শ্রমিক অসন্তোষে ফুঁসে উঠেছে গার্মেন্ট শিল্প। আর এ অসন্তোষের আগুন ছড়িয়ে পড়েছে রাজধানী ঢাকা, গাজীপুর, টঙ্গী, সাভার ও আশুলিয়া গার্মেন্ট কারখানাগুলোয়। নূন্যতম মজুরি আট হাজার টাকা এবং তাদের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের দাবিতে শ্রমিকরা গতকাল ব্যাপক বিক্ষোভ করেন। এ সময় পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। গাজীপুরের ভোগড়ায় একটি পোশাক কারখানায় আনসার ক্যাম্পে হামলা, অস্ত্র লুটের পর তাতে আগুন লাগিয়ে দেন।
বিভিন্ন এলাকা পরিণত হয় রণক্ষেত্রে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ লাঠিচার্জ ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। এসব ঘটনায় পুলিশসহ আহত হয়েছেন অন্তত ৩০০ জন।
নিজস্ব প্রতিবেদক ও জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর- ঢাকা : রাজধানীর তেজগাঁও, বনানী ও বাড্ডা এলাকায় গতকাল গার্মেন্ট শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বেতন বৃদ্ধির দাবিতে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা এ সময় গাড়িতে অগ্নিসংযোগ-ভাঙচুরসহ বিভিন্ন গার্মেন্ট কারখানায় ভাঙচুর চালায়।
এসব ঘটনায় রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে।
নাবিস্কো : সকাল সাড়ে ৮টার দিকে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের নাবিস্কো এলাকায় বিভিন্ন গার্মেন্টের পাঁচ শতাধিক শ্রমিক রাস্তায় নেমে আসেন। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করেন। ফলে গুলশান-তেজগাঁও লিংক রোডে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এ সময় নাবিস্কো মোড়ে তোফাজ গার্মেন্টের সামনে দুটি মোটরসাইকেল এবং একই এলাকার আল আমিন গার্মেন্টের সামনে একটি মাইক্রোবাসে আগুন দেন শ্রমিকরা। ইট-পাথর ছুড়ে ভাঙচুর করেন বেশ কয়েকটি যানবাহন। দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়লে সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। প্রথমে শ্রমিকদের বোঝানোর চেষ্টা করে পুলিশ। কিন্তু পুলিশের কথায় কর্ণপাত না করে বিক্ষোভ অব্যাহত রাখতে চান তারা।
একপর্যায়ে লাঠিচার্জ, রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল ছুড়ে বেলা ১১টার দিকে সড়ক থেকে শ্রমিকদের সরিয়ে দেয় পুলিশ। এতে কমপক্ষে ১৫ জন শ্রমিক এবং তিনজন পুলিশ আহত হন। ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের (ডিসি) উপকমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, সকালে হঠাৎ করেই শ্রমিকরা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় পুলিশ তাদের সড়ক ছেড়ে গার্মেন্টে ফিরে কাজে যোগ দিতে অনুরোধ করে। কিন্তু শ্রমিকরা গাড়ি ভাঙচুর করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ লাঠিচার্জ করে।
বনানী : সকাল থেকেই শ্রমিক কাজ ফেলে রাস্তায় নেমে আসে। বেলা ১১টার দিকে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা রাজধানীর বনানীর চেয়ারম্যানবাড়ি-সংলগ্ন বেশ কয়েকটি গার্মেন্ট কারখানার কয়েকশ শ্রমিক মিছিল বের করে রাস্তা অবরোধ করে। পুলিশের গুলশান বিভাগের ডিসি খন্দকার লুৎফুল কবীর জানান, সকালে হঠাৎই গার্মেন্ট শ্রমিকরা রাস্তা অবরোধ করে। সরিয়ে দিতে গেলে গাড়ি ভাঙচুর শুরু করে তারা। একপর্যায়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাথর ছোড়ে।
তবে এক ঘণ্টার মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। বাড্ডা : বিকেল ৪টার পর মিছিল নিয়ে রাস্তা অবরোধ করে রাজধানীর রামপুরা ও বাড্ডা এলাকার গার্মেন্ট শ্রমিকরা। একপর্যায়ে মধ্য বাড্ডায় জড়ো হয় তারা। এতে আশপাশের সব সড়কে যান চলাচল থমকে যায়। জনদুর্ভোগ বাড়তে থাকে যানজটে।
শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে পুলিশ। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, গার্মেন্ট শ্রমিক লাটিসোঁটা নিয়ে বেতন বাড়ানোর দাবিতে স্লোগান দেয়। এ তারা কয়েকটি গাড়িতে ইট মেরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে। তবে পুলিশের বাধায় দ্রুতই স্বাভাবিক হয় পরিস্থিতি। বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল হোসেন বলেন, গার্মেন্ট শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে আধঘণ্টার মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
শ্রমিকরা গাড়ি ভাঙচুরের চেষ্টা চালালে বাধা দেওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেনি।
গাজীপুর : মহানগরীর বাইপাস সড়কের ভোগড়া এলাকায় একটি আনসার ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে রাইফেল লুট করে তাতে আগুন দিয়েছে গার্মেন্ট শ্রমিকরা। এ সময় তারা কলোসাস অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানার ভেতর নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আনসারদের হামলা চালায় ও মারধর করে। আনসারদের ব্যবহৃত রাইফেল কেড়ে নিয়ে তারা ভাঙচুর চালায় ও সেগুলোতে আগুন ধরিয়ে করে।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের হামলায় পাঁচজন আনসার সদস্য আহত হয়েছেন। আহত আনসার সদস্য আলম মৃধা, আবু রায়হান, প্লাটুন কমান্ডার আপন মোল্লা (৩২), শেখর কুমার (২৭) ও শাহ আলমকে (২৫) স্থানীয় একটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। আনসারের সহকারী ক্যাম্প ইনচার্জ জামিল উদ্দিন বলেন, আন্দোলনরতরা সকালে কলোসাস অ্যাপারেলস লিমিটেডের বাইরে এসে শ্রমিকদের বলে বিক্ষোভে যোগ দিতে। এতে সাড়া না পেয়ে বিক্ষুব্ধরা ওই কারখানায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। একপর্যায়ে কারখানার মূল ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকতে থাকলে আনসাররা বাধা দেয়।
এ সময় শ্রমিকরা আনসারদের মারধর শুরু করে। আত্দরক্ষার্থে তারা কারখানার ভেতর ক্যাম্পে ঢুকে পড়লে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা সেখানকার আসবাবপত্রে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। এ সময় তারা চারটি রাইফেল ও ১৬০ রাউন্ড গুলি ছিনিয়ে নেয়। শ্রমিকরা এরপর কলোসাল গার্মেন্টের সামনের ঢাকা বাইপাস সড়কের ওপর ওই রাইফেলগুলো ভাংচুর করে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে বিভিন্ন জায়গা থেকে খোয়া যাওয়া ১৩৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ ঘটনাস্থলে আসার আগেই শ্রমিকরা এলাকা ত্যাগ করে। এদিকে গতকাল তৃতীয় দিনের মতো ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে গাজীপুরের শ্রমিকরা। এ সময় তারা বেশ কিছু যানবাহন ভাঙচুর করে। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা একটি কারখানার ওয়েস্টেজ গোডাউনে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে পুলিশসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হন।
সহিংসতা ও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ভোগড়া, চান্দনা, কোনাবাড়ী এলাকার অধিকাংশ পোশাক কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়। পুলিশ, শ্রমিক ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গাজীপুর মহানগরীর বোর্ডবাজার, বড়বাড়ী, ভোগড়া, সাইনবোর্ড, তেলিপাড়াসহ আশপাশের বিভিন্ন গার্মেন্টের শ্রমিকরা সকাল পৌনে ৮টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে নেমে আসে এবং মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে। পুলিশ মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলেও কাজ বন্ধ রেখে বিক্ষোভে যোগ দিতে থাকে ঝাঁকে ঝাঁকে শ্রমিক। তারা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের নেমে আসে এবং বেশ কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর করে। এ সময় পুলিশ-শ্রমিক ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
পরে টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পুলিশ। জবাবে শ্রমিকরাও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। সকাল পৌনে ১০টার দিকে চান্দনা চৌরাস্তা এবং বেলা ১১টার দিকে নাওজোড় এলাকায় মহাসড়ক থেকে শ্রমিকদের সরিয়ে দিতে শিল্পপুলিশ ও জেলা পুলিশ অ্যাকশনে গেলে শ্রমিকদের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের নাওজোড়ের দিগন্ত সোয়েটার কারখানায় হামলা ও ভাঙচুর চালায়। এ সময় তারা নিরাপত্তারক্ষীদের কক্ষ ভাঙচুর ও তছনছ করে।
কারখানার মূল ফটকের একাংশ ভেঙে নিয়ে মহাসড়কে ঝুট ফেলে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। পরে কারখানার ভেতরে ঢুকে ওয়েস্টেজ গোডাউনেও তারা আগুন দেয়। অন্যদিকে জয়দেবপুর-ঢাকা মহাসড়কের তিন সড়ক এলাকায় একই দাবিতে বিক্ষোভ করে শ্রমিকরা। এ সময় রওশন সড়ক এলাকায় সফি প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রিজে ভাঙচুর চালায় ও আসবাবপত্রে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে পুলিশ।
বেলা দেড়টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের রাজেন্দ পুর এলাকায় এনএজেড কারখানার শ্রমিকরাও বিক্ষোভ করে।
টঙ্গী : আহত এক শ্রমিকের মৃত্যুা গুজবে গতকাল সকাল থেকে অর্ধশতাধিক কারখানায় হামলা ও ভাঙচুর চালায় গার্মেন্ট শ্রমিকরা। এ সময় বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবি পুনব্যক্ত করে তারা। টঙ্গী বাজার এলাকার সেনাকল্যাণ ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবরোধ করে শ্রমিকরা। পুলিশের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষে এ সময় অন্তত ৫০ জন আহত হয়।
একপর্যায়ে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় টঙ্গী। এ ঘটনায় শতাধিক কারখানায় ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। পুলিশ ও শ্রমিক সূত্রে জানা যায়, সকাল ৮টায় টঙ্গী বাজার এলাকার এ্যাবা গ্রুপ অব কোম্পানির একজন শ্রমিকের মৃত্যুর গুজবে কারখানার অন্য শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করে। এতে ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। শ্রমিক-অসন্তোষের খবর টঙ্গীর সাতাইশ, ভাদাম, পাগাড়, বিসিক, টিঅ্যান্ডটি ও গোপালপুর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।
সাতাইশের কোলোসাস, ভিয়েলাটেঙ্ টঙ্গী শিল্পাঞ্চলের পিনাকি অ্যাপারেলস, মা ফ্যাশনস, নর্দান গ্রুপের তশিবা ইন্ডাস্ট্রিজ ও এ্যাবা গ্রুপসহ অর্ধশতাধিক কারখানায় ভাঙচুর চালায় শ্রমিকরা। এ সময় বেশ কয়েকটি যানবাহনও ভাঙচুর করে তারা। শ্রমিক-পুলিশ দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিৰেপের ঘটনা ঘটে। ১০টায় পুলিশ লাঠিচার্জ করে কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে মাই টিভির জেলা প্রতিনিধি মাহিন উদ্দিন রিপন, পুলিশের পাঁচজন সদস্য, পথচারীসহ অন্তত ৫০জন আহত হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
সাভার : পৌর এলাকার গার্মেন্ট শ্রমিকরা নূ্যনতম মজুরি ৮ হাজার টাকা করার দাবিতে বিক্ষোভ ও মহাসড়ক অবরোধ করেছে। পুলিশ ও শ্রমিক সূত্রে জানা যায়, পৌর এলাকার কর্ণপাড়ার উলাইলে আনলিমা টেঙ্টাইল কারখানার শ্রমিকরা সকালে কাজে এসেই বিক্ষোভ শুরু করে। পরে তারা পাশের এইস আর টেঙ্টাইল কারখানায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে সেখানকার শ্রমিকদের রাস্তায় বের করে নিয়ে আসে। এদিকে শ্রমিকদের বের করে আনতে আল-মুসলিম গ্রুপের পোশাক কারখানায় হামলা চালালে শ্রমিকরা কারখানা থেকে বের হয়ে হামলাকারীদের ধাওয়া করলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এ সময় কয়েক শ শ্রমিক গেন্ডায় সাভার উপজেলা চত্বরের পেছনের জে কে গার্মেন্টসে হামলা চালায়। হামলার ঘটনায় গেন্ডা-উলাইল এলাকার ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের আশপাশে অবস্থিত সব কারখানায় শ্রমিকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পুরো এলাকা শ্রমিকদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। মহাসড়ক অবরোধের খরব শুনে সাভার মডেল থানা পুলিশ ও শিল্পপুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করে। শ্রমিকরাও এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে মুহূর্তেই এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ এ সময় বেশ কয়েক রাউন্ড টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ-শ্রমিকসহ কমপক্ষে ১০০ জন আহত হয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র নিশ্চিত করেছে। এদিকে অবরোধের পলে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। মহাসড়কের উভয় পাশে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজট। সংঘর্ষের ঘটনায় সাভারের অধিকাংশ গার্মেন্টে ছুটি ঘোষণা করা হয়।
এদিকে আশুলিয়ার জিরানী বাজার এলাকার নবীনগর-কালিয়াকৈর মহাসড়ক এবং সাভারের বিরুলিয়া সড়ক অবরোধ করে অগি্নসংযোগ করে শ্রমিকরা। এখানে শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনায় শতাধিক ব্যক্তি আহত হন। জিরানী এলাকার মাছিহাতা, নর্দান, ডরিন, সাথী ফ্যাশনসহ বেশ কয়েকটি কারখানায় ভাঙচুরের চেষ্টা চালায় শ্রমিকরা। একই দাবিতে হা-মীম, কুশিয়ারা, লিবার্টি, তুরাগ, কিং বালি, মৌসুমি গার্মেন্টস, সূচী, অনুপম, নর্দান, রেডিয়েল, আছিয়া, তুং হাই, আইরিশ, সামাদ গ্রুপ, স্প্রিং সোয়েটারসহ প্রায় অর্ধশত কারখানায় প্রবেশের পরই কাজে যোগ না দিয়ে কর্মবিরতি শুরু করে শ্রমিকরা। দুপুরে শ্রমিকরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিক্ষোভসহ নবীনগর-কালিয়াকৈর মহাসড়ক অবরোধ করে।
এ সময় তারা তিনটি যাত্রীবাহী বাস ও একটি ট্রাকসহ বেশ কয়েকটি যানবাহনে ভাঙচুর চালায়। শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এসব ঘটনায় পথচারীসহ কমপক্ষে ৫০ জন আহত হয়েছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।