মুনিয়া , তোমাকে না বলেছি সবসময় আগের ফাইলগুলো আগে শেষ করে তারপরই শুধু নতুন গুলোতে হাত দেবে? তুমি নতুনগুলো আগে ধরতে গেলে কেন? পিছনের গুলো না ক্লিয়ার করে কাউকে কখনোও সমানে যেতে দেখেছো? আমাকে বলো এইরকম উল্টাপাল্টা কাজ করার মানেটা কি? সিড়ি দিয়ে উপরে উঠতে হলেও তো নিচের স্টেপ গুলোতে পা রাখা লাগে। সব কাজে একটা ধারা , একটা নিয়ম মেনে চলা লাগে। এই যে আদনান গ্রপের অ্যাকাউন্টগুলো সব আপটুডেট করা লাগছে, এখন পুরানোগুলোরই তো ঠিক নেই, নতুন গুলোর হিসাব মিলাবে কোথা থেকে?
তুমি কি মনে করে নতুন গুলো আগে সারতে গেলে? ভেবেছো এগুলো সেরে রাখলেই পুরানোগুলোর জমে ওঠা স্তুপ কারোর চোখে পড়বে না আর তুমিও খুব ক্রেডিট নেবে? ইউ আর রং, ভেরি ভেরি রং। এই জন্যেই আমি বাঙালিদের কাজে রাখতে চাই না, খালি ফাঁকিবাজের দল, ভাবে দেশের মত ফাঁকিবাজি করে এখানেও পার পাওয়া যায়.........একনাগাড়ে কথা বলে শেষ করেন মুনিয়ায় বস শামসুজ্ঝামান।
ঘটনাক্রমে বা "দূর্ঘটনাক্রমে" তিনিও বঙ্গসন্তানই বটে কিন্তু সাহেবী আদবকেতা মায় ভাষাটা পর্যন্ত চোস্ত ইংরেজীতে বলে স্বদেশবাসীর কাছেও নিজেকে "কনভার্টেড" ইংরেজ হিসেবে প্রতিপন্ন করার চেষ্টটা তাঁর সদা সর্বদা থাকে।
পিত্তি জ্বলে যায় মুনিয়ার, বিশেষ করে শেষের কথাটা শুনে, কাক ময়ূর পুচ্ছে সাজিয়ে নিজেকে সত্যি সত্যি ময়ূরই ভাবছে, তাও আবার কথায় কাথায় অফিসভর্তি বিদেশী লোকজনের সামনেই ব্লাডি বাঙালি , স্টুপিড বাঙালি বলে গাল দিতেও তাঁর বাধে না। এই মূহুর্তে অবশ্যি স্বজাত্যবোধের জন্য রাগের চেয়েও বেশী মুনিয়ার মাঝে ভর করে এক অসহায় ক্রোধ। কেনই বা না করবে?
একেবার নতুন নতুন সে এই চাকরিতে ঢুকেছে, সব কাজ ধাজ ভালো করে বুঝে ওঠার জন্য মোটেও যথেষ্ট সময় নয়, কয়েয়টা হেভিওয়েট মালদার ক্লায়েন্টের ফাইল সে আগে শেষ করেছে, তাও বস শামসুজ্জামানের বার বার তাগিদের মুখে সে এই সব সাম্প্রতিক ফাইলগুলো নিয়ে এক রকম দৌড়ের উপর ছিল, উনি ও নিজেই বলেছেন আপাতত এই আর্জেন্ট ফাইলগুলো আগে কমপ্লিট করতে, পরে ধীরে সুস্থে আগেরগুলো ধরলেই হবে। এখন আবার অন্য আরেকজন ক্লায়েন্টের কারনে পিছনের গুলো চাই, তাই তার জবাবদিহি তলব , কেন ওগুলো সব সারা হয়ে ওঠে নি। যেন সে জানত অর্ধশত কোম্পানির জমে ওঠা পুরনো ফাইলের বোঝার মাঝে আদনান গ্রপের ফাইলগুলো হঠাৎ আর্জেন্টলী তাদের দরকার হবে।
যেন তার আসার আগে যে লোকটি এইসব কাজ করতো- সে যে বহুদিন ধরে ফাইলকে ফাইল সময়মত না কাজ শেষে জমিয়েছে ওটা হঠাৎ ম্যাজিকের মত অল্প কয়েকদিনের মাঝে শেষ না করবার দায়টার সর্বসত্ব স্রেফ শুধু মুনিয়ারই। এরকম একটা বস , যে এই বলে ডানে যাও, পরমুহুর্তে বলে বামে যেতে, তার পর আবার ধমকে বলে নাক বরাবর সোজা যাচ্ছ না কেন - তাকে নিয়ে কি যে বিপদ!শুধু তো এই ব্যাপারে না অন্য ক্ষেত্রেও তার আচরণ একই রকম। প্রতি দুই মিনিট পর পর মত বদলায়।
মনে মনে সে জবাব চালাচালি করে, স্যার আপনি নিজেই বলেছিলেন পুরানো গুলো এখনা না ধরলেও চলবে, আগে দরকারী নতুন গুলো আমি যেন অতি অবশ্য শেষ করে দেই । এখন আবার পুরনো গুলো কেন শেষ হয়নি বলে ধমকাচ্ছেন? তাও আপনার অনেকদিনের পুরনো লোক যে বসে বসে কাজ জমিয়েছে তার দোষও কি আমার নাকি? আমি তো রোবট না সুইচ টিপবেন আর টেবিল সাফ হয়ে যাবে।
আর বাই দ্য ওয়ে স্যার সে কিন্তু ফাঁকিবাজ বাঙালিও না, নেপালি ছিল।
কথাগুলো মনে মনে জমা হয়ে হয়ে উঠতে থাকে , মুখের অর্গল খুলে তা বের করে আনা সম্ভব নয় একদমই।
এক ইস্যুতে বসের তোপ না শেষ হতেই নতুন আরেক ইস্যু উঠে আসে। স্ট্রীট কিং -য়ের লেজারগুলো দেখতে দেখতে ভুরু কুঁচকে মুনিয়ার দিকে তাকান শামসুজ্ঝামান। এই যে এইভাবে করতে কে বলেছে তোমাকে? সবগুলো সংখ্যা সামআপ করে দিব্যি যে একবারে বসিয়ে দিয়েছো।
এখন কোথা থেকে কত কত অ্যামাউন্ট আসলো সেটা কিভাবে বুঝবো?লেখারও তো কোন ডিসিপ্লিন নেই। এই কলামগুলো এদিকে রেখেছো কেন? কোন একটা জিনিস ঠিকভাবে খাতায় এরেঞ্জ করারও বুদ্ধিটা দেখছি তোমার মাথায় নেই। একেবারে আপাদমস্তক ইন্টেলিজেন্স বিহীন মানুষ দেখি তুমি। নিজে না পারবে গ্রেগকে একটু জিজ্ঞেস করলেও তো বলে দেয়।
বিড়বিড় করে বলে মুনিয়া , আপনার পেয়ারের সুদক্ষ বান্দা গ্রেগই তো আমাকে এভাবে করতে বলেছে।
নিজের বুদ্ধি খাটিয়ে তার কথার বাইরে গিয়ে অন্যরকম করা কি আমার পক্ষে সম্ভব নাকি?
মুখে মিনমিন করে প্রায় শোনাই যায় এমনভাবে বলে ,কিন্তু স্যার গ্রেগই তো বললো এভাবে এভাবে করতে। ভুরু আরো কুঁচকে বিরক্ত শামসুজ্জামান বলেন, অসম্ভব ব্যাপার , ও তো নিজে এভাবে কখনো করে না, তো তোমাকে করতে বলবে কেন?কি বলেছে আর তুমি কি উল্টা পাল্টা শুনেছো , এখন সব গুবলেট করে এনেছো , যাও আবার ফ্রেস করে করে নিয়ে আসো। খামখা যত্ত সব ফালতু তর্ক ছাড়া আর তোমাকে দিয়ে কিছু হবে না।
মুনিয়া আর কি বলে, চুপ হয়ে থাকার মাঝেই ওর কপালে কিছু কম ঝাড়ি খাওয়া লেখা আছে। এরকম ঘটনা এই নতুন চাকরীর দু'মাসে ওর তো খুব কম হয়নি, কোন এক বিচিত্র কারনে গ্রেগ নির্ঘাত তাকে দিয়ে ইচ্ছা করে উল্টাপাল্টা ডিরেকশন দিয়ে বিপদে ফেলে।
হ্যাঁ, আগে না বুঝলেও এখন সে নিশ্চিত। কিন্তু এইরকম করার কারনটা কি? জেলাসি থাকলে তো কথা ছিল ,কিন্তু এই শব্দটা অন্তত ওদের দুই জনের প্রসঙ্গে একেবারেই যায় না। মানুষের ঈর্ষা বা একে অপরকে দমিয়া রাখার যে প্রবনতা , এই জায়গায় দশ বছর কাজের অভিজ্ঞতায় এগিয়ে থাকা গ্রেগের সাথে সদ্য জয়েন করা মুনিয়ার এরকম কিছুর কথা কল্পনা করাই হাস্যকর অ্যাবসার্ড একটা চিন্তা। কিন্তু এখানেই শেষ নয়, সূর্যের চেয়ে বালির তাপ বেশী, ওর বস শামসুজ্জামানের চেয়ে গ্রেগের উত্তাপ -জ্বালা বেশী। কয়েকবার তার করা কাজের ক্রেডিট সে নিজে চুরি করে নিয়েছে।
হ্যাঁ, মুনিয়া এই চুরি করা শব্দটাই ব্যবহার করবে, মুখে কিছু সে বলতে পারে না-এই খানেই বোধ হয় তার আসল দুর্বলতা ও সমস্যা। এই একটাই কারন যে কারনে শুধু এখানেই নয় সব জায়গাতেই, আগের চাকরীগুলোতেও সে কেবল সঙ্কুচিত, অবদমিতভাবে থেকে গেছে। তাকে দেখে মানুষ এই দ্বিধার ভাবটা , প্রকাশের অভাবটা স্পষ্ট টের পায় , তাই এমন এমন ভাবে ব্যবহার করে যা অন্য কারোর সাথে করতে গেলে হয়ত দশবার ভাবতো।
আর আর সবার উপর থেকে চলে গিয়ে এখন মুনিয়ার রাগটা হয় সম্পূর্ণ ওর নিজের উপর। ও এমন কেন হল,?-আপাদমস্তক কনফিডেন্স বিহীন জুবুথুবু আনস্মার্ট একটা মানুষ।
প্রায়ই ওর এমন হয় , বস , কলিগরা কোন কিছু ওর কাছে জানতে চাইলেও সে বলতে পারে না, জানা জিনিসটাই কিন্তু.....তাও কেন যে এমন হয়। আমতা আমতা করতে থাকে, ঠিক জবাবটা মনেই আসে না ওর মাথাটা যেন একেবারে ব্ল্যাঙ্ক হয়ে যায়, নার্ভাসনেসের জন্যেই হয়ত সে পারা জিনিসটাও পারে না। একমিনিট পরেই দেখা যায় তার সব মনে পরে যায় , আরে এইত জবাব, আমি তো জানতামই , তবে কেন বলতে পারলাম না সময়মত। অক্ষম ক্রোধ হয় ওর । অন্যে যে ওকে এভাবে তুচ্ছ, অকর্মন্য মনে করবে , চলার পথে পদে পদে দমিয়ে রেখে এগিয়ে যাবে তাতে আর অবাক কি আছে।
এযুগে এমন মানুষ দিয়ে আসলেও কিছু হয় না। সে যেন স্রেফ এক অচল মুদ্রা।
অথচ মেধা - যোগ্যতায় সে যে কারো চেয়ে কম তা তো নয় । তাও অন্যদের মত সে কেন পারে না? মুনিয়ার বন্ধু পরিচিতদের দেখে ওর নিজের মনে ঈর্ষা জাগে।
শিবলীর কথাই ধরা যাক, মফস্বলের এক ব্যাংকে পোষ্টিং হয়েছিল ওর, ম্যানেজার ডিপোজিটের এক বিশাল টার্গেট ধরিয়ে দিলে, সে সোজা সাপটা বলেছিল, স্যার ,এখানে হার্ডলি গোটা কতক চাষি মজুর , মুদি দোকানিরা আসে কোথা থেকে টাকা আনবো , এত বড় ডিপোজিট চাইলে আমাকে ঢাকায় পাঠিয়ে দেন , ডিপোজিটের বন্যা বইয়ে দেব।
কিংবা ধরা যাক রুবানের কথাটা, ওর রেস্টুরেন্টের ম্যানেজারকে সেই যেন চালায়, ম্যানেজার ওকে চালাবে কি? রীতি মত ডাটের সাথে সে ওঁর সাথে চলে। দোকান থেকে যখন তখন যা তা অজুহাতে বের হয়ে পড়ে বাইরে।
মুনিয়া সভয়ে জিজ্ঞেস করে, যদি চাকরি থেকে ছাড়িয়ে দেয়?
দিলে দেবে, আরও একটা ঠিক পেয়ে যাব , বরং ঐ ব্যাটারই অসুবিধে হবে , সে এত তাড়াআড়ি আর একটা কাজ জানা লোক পাবে কোথায়?
বিপ্রার কথাও এখানে বলা যায়। একটা স্টোরে পার্টাটাইম কাজ নিয়েছে। লন্ডনের যে খরচাপাতি তাতে বাপের পয়সায় পোষায় না।
শুরুর দিন ম্যানেজার তাকে বেশ ভালোই ঝেড়েছিল । অনভিজ্ঞ বিপ্রার বেশ সমস্যা হচ্ছিলো এর মাঝেই ঐ বদের হাড্ডি তাকে স্রেফ কুকুরের মত খাটিয়েছিল। শেখানোরও সময় নেই, একটু অশ্রাব্য কটুক্তি করে বলেছিল ,না পোষালে দরজা খোলাই আছে, যেতে পারো।
বিপ্রা চুপ কে থাকার মানুষ নয়, জবাব দিয়েছিল, তুমি আমার সাথে যেভাবে কথা বললে আমার নিজের মা-বাপও ত এভাবে বলে নি, এখন গাল দিচ্ছ, দিনের শেষে সরি বলবে। সত্যি সে কাজ দেখিয়েছিল বটে।
ম্যানেজার দিনের শেষে সরি ও থ্যাঙ্কস দুটো্ই দিয়েছিল। এখনও সে কাজ করে ওখানেই, এমনকি যখন মনে চায় ব্রেকে যায় আসে,বিপ্রা কি করতে পারে তা সে দেখিয়েয়েছে, অতি অল্প সময়ে নিজের অপরিহার্য জায়গাটা পাকাপোক্ত করেছে, ম্যানেজার তার উপর খুশি,তাকে ঘাটায়ও না।
ওদের চেয়ে মুনিয়া কম কিসে?- না, সে পিছিয়ে তার চালচলনে স্মার্টনেসে,মেধা আছে প্রচুর ,প্রকাশ নেই বাইরে , অন্যদের মত আত্নবিশ্বাসের ঝলকানি নেই তার মাঝে। দশ চড়েও রা ফুটবে না- এই টাইপের সে।
বুঝলি তোর মাঝে সেই তেজটাই নেই, সাহসী হতে শেখ, মুখ ফুটে কথা বল, তুই দাপটে চললে তোর দাপট সবাই মেনে নেবে।
এমনকি তোর মাঝে সত্যিকারের কিছু না থাকলেও । আর থাকলেও তুই যেভাবে চলছিস তাতে তোর কোন উন্নতি হবে না, তোর কাজটা কারোর চোখে পড়বে না। তুই বড় বেশী ভয় পাস, দ্বিধা দন্দ্ব আর তোর থেকে গেল না, কিভাবে এত সহ্য করিস, কেনইবা করিস? তোকে বোল্ড হতে হবে বুঝেছিস? কিছু পারিস আর না পারিস , জোরের সাথে নিজেকে প্রকাশ করতে হবে, এই দুনিয়ায় পুতু পুতু নাজুক নরম মানুষের কোন জায়গা নেই বুঝলি?এখানে গলা আছে তো সব আছে, যার আওয়াজ যত উপরে সে তত দামী।
পাখিপড়ার মত করে দেয়া বিপ্রার উপদেশ পরামর্শের টোটকা মুনিয়ার বেলায় কাজ করে না। কখনোই করে নি।
নতুন বলে না, সে জানে পুরানো সে একদিন হয়ে যাবে কিন্তু তার অযথা সঙ্কোচের কারণে চিরদিনই ও ম্রিয়মান হয়ে থাকবে, রেগুলার বেসিসে বসের বকা খেয়ে যাবে, প্রায়শই বিনা কারণে। সব সময় সবজায়গায সবার নিচে , সবার পিছে পড়ে থাকাটাই যেন তার নিয়তি। কেন যে তার সব কাজগুলোতেই কিছু কিছু ঘাটতি রয়ে যায় , তার দোষগুলোই মানুষের চোখে পড়ে , ভালো কোন কিছু , কোন কাজ যেন মানুষের চোখে অদৃশ্য হয়ে থাকে- মুনিয়া ভেবে পায় না। আর কারোর কপালে কি কখনো এমন হয় ? খুব দুঃসহ হয়ে ওঠার সময়গুলোতে সে বিনা কারনে ওয়াশরুমে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে ,সময় নষ্ট করতে থাকে- ওখানে ওর নিজেকে অবাঞ্ছিত মনে হয় না,কেবলমাত্র ঐখানেই সারাক্ষণ ওর দিকে অভিযোগের খড়গ তুলে কেউ দাঁড়িয়ে থাকে না। নিজেকে মনে হয় অফিসের রিসিপশনিস্ট মেয়েটি কিংবা রোজ যে ছোট্ট কফিশপে খেতে যায় ও সেখানের ওয়েট্রস এর চেয়েও সে অপাঙ্কক্তেয়, অপদার্থ ,অসম্মানিত, মুল্যহীন।
ঐ মেয়েগুলো যে সতেজ কনফিডেন্ট হাসির সাথে তাকে স্বাগত জানায় তার চেয়ে অনেক বড় দরের অফিস জব করেও ওর মুখে সেই ঝলক আসে না। কেন সে এমন হলো ? সবসময় জবুথুবু এক অনাসৃষ্টি যেন!
মুনিয়ার খুব অসহ্য লাগে সময়ে সময়ে - গ্রেগের অন্য অন্য আরও অনেক দোষের মাঝে আছে নিজেকে নিয়ে অত্যন্ত দম্ভ করার বদভ্যাস। মুনিয়ার ইমিডিয়েট বস হবার কারনে তাকে সারাদিন এইসব শুনতে হয়। বিশিষ্ট গুনী ব্যক্তি গ্রেগ তার সামনে আর কাউকে গ্রাহ্যই করে না। সারাক্ষণই সে এই , সে ঐ , তার এত এত ডিগ্রী আর যোগ্যতা ।
আগে আর কোথায় কোথায় তার কত প্রশংসা ও কৃতিত্ব - এই সব কথার ফুল ঝুরি ছোটায় সে। এমনিতেই মনে মনে লোকটাকে একেবারেই সহ্য হয় না মুনিয়ার তার উপর এই সব আত্নগর্ব শুনতে কার কাহাতক ভালো লাগে। এভাবেই চলছিল , চলেও যেত .........কিন্তু এরই মাঝে একদিন নিজের ঢোল নিজে পেটানোর ফুরসতে মুনিয়াকে তার আইইএলটিএস স্কোর সম্পর্কে সে জিজ্ঞেস করে বসলো । সাড়ে সাত -স্কোরটা বেশ কুন্ঠিত ভাবে গ্রেগকে জানালো মুনিয়া। বাংলাদেশে এটা একেবারে এভারেজ স্কোর বলেই তার ধারণা ছিল।
ওর নিজেরই কোচিং সেন্টারেই বহু স্টুডেন্ট আটের ওপর পেয়েছে। কেউ কেউ এমনকি সাড়ে আট। নিজে ইভনিং এমবিএ, চাকরি বাকরি সামলে এর চেয়ে আর ভালো করতে পারেনি। ওর এখানকার কোর্সের জন্য অবশ্য এর চেয়ে বেশীর দরকারও ছিল না। যেমন অহঙ্কারী লোক এই গ্রেগ -সে এই স্কোর কে সে নির্ঘাত গোনার মাঝেই নেবে না।
কিন্তু ওর ধারনা ভুল ছিল। আক্রমনটা আসলো সম্পূর্ণ অন্য দিক থেকে।
কি যে বল তুমি!আনবিলিভেবল ! তোমার স্কোর এত ভালো থাকলে তোমার ইংলিশের এই অবস্থা কেন? আমি বেশ কয়েকটা চাইনিজকে জানি ছয় সাড়ে ছয় পেয়েছে তারা অনেক অনেক ভালো ইংলিশ বলে, তোমার চেয়ে তো বহু গুনে ভালো। সেই দিক দিয়ে তোমার স্কোর অনুযায়ী তো তোমার ইংলিশ স্টান্ডার্ড আরও অনেক ভালো হবার কথা। তুমি কেন তোমার স্কোর নিয়ে আমার সাথে মিথ্যা কথা বলছো? -বলে সরাসরি মুনিয়াকে চার্জ করে সে, তুমি আসলে এত স্কোর করনি, মিথ্যা কথা বলছো।
মুনিয়া গ্রেগের এহেন কথামালায় হতবাক ও কিছুটা বিপর্যস্ত হয়ে যায়। এ আবার কেমন সমস্যায় পড়া গেল !
সে প্রতিবাদ করে, কিন্ত আমার স্কোর তো আসলেই সেভেন পয়েন্ট ফাইভ। আর এটা এমন কিছু বিশাল ব্যাপার নয়, আমাদের দেশের অনেকেই পায়,যদি আমার ইংরেজী খারাপ হয়েই থাকে তার কারন আমার ইংলিশে কথা বলার সুযোগ খুব কমই ছিল, বাড়িতে তো বটেই ক্লাসেও । এখানেও আমার ক্লাসে বাঙালি এত বেশি যে কোন কোন দিন ইংরেজী বলার প্রয়োজন প্রায় পড়েই না। প্র্যাকটিস না থাকার কারনেই ঐ স্টান্ডার্ডটা নেই ।
নিয়মিত না প্র্যাকটিস করলে যে কারোর অবস্থাই তো আমার মত হবে।
কোন কথায় কর্ণপাত না করে অকস্মাৎ ক্ষেপে যায় গ্রেগ। কেন মিথ্যা কথা বলছো? তারচেয়ে তোমার সত্যটা অ্যাডমিট করে ফেল যে তোমার স্কোর আসলেই এত না ।
এবার মাথায় সত্যি সত্যি খুন চাপে মুনিয়ার। এই ফালতু দাম্ভিক লোকটার কাছে তার স্কোর নিয়ে মিথ্যা সে বলতে যাবে কোন দুঃখে?তার কি লাভ আছে এতে?সে সোজা জবাব দিয়ে বসে , তুমি তো আমার বস নও , তাহলে কেন তোমার সাথে আমি এব্যাপারে মিথ্যা বলতে যাবো? আমার কি স্বার্থ? তুমি কি আমার বেতন দাও নাকি?
গ্গেগ এই উত্তর পেয়ে প্রচন্ড খেপে ওঠে , ইউ আর সিম্পলি এ ব্লাডি বেঙ্গলী লায়ার , আই হেট ইয়ু্।
সমান তেজে মুখচোরা মুনিয়া সরব হয়ে ওঠে , মি টু। নিজের সাথে সাথে দেশের নাম তোলাটা তার খুবই গায়ে লাগে, লাগারই তো কথা। শামসুজ্জামানের কাছে শুনতে শুধু খারাপই লেগেছিল, কিন্তু এর মুখে শুনতে বোধ হয় অপমান। গট গট করে গ্রেগ বসের রুমে চলে যায়, বোধহয় এই সব ব্যাপারে নালিশ করতেই , ছোটা বড় সব ব্যাপারে সে সবসময় মুনিয়ার বিরুদ্ধে কথা লাগানোর সুযোগ খোঁজে । সবসময় খালি অভিযোগ আর অভিযোগ।
দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে নিজের জায়গায় ফেরে মুনিয়া। এ অফিসে তার জায়গা মোটেই পাকাপোক্ত হয়ে ওঠেনি এখনও পর্যন্ত, তারপরে প্রতিদিন গ্রেগের সাথে কাজ করা তার পক্ষে দুঃসাধ্য হয়ে উঠছে দিন দিন। এভবে চললে সে এখনে কাজ করবে কিভাবে? এক মুহুর্তে জেদ চাপে কাজটা ছেড়ে দেবার, আরও আরও জায়গায় সে কাজ করেছে, কোনটার অভিজ্ঞতাই অন্তত তার পক্ষে খুব সুখকর ছিল না সত্য কিন্তু এত খারাপও ছিল না। কিন্তু এই চাকরিটা তার দরকার , খুবই দরকার। সেখানেই সে অপারগ, চাকরির বাজারের অবস্থা এখন মোটেই ভালো না এদেশে।
কিন্তু যুক্তিহীন ক্লান্ত মন বলে এভাবে চললে বস তোমাকে ছাটাই করবে কোন না কোন দিন, যত দিন গ্রেগ থাকবে অন্তত ততদিন তুমি এখানে তো কোন জায়গা করে নিতে পারবে না ,তোমাকে ছাড়িয়ে দেবার আগে নিজেই এই ঘোড়ার ডিমের কাজকে লাথি মেরে চলে যাও না!
গ্রেগ যে ওর বিষয়েই কথা বলছে তা সে নিজের জায়গাতে বসেই বেশ বুঝতে পারছিল। ওর গলার আওয়াজের ভলিউম ত কম নয়। কিছু কিছু ভেসে আসা শব্দই বলে দিচ্ছিলো আলোচনার বিষয়বস্তু। কতক্ষণের মাঝে গ্রেগ রুমে থাকতে থাকতেই মুনিয়ার শামসুজ্ঝামানের রুমে ডাক পড়াতে সে আরও নিশ্চিত হলো । তার ব্যাপারে নিশ্চয়ই অনেক ফুলিয়ে ফাপিয়ে বলেছে গ্রেগ, ওর সাথে সবসময়েই তাই করে এসেছে সে।
এভাবে কেমন করে চলবে আর কতদিন চলবে? প্রতিদিনই একটা না একটা ঝামেলো সে গায়ে পড়ে বাধাবার চেষ্টা করে। আর মুনিয়ার চিন্তার কারন স্রেফ তুচ্ছ আইইএলটিএস স্কোর নয়। একটু আগেই সে একটা কথাপ্রসঙ্গে গ্রেগকে বলে ফেলেছিল, ফিন্যান্স ডিগ্রীধারী ওর বসের- মানে শামসুজ্জামানের ওর নিজের অ্যাকাউন্টিং পাঠ্য সিলেবাস সম্পর্কে খুব একটা ধারনা নেই। নিতান্ত ক্যাজুয়াল ও খুব খাঁটি যৌক্তিক রিমার্কও বটে । কিন্তু গ্রেগ শুনে তার সাথে গলার রগ ফুলিয়ে তর্ক করা শুরু করলো।
এখন এই কথাটাও সে নিশ্চয়ই নিজের সুবিধামত অ্যাঙ্গেলে বসের কাছে লাগিয়ে দিয়েছে । হয়ত সোজাসাপটা এভাবেই বলেছ্বে, মুনিয়া বলেছে আপনি কিছু জানেন না । এভাবেও বলাতেই পারে সে, তার পক্ষে খুবই সম্ভব। আর স্বাভাবিক ভাবেই শামসুজ্ঝামান এহেন কথা যে খুব একটা খুশি তার উপর হবেন না তা সে হলফ করে বলতে পারে। তাকে কাজ থেকে বাদ তো দিয়ে দেবেন হয়তবা আজই ।
এমনিতেও তো তিনি মুনিয়ার উপর খুব একটা সন্তুষ্ট না মোটেই।
ওর বুক দুরু দুরু করতে লাগলো, কিন্তু একই সাথে সমান্তরালে বয়ে যাওয়া চোরা রাগের স্রোতও সে টের পেল। এবার সে সবকিছু ফেস করবে , চাকরি থাক যাক , যাবার আগে স্পষ্ট কথাটা সে বলে যাবেই।
আর তার এসব সহ্য হচ্ছে না ।
বসের রুমে মুখে ফিচলে হাসি নিয়ে বসে ছিল গ্রগ।
প্রসঙ্গ অবধারিতভাবে মুনিয়ার জানাই । গ্রেগ কথা লাগিয়েছে এবং যতটা সম্ভব বাজে ও বিকৃত ভাবেই কানে তুলেছে বসের। কথা উঠলো মুনিয়ার আন্দাজমতোই। গ্রেগের দিকে তাকিয়ে নিস্পলক চোখে মুনিয়া বলল, কারো পিছনে তার ক্রিটিসাইজ করাটা কোন জেন্টেলম্যানের কাজ নয়। তুমি যে কেমন একজন লোক তা তোমার এই আচরণ থেকেই পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে।
ওর মত একজনের মুখে এরকম কথাগুলো শোনার জন্য প্রস্তুত ছিল না গ্রেগ। তেলেবেগুনে জ্বলে উঠলো সে। সটান দাঁড়িয়ে হাত পা ছুড়ে স্রেফ চেঁচামেচি গালাগালি শুরু করলো। এতেই শেষ না ,উল্টা বসকে বললো এই মেয়েটা তার সামনে আঙ্গুল তুলে ঝগড়া করছে । মুনিয়ার শান্ত ভাবের কোন পরিবর্তন হল না, সে গ্রেগের দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলো হাত পা নেড়ে ঝগড়া গালাগালি তো তুমি করছো, বসের দিকে তাকিয়ে বলল, দেখেন স্যার, এখানে কে কার সাথে আঙ্গুল তুলে ঝগড়া করছে আমি না গ্রেগ?এ কথায় গ্রেগের কথার তার ও ভাব আরও উচ্চমার্গে ওঠায় শামসুজ্জামান বাধ্য হয়ে ওকে জোর করে রুমের বাইরে পাঠিয়ে দিলেন।
রুমটা এবার যেন ঠান্ডা হল, অফিসের সব আদব কেতা ভদ্রতা বাদ দিয়ে এতক্ষনের বিদ্বেষপূর্ণ গালাগালি বাদবিবাদের কারনে ওটা একেবারে বারোয়ারি বাজারের অবস্থায় চলে এসেছিল।
মুনিয়া আর ভনিতায় গেল না, সোজাসাপটা বলে ফেললো, স্যার গ্রেগ আপনাকে যা বলেছে তার সবই বাড়িয়ে চাড়িয়ে বিকৃত করে বলা, আর আমি মোটেও কোন লায়ার নই ,আমার কোন কোয়ালিফিকেশন নিয়ে মিথ্যা কোন কথাও আমি বলি নি। আর ওই এতদিন আমার কাজগুলো নিজের নামে চালিয়ে দিচ্ছিলো। আ্যাডামসের কাজের পুরোটা আমার , কিন্তু ক্রেডিট নিয়েছে সে। তার উপর ইচ্ছা করে আমাকে ভুল জিনিস শিখাচ্ছিলো।
সিয়ার্স কনস্ট্রাকশনের ফাইলের ভুলগুলোও এই জন্যেই হয়েছে। ওর সাথে কাজ করা প্রায় অসম্ভব একটা ব্যাপার স্যার। এক বারে একথাগুলো মুনিয়ার মুখ দিয়ে বের হয়ে যাবার পরও ও নিজেই স্তম্ভিত হয়ে গেল। ওর বিশ্বাস হতে চায় না, এই সপ্রতিভ সহজ প্রকাশ সে কিভাবে করতে পারলো, সয়ে যাওয়া আর কেবলই সয়ে যাওয়া, জোড়াতালিতে নুইয়ে থেকে ঝড়ের ঝাপটা সামলানোই সব সময় তার কাজ হয়ে এসেছে। ঝড়ের মুখে দোষ না থাকলেও চুপ করে মুখ নিচু করে সহ্য করে গেছে, প্রকাশ করেনি কিছুই।
এরকম মানুষ মাথা উঁচু করে কথা বলছে- এই ভূমিকাটা ওর জন্যে একেবারেই নতুন। তার উপর সে কি বলে ফেললো? গ্রেগের সাথে কাজ করা অসম্ভব?? এর পরেওওর চেয়ে বহু অংশে দরকারী একজন মানুষের সাথে বস কি আর তাকে এখানে রাখবেন? বাদ তাকেই পড়তে হবে, ওজনের দাঁড়িপাল্লার তার আপেক্ষিক গুরুত্ব যে অনেক কম।
শামসুজ্জামান ওর দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন, তিনিও কি এই নতুন মুনিয়াকে বুঝতে চাচ্ছেন বা পারছেন? আর মুনিয়ে একমনে ভাবতে থাকে এখন উনি ওকে তাঁর কাজ থেকে বিদায় করে দেবেন , আর যাই হোক আজকের পরে সে গ্রেগের সাথে তার আন্ডারে থেকে কাজ করতে পারে না।
ওর মনের ভাবনার প্রতিধ্বনি শুনতে পায় সে ওর বসের কন্ঠে। তুমি এখানে গ্গেগের সাথে এভাবে কাজ করতে পারবে না ।
বৈপরীত্যের হতাশা ক্রমেই কাছিয়ে আসতে থাকে মুনিয়ার মনে, ক্ষণিকের উত্তেজনার ধার এখন কমে গেছে, জবলেস হতে হবে তাকে। আবারও । বেশ লম্বা দুঃসহ বেকারত্বের পরে পাওয়া তার বহু কষ্টের জব...... তাহলে হাত থেকে এবার গেল । আবারও সেই বেকার জীবন, কিভাবে চলবে ওর ?
বসের দিকে তাকিয়ে থাকে সে বোবা অসহায়ত্ব নিয়ে । শামসুজ্জামান আবার কথা শুরু করেন,
........তুমি এখন থেকে উইন্ডির সাথে কাজ করবে।
ও গ্রেগের মত নয়। গ্রেগটা এরকমই , রগচটা,বদমেজাজী, মারমুখী একদম। ওর রাগ অবশ্য ঝপ করে পড়ে যায়, কালই দেখবে একদম স্বাভাবিক। আর ওর খাসিলতই কেমন যেন,কিছুটা ইগো আছে ওর মধ্যে, জেলাসিও আছে। কাউকে ওর সাথে দিয়ে আমি শান্তি পাইনি।
কোন কিছু না কিছু নিয়ে সে ঝামেলা একটা বাঁধাবেই, এমনিতে অবশ্য লোক খুব বুদ্ধিমান, এক্সপার্ট। বলতে গেলে সব কাজ নিজে নিজে শিখে নিয়েছে। আমার তেমন কিছু শেখানো লাগে নি। কিন্তু ওর স্বভাবদোষে কেউ ওর সাথে টেকে না। ওর ধারে কাছে বলতে গেলে ঘেষতেই চায় না, কাজ জানে তাই তোয়াজ করে, হাই হ্যালো সব আছে কিন্তু ব্যাস ঐ পর্যন্তই।
ভেবেছিলাম তোমার বেশ ধৈর্য আছে , মাস দুই যখন পেরেছো - তুমি অন্তত ওর সাথে শেষমেষ টিকে যেতে পারবে। যাই হোক কি আর করা। তুমি বরং কাল থেকেই উইন্ডির সাথে শুরু কর। ও বেশ ভালো , কাজ শেখায়ও ভালো। গ্রেগ লোকটা এমনিতে খুব টাফ , কিন্তু কাজ কর্মে ভালো বলেই ওকে নিয়ে চালিয়ে নিচ্ছি নইলে কবেই বের করে দিতাম।
এমন স্বভাবের মানুষজনকে নিয়ে চলা যায়?
বসের কথা শুনতে শুনতে এবার কোন কারন ছাড়াই মুনিয়ার মনে গ্রেগের জন্য একটুখনি করুনা হল, কেন কে জানে। মানুষের সব মনের ভাবের কি দ্রুত বদলই না হয়। খানিক আগের রাগ , বিষাদ ,হতাশা ওগুলো এখন আর নেই একদম। অথচ আশ্চর্য একটু আগেই যার জন্য -পাগলা খেপাটে বুনো রাগ উঠেছিল -তারই জন্যে- সেই গ্রেগের জন্যে এখন তার মনে করুনা হচ্ছে!আসলে মানুষের সব কিছু কি যুক্তি মেনে চলে?চলে না। মানুষ আপাদমস্তক আবেগী বুদ্ধিমান প্রাণি।
আবেগের ভাগটা বোধহয় একটু বেশী। বেহিসেবী তার অনুভূতি। তবে একসাথে মানুষ অনেক কিছুই ভাবতে পারে। যেন সমান্তরালের কয়েকটি নদীর স্রোতের বয়ে চলা একসাথে পাশাপাশি। এই যেমন এখন মুনিয়া ভাবছে, আজ থেকে বাড়িতে ফিরে যাবার সময় আগামীদিন গ্গেগ তার জন্য কি নতুন প্রবলেম খাড়া করবে তা নিয়ে আর ভাবতে হবে না।
কালকের দিন কাজে আসার আগে ভাবতে হবে না , আজকে তার ঝামলাটা কোন দিক দিয়ে আসবে। তার চেয়েও বড় কথা কোন এক কারনে সবসময় চেপে থাকা আত্নকরুনার বোধটা তাকে ছেড়ে গেছে, অন্তত এখনকার মত হলেও । .............এবং অন্তত পক্ষে আজকের মত ওয়াশরুমের ক্ষুদে নিরালা কোনটারও এখন বিশেষ দরকার হবে না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।