কেনিয়ার নাইরোবিতে ওয়েস্টগেট শপিং মলে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পর নিরাপত্তা বাড়ানো হচ্ছে কলকাতার শপিং মলগুলোতে। সামনে দুইটি বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান- ঈদ ও পুজো। ভিড়ে ঠাসা কলকাতার শপিং মলগুলোতে ওয়েস্টগেটের পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে ব্যস্ত সেখানকার মলগুলোর মালিক এবং প্রশাসন।
শুধু ক্লোজড সার্কিট টিভি বসিয়ে ও গেটে নিরাপত্তাকর্মী বহাল করেই আর স্বস্তি পাচ্ছেন না শপিং মলগুলোর মালিকপক্ষ। নজরদারি বাড়াতে আরও বেশি সাদা পোশাকের নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের চিন্তা করছেন তারা।
সময়ও হাতে বেশি নেই। ইতোমধ্যে শহরের প্রথম শপিং মল ফোরাম'র নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ফোরাম প্রজেক্টস'র পক্ষ থেকে উজ্জ্বল জানান, এরইমধ্যে অনেক সাদা পোশাকের নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ করেছেন তাঁরা। তারা ক্রেতার ভিড়ে মিশে নজরদারির কাজ চালাবেন। কোনও ক্রেতার সন্দেহজনক ব্যবহার ওই কর্মীদের চোখে পড়বেই।
এ ছাড়া লুকোনো ক্যামেরা বসানোর কথাও ভাবছি। তিনি বলেন, ওয়েস্টগেটে সিসি টিভি নষ্ট করা হয়েছিল। কিন্তু আলো, স্মোক-ডিটেক্টর বা অন্য কিছুর সঙ্গে ক্যামেরা লাগানো থাকলে, তা সহজে বোঝা যাবে না।
নাইরোবির ঘটনার পরপরই নিরাপত্তার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে নিজেদের মধ্যে আলোচনা সারে অম্বুজা নেওটিয়া গোষ্ঠী, অবনী গোষ্ঠী, ফোরাম প্রজেক্টস এবং সাউথ সিটি মলের কর্তৃপক্ষ। নিজেদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর পাশাপাশি কলকাতা পুলিশের সঙ্গেও আলোচনায় বসতে চান তারা।
এদিকে সল্টলেক ও রাজারহাটে দু’টি মলে ক্লোজড সার্কিট টিভি ও নিরাপত্তাকর্মীর সংখ্যা বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন সিটি সেন্টার ওয়ান এবং টু- এর কর্তৃপক্ষ। সিটি সেন্টারের ভাইস প্রেসিডেন্ট পি সন্দীপ জানান, সাধারণ দিনে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ মলে পা রাখেন। ছুটি বা উৎসবের দিনে এই সংখ্যা তিন গুণ পর্যন্ত বেড়ে যায়। মোট ব্যবসার ১০ থেকে ১২ শতাংশ তাঁরা নিরাপত্তার জন্য খরচ করেন বলে তাঁর দাবি। তিনি জানান, বাড়তি নিরাপত্তার প্রয়োজনে সেই অঙ্ক বাড়বে।
একই সুর অবনী রিভারসাইড মল ও সাউথ সিটি মল কর্তৃপক্ষেরও। তাঁদের দাবি, পুজো ভিড়ে ঠাসা মলের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। অবনী মল কর্তৃপক্ষ জানান, নিরাপত্তাকর্মীর সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। তা ছাড়া, প্রতি আধ ঘণ্টায় পরিষ্কার করা হচ্ছে ময়লা ফেলার জায়গা। বাইরে থেকে দেখলে হয়তো এটি রুটিন কাজ মনে হবে।
কিন্তু আসলে সন্দেহজনক কোনও জিনিস কোথাও আছে কি না, তা দেখতেই এই উদ্যোগ। এদিকে নাইরোবিতে জঙ্গি হামলার পরে ভারতের বিভিন্ন শপিং মলে নিরাপত্তাকর্মীর চাহিদা বেড়েছে কয়েক গুণ। বেসরকারি নিরাপত্তা এজেন্সি গ্রুপ ফোর সিকিউরিটির প্রধান রাজীব শর্মা জানান, উৎসবের সময়ে এমনিতেই চাহিদা বাড়ে। এ বার সেই সংখ্যা আরও বেড়েছে।
বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিচ্ছে পুলিশও।
লালবাজারের এক শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ওয়েস্টগেটের জঙ্গি হামলার পর আমরা শহরের বিভিন্ন শপিং মলে নিরাপত্তা বাড়াতে পুজোর মুখে মহড়ার পরিকল্পনা করেছি। শহরের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পুজোমণ্ডপ এবং উল্লেখযোগ্য জায়গাতেও পুলিশ ও বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মীরা একযোগে এই মহড়ায় অংশ নেবেন। সেই মতোই পুজোর আগে এবং পুজোর সময়ে শপিং মলগুলির নিরাপত্তার চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।