পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে তেহরানের ‘সুর বদল’কে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের বিতর্কিত পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে দেশটির সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এ মনোভাব প্রকাশ করা হয়েছে।
গত এক প্রজন্মের মধ্যে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সবচেয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক ছিল এটা। গত বৃহস্পতিবারের এ বৈঠকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফের সঙ্গে আলোচনা করেন। ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ১৯৮০ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত এটাই সবচেয়ে আন্তরিকতাপূর্ণ বৈঠক বলে মনে করা হচ্ছে।
১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামি বিপ্লব হয়। এর পর থেকেই দেশ দুটির মধ্যে কূটনৈতিক অচলাবস্থা চলে আসছে।
বৈঠকের পর জন কেরি বলেন, তাঁরা তেহরানের ‘একেবারে ভিন্ন সুরে’ অভিভূত হয়েছেন। তবে এখনো অনেক প্রশ্ন রয়েছে, যেগুলোর উত্তর ইরানকে দিতে হবে।
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে পরবর্তী সরাসরি আলোচনা শুরু হবে আগামী ১৫ অক্টোবর থেকে সুইজারল্যান্ডের জেনেভা শহরে।
সেই আলোচনা হবে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্য ও জার্মানি, যা পরিচিত পি ফাইভ প্লাস ওয়ান নামে। নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্র-ইরান বৈঠকে পি ফাইভ প্লাস ওয়ানভুক্ত অন্য দেশগুলোর কূটনীতিকেরাও উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক প্রসঙ্গে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জারিফ বলেন, আলোচনা ‘গঠনমূলক’ ছিল এবং কূটনীতিকেরা ইরানের জনগণের অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আন্তর্জাতিক ইস্যুগুলো সমাধানের চেষ্টা করবেন। তিনি বলেন, ‘প্রথম ধাপ নিয়ে আমি সন্তুষ্ট। এখন আমাদের দেখতে হবে, আন্তরিক কাজের মাধ্যমে আমরা ইতিবাচক কথাগুলোকে মিলিয়ে নিতে পারি কি না।
’
জারিফ প্রতিশ্রুতি দেন ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি যে ‘শান্তিপূর্ণ ছাড়া অন্য কিছু নয়’ তা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে প্রমাণ করা হবে। ইরানের বিরুদ্ধে আরোপিত অবরোধগুলোকে অগ্রগতির পথে অন্তরায় আখ্যা দিয়ে মন্ত্রী বলেন, তিনি আশা করছেন, দ্বিপক্ষীয়, একপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় সব অবরোধ অদূর ভবিষ্যতে তুলে নেওয়া হবে।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম হেগও বৈঠক শেষে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, বৈঠকের সুর ও মেজাজ ‘খুবই ভালো’ ছিল। আর ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান ক্যাথেরিন অ্যাস্টন বলেছেন, একটি ‘উচ্চাভিলাষী সময়সীমাকে সামনে রেখে এগিয়ে যাওয়ার’ বিষয়ে বৈঠকে সমঝোতা হয়েছে।
এর আগে বুধবারই ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেন, পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে সৃষ্ট বিরোধের ব্যাপারে আগামী ছয় মাসের মধ্যেই তিনি একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে চান।
মার্কিন কর্তৃপক্ষ বলছে, অবরোধ প্রত্যাহারের বিষয়ে এখনই কোনো বড় ছাড় দেওয়া হবে না। ইরানকে আগে এমন দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে বিশ্ববাসী আশ্বস্ত হতে পারে যে তারা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে না। বিবিসি, রয়টার্স ও এএফপি।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।