওয়া দরকার বলিয়া কোন কোন স্বর্গদূত মত দিয়াছে।
গিবরিল হতভাগাটার কাজ হরকরাগিরি করা।
এর খবর ওর কাছে লইয়া যাওয়া, মাঝে মাঝে প্রয়োজন মোতাবেক এর ওর কান ভারি করা। কিন্তু গিবরিল পেশাদারি সততার অভাব দেখাইয়াছে, সে ভুল লোকের কাছে বার্তা লইয়া গিয়া গন্ডগোল বাধাইয়াছে বলিয়া পাকা খবর মিলিয়াছে।
দুখায়িলের হাতে ছিলো আবহাওয়া দপ্তর, মর্ত্যে অবস্থা বুঝিয়া আবহাওয়া পালটানো। কিন্তু দুখায়িল নাকি মাঝে মাঝে গঞ্জিকা টানিয়া নেশা করে, গত ক্রিটাশিয়াস টারশিয়ারিতে নাকি সে মস্ত একখানা উল্কা মারিয়া মর্ত্যের যাবতীয় ডাইনোসরের গুষ্টি লোপাট করিয়া ছাড়িয়াছে। দুখায়িল নাকি এর আগেও বরফযুগ লইয়া হোলিখেলা করিয়াছে, ঈশ্বর আর পাঁচটা কাজে ব্যস্ত ছিলেন বলিয়া খেয়াল করেন নাই।
মাশরাফিলটা আরেক বেয়াড়া, তার কাজ হচ্ছে বিগ ক্রাঞ্চের সময়ে একখানা বেণু বাজানো। এর আগে তার কী বিকার হইয়াছিলো কে জানে, এক বিকালে একটি কদম্বগাছের তলে বসিয়া সে মনের সুখে বেণুতে রাগ পিলুতে আলাপ করিয়া বসিয়াছিলো। ব্যাটা ঢোল বাজা, সারেঙ্গি বাজা, দোতরা বাজা, বেণু বাজাইতে গেলি কী বুদ্ধিতে? মহাপ্রলয়ের উদ্যোগ প্রায় নেয়া হইয়া গিয়াছিলো, একেবারে শেষ মূহুর্তে গিয়া মিশন অ্যাবর্ট করা হইয়াছে।
ঈশ্বর আদমকে ডাকিয়া কহিলেন, "আদম, তোমার কী মনে হয়, উহাদের সমস্যা কোথায়?"
আদম মাথা চুলকাইয়া কহিলো, "জি্ব, বলিতে পারি না। মনে হয় গরমে মাথা আউলা হইয়াছে।
চুল কামাইয়া দিলে সারিতে পারে। "
ঈশ্বর বিরক্ত হইয়া কহিলেন, "আদম, কী বলো ছাগলের মতো? দুইটি ভূজ দিয়াছি, তারপরও কথা বলো ত্রিভূজের মতো?"
আদম লজ্জা পাইয়া অধোবদনে দাঁড়াইয়া থাকে।
ঈশ্বর চিন্তামগ্ন হইয়া পড়েন।
হঠাৎ আদম বলে, "ইউরেকা!"
ঈশ্বর বিরক্ত হইয়া বলেন, "হাউকাউ করিও না। উলঙ্গ মানুষের মুখে ইউরেকা শুনিলে বিরক্ত লাগে।
"
আদম কহিলো, "ঈশ্বর, আপনি উহাদের দপ্তর পালটাইয়া দিন। দুখায়িলকে বেণুবাজানো দপ্তরে পাঠাইয়া মাশরাফিলকে আবহাওয়া দপ্তরে লইয়া আসেন। "
ঈশ্বর তাকাইয়া থাকেন আদমের পানে।
আদম সোৎসাহে বলিতে থাকে, "কিংবা গুজরিলের দাওখানা গিবরিলকে দিয়া গুজরিলকে বাতর্াদপ্তরের খতভর্তি ঝোলাখানা গছাইয়া দিন। "
ঈশ্বর বজ্রনিঘের্াষে বলেন, "আদম, তোমার কী মাথায় মস্তিষ্ক বলিয়া কোন পদার্থ নাই? বেয়াকুব! এই গর্দভের দলকে শায়েস্তা না করিয়া শুধু দপ্তর বদলাইয়া দিলেই কাজ চলিবে? দূর হও মূর্খ!"
আদম মনক্ষুন্ন হইয়া নিজ কুটির পানে রওনা দেয়।
ঈশ্বর যেন কেমন, সোজা সমাধান পছন্দ করেন না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।