........ (যে মুভিগুলোর নাম উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলোর বেশিরভাগই আজকালকার দর্শকদের কাছে তেমন উপাদেয় হওয়ার কথা নয় । কেউ কৌতুহলী হয়ে নিচের যেকোন মুভি সংগ্রহ করে দেখলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হতাশ হওয়া লাগতে পারে । যাচাই বাছাই না করে মুভি না দেখার অনুরোধ থাকল । আর যারা বাংলা সিনেমা নিয়ে ভালো খোঁজ-খবর রাখেন, তারা ঢালিউডের স্টান্টম্যানদের নিয়ে কিছু জানা থাকলে প্লিজ জানান । আমি এই পোস্টেই পরবর্তীতে এই নিয়ে আলোচনার আশা রাখি )
দি স্কাইওয়েম্যান(১৯২০)
শ্যুটিং এর সময় দুইজন পাইলট মিল্টন এলিয়ট ও ওর্মার লক্লিয়ার দুর্ঘটনায় মারা যান ।
দি ওয়ারেন্স অফ ভার্জিনিয়া(১৯২৪)
১৯২৩ সালের ৩০ নভেম্বর সান এন্টারিওরর টেক্সাসে শ্যুটিং এর সময় সামান্য ম্যাচের কাঠি থেকে আগুনের সূত্রপাত হয় । অভিনেত্রী মার্থা ম্যাশফিল্ডের কস্টিউমে আগুন ধরে যায় । আগাথা ওয়ারেন নামের মূল চরিত্রেই অভিনয় ক্লরেছিলেন এই অভিনেত্রী । তার অংশের কাজ শেষ হওয়ার পর গাড়িতে বসতে যাওয়ার সময় কস্টিউমে ভয়াবহভাবে আগু ধরে যায় । একপর্যায়ে আগুন নেভানো সম্ভব হলেও মার্থা মারা যান ।
বেন-হুর(১৯২৫)
ক্যারিয়ট রেসের দৃশ্য ধারণের সময় একজন স্টান্টম্যান মৃত্যুবরণ করে ।
নোয়া’স আর্ক(১৯২৮)
বন্যার দৃশ্য ধারণের সময় তিনজন মারা যায়, একজন পা হারায়, অনেক এক্সট্রা আহত হয় ।
হেল’স এঞ্জেলস(১৯৩০)
শ্যুটিং এর সময় তিনজন পাইলট মারা যায় ।
দি চার্জ অফ দ্যা লাইট বিগ্রেড(১৯৩৬)
ঘোড়া থেকে মাটিতে থাকা তরবারির ওপর পড়ে একজন স্টান্টম্যানের মৃত্যু, তিন ডজনের মত ঘোড়া আহত হয় ।
দি উইজার্ড অফ দি ওজ(১৯৩৯)
মার্গারেট হ্যামিল্টনের চরিত্রের আগুন আর ধোয়ার মাঝে “অদৃশ্য” হয়ে যাওয়ার দৃশ্যের শুটিং হচ্ছিল ।
কিন্তু ট্র্যাপ ডোর সময়মত না খোলায় দুর্ঘটনা ঘটে, একজন স্টান্টম্যানও আহত হন অন্য একটা দৃশ্যের শ্যুটিং এর সময় । বাডি এবসেন নামে অন্য একজন অভিনেতা বাকিজীবনে একটা অভিযোগ করতেন, তার টিন ম্যান চরিত্রের মেক-আপের জন্য যে এলুমিনিয়ামের গুঁড়া ব্যবহার করা হয়েছিল তার পর থেকে তিনি এলুমিনিয়ামের প্রতি এলার্জিক হয়ে পড়েন ।
দে ডায়েড উইথ দেয়ার বুটস অন(১৯৪১)
তিনজন ঘোড়দৌড়বিদ নিহত হল । এর মধ্যে একজন হচ্ছেন জ্যাক বাডলং । জ্যাকের ঘোড়া আরেক এক্সট্রা এরল ফিনের পাশে ফসকে গিয়েছিল, এরলের গায়ে যাতে তলোয়ার না লাগে এজন্য জ্যাক তলোয়ারের মুখ অন্য দিকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা চালান ।
কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত জ্যাক মাটিতে নিজের তলোয়ারের ওপ্র পরে গিয়েই গুরুতর আহত হল, কয়েক ঘণ্টা পর লস এঞ্জেলসের হাসপাতালে জ্যাক বাডলং এর মৃত্যু হয় ।
মাই লাইফ ফর আয়ারল্যান্ড(১৯৪১)
জার্মানরা এই মুভিটা ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাতে তৈরি করেছিল । শেষের দিকে তুমুল দৃশ্যের শ্যুটিং এর সময় বেশ কয়েকজন এক্সট্রা মারা যায়, কারণ একজনের পা ল্যান্ড মাইনের ওপর পড়েছিল । কিছু সূত্রমতে, এই দৃশ্য নাকি আসল মুভিতেও দিয়ে দেয়া হয়েছেইল, তবে এর সপক্ষে কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি ।
বিলিভ ইট অর নট(১৯৪৯)
১৯৪৯ সালের ২৭ মে, “বিলিভ ইট অর নট” এর শেষ পর্বের শ্যুটিং করার সময় প্রতিষ্ঠাতা রবার্ট রিপ্লি সেটে মারাত্নক হার্ট এটাকের শিকার হয়ে মারা যান ।
দি কনকুয়েরর(১৯৫৬)
মুভিটির কলাকুশলীরা সবাই আত্মহত্যা করতে এসেছিলেন কি না কে জানে? তা না হলে তারা কেন আমেরিকা সরকারের ব্যবহৃত তেজষ্ক্রিয় অস্ত্র পরীক্ষা করার জায়গাতে গিয়ে কেন শ্যুটিং করার কথা ভাববেন? মুভির ডিরেক্টর ডিক পাওয়েল ১৯৬৩ সালের জানুয়ারিতে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান, অভিনেতা পেড্রো আরমেন্দিয়াজের ১৯৬০ সালে ক্যান্সার ধরা পড়ে, একদম শেষ পর্যায়ে পৌছে গেছে জেনে এই অভিনেতা ১৯৬৩তেই আত্মহত্যা করেন । অন্য কলাকুশলী সুসান হেওয়ার্ড, জন ওয়েইন, এগনেস মুরহেড এরা সবাই ৭০ এর দশকে ক্যান্সারে মারা যান । ২২০ জনের কলালুশলী থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত অন্তত ৯১ জনের কোন এক প্রকারের ক্যান্সার ধরা পড়েছিল এবং ৪৬ জন মারা গিয়েছেন ততদিনে । এমনকি অভিনেতা ওয়েইন ও হেওয়ার্ডের যে আত্মীয়রা মুভি সেটে ঘুরতে গিয়েছিল তাদেরও অনেক ভোগান্তি পরবর্তীতে সহ্য করতে হয়েছে ।
আন্ডারগ্রাউন্ড(১৯৫৮ টিভি নাটক)
নাটকের এক অংশে অভিনেতা গ্যারেথ জোনসের হার্ট এটাকের দৃশ্যে অভিনয় করার কথা ছিল, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে হার্ট এটাকের দৃশ্যে অভিনয় করার সময় সত্যি সত্যিই তার নিজের বড় ধরণের হার্ট এটাক হয় ।
মেক-আপ করা অবস্থাতেই মারা যান গ্যারেথ জোনস ।
সলোমন এন্ড শেবা(১৯৫৯)
সহ অভিনেতা ও বন্ধু জর্জ স্যান্ডার্সের সাথে ফেন্সিং এর দৃশ্য কাজ করার সময় “উইটনেস ফর প্রসিকিউশন” খ্যাত অভিনেতা টাইরন পাওয়ার হার্ট এটাকের শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করেন ।
)হাউ দ্যা ওয়েস্ট হ্যাস ওন(১৯৬২)
স্টান্টম্যান বব মরগান দুর্ঘটনায় এক পা হারিয়ে মারাত্নক আহত হন ।
দি ফ্লাইট অফ দি ফোনিক্স(১৯৬৫)
ল্যান্ডিং গিয়ার নিচে নামিয়ে প্লেন নিচু করে নিয়ে যেতে হবে, এমন একটা দৃশ্যের সেকেন্ড টেক নেয়ার সময় পাইলট পল মন্টজ নিহত হন ।
ব্যাটল অফ ব্রিটেন(১৯৬৯)
স্প্যানিশ এয়ারফোর্স পাইলট ফ্রেদরিকো এক ক্র্যাশে মারা যান ।
শার্ক!(১৯৬৯)
মুভিতে ব্যবহৃত হাঙ্গরকে ওষুধ দিয়ে ন্দুর্বল করে রাখার কথা ছিল । কিন্তু আচমকা এক স্টান্টম্যানকে আক্রমণ করে বসে হাঙ্গর । শুনতে খারাপ লাগলেও সত্যি, মুভির প্রযোজকরা এই ঘটনাকে ব্যবহার করে দর্শক টানতে চেয়েছিল, মুভির নামও চেঞ্জ করা হয়েছিল ।
কারমেন রাইডার(১৯৭১-১৯৭৩)
এই সিরিজে মটসাইকেল স্টান্ট দেয়ার সময় প্রয়াধান অভিনেতা হিরসি ফুজিওকা উরুর অস্থি ভেঙ্গে ফেলেন । পরবর্তীতে তার জায়গায় অন্য অভিনেতা নেয়া হয়, একস্ময় ফুজিওকা ফিরে আসেন, দুই নায়ক দিয়েই সিরিজটি চালানো হয় ।
দি এক্সরসিস্ট(১৯৭৩)
অভিনেত্রী এলেন বুরস্টাইন পেছন দিকে গড়িয়ে পড়ার একটি দৃশ্যে অভিনয় করার সময় পিঠে মারাত্নক আঘাত পান । এই দৃশ্য মুভিতে রেখে দেয়া হয়েছে ।
দি বেল ফ্রম হেল(১৯৭৩)
এই স্প্যানিশ/ ফ্রেঞ্চ হরর মুভির শেষ দিনের শ্যুটিং এর সময় পরিচালক ক্লডিও গুরিন বেল টাওয়ার থেকে পড়ে যান । তিনি লাফ দিয়েছিলেন নাকি দুর্ঘটনাবশত পড়ে গিয়েছিলেন তা সম্ভবত জানা যায়নি ।
দি এইগার সাঞ্চশন(১৯৭৫)
বেশ কয়েকটা দুর্ঘটনা ঘটে ।
এক স্টান্টম্যান পাহাড় ধসে মারা যায়, অল্পের জন্য পর্বতারোহী মার্ক রোভার বেঁচে যান
এটাক অফ দি কিলার টমাটোস(১৯৭৮)
অভিনেতা জ্যাক রিলি ও জর্জ উইলসন অপ্রত্যাশিতভাবে হেলিকপ্টার ক্র্যাশের মাঝে পড়েন, তেমন বড় ধরণের কোন বিপদ ঘটেনি এবং শেষ পর্যন্ত সেই অংশ মুভিতে রেখে দেয়া হয়েছিল ।
দি অমেন(১৯৭৬)
ব্লগার ধূমজ্বাল এর মন্তব্য তুলে দেয়া হল নিচেঃ
he Omen গ্রেগরী পেক এর নামকরা ছবি। আমার দেখা সবচেয়ে ভৌতিক মুভি। অশুভ সংকেত নামে সেবা প্রকাশনী'র তিনটা বই আছে।
১৯৭৫-৭৬ সালে শুটিং এর সময় কিছু ঘটনা ঘটে:
১।
গ্রেগরী পেক এবং প্রযোজক কে বহনকারী বিমান ভীষন বজ্রপাতের শিকার হয়। Harvey Bernhard কে ব হনকারী বিমান রোমে অবতরনের আগে বজ্রপাতের কবলে পড়ে।
২। গ্রেগরী পেক এবং প্রযোজক ইংল্যান্ডের যে হোটেলে খাওয়ার কথা সেখানে IRA বোমা আক্রমন করে।
৩।
ইসরাইলে এরিয়াল শুটিং এর জন্য যে প্লেন ভাড়া করা হয় তা শেষ মুহুতে পরিবর্তন করা হয়। আর যারা সে প্লেন ভাড়া করে তারা সবাই মারা যায় । ঐ প্লেনটা টেকঅফের সময় ধংস হয়।
৪। শুটিং সাহায্য কারী zookeeper কে সিংঘরা আস্তা খেয়ে ফেলে।
৫। The Omen এর stuntman Alf Joint পরবতী শুটিং এ মারা যান
৬। special effects artist John Richardson এক্সিডেন্টে মারা যান যেমনটি ঘটেছিল সিনেমা'র গল্পে।
কামস এ হর্স্ম্যান(১৯৭৮)
একটি ঝুঁকিপূর্ণ মৃত্যুদৃশ্যের অংশ ধারণের সময় স্টান্টম্যান জিম শেফার্ড দুর্ঘটনার শিকার হন, তাকে টেনে নিয়ে যাওয়া ঘোড়াটি মূল পথ থেকে সরে গেলে মাথায় মারাত্নক আঘাত পেয়ে মৃত্যুবরণ করেন শেফার্ড । মুভিতে একদম নিহত হওয়ার অল্প আগের একটু দৃশ্য রেখে বাকিটি ছেঁটে ফেলা হয়েছিল ।
স্টিল(১৯৭৯)
স্টান্টম্যান আলবার্ট জনস ব্যাকুনাস অভিনেতা জর্জ কেনেডির ডাবল হিসেবে কেনটাকির লেক্সিংটন এ অবস্থিত কিঙ্কেইড টাওয়ার থেকে লাফ দেন । নয় তলা থেকে দেয়া সেই লাফ সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ার পর ব্যাকুনাস জানতে পারেন যে ডার রবিনসন নামে অন্য একজন একটি পাবলিসিটি স্টান্ট দিয়ে উঁচু থেকে লাফ দেয়ার ব্যাকুনাসের আগের রেকর্ডটি ভেঙ্গে ফেলেছেন । এই কথা জানতে পেরে আবার রেকর্ড করার জন্য পুনরায় লাফ দেন । ৩০০ ফুট উপর থেকে ব্যাকুনাস দক্ষতার সাথে লাফ দিলেও এয়ারব্যাগ ফেটে গেলে ব্যাকুনাস মারা যান ।
কোলিলাক্কাম(১৯৮০)
সাউথ ইন্ডিয়ান সুপারস্টার জায়ান নিজের স্টান্ট নিজেই দিতেন, ১৯৮০ সালের ১৬ নভেম্বর এমনই একটি ঝুঁকিপূর্ন দৃশ্যের শ্যুটিং ছিল ।
দৃশ্যটা ছিল এমন, চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে চলতে থাকা হেলিকপ্টারে উঠতে হবে । পরিচালক প্রথমবারে শটটিকে ওকে করলেও জায়ান নিয়ে সন্তুষ্ট হচ্ছিলেন না । ফলে আবার শট নেয়া হয় । কিন্তু এবার হেলিকপ্টারের ব্যালান্স নষ্ট হয়ে যায় এবং ল্যান্ডিং স্কিডে ঝুলন্ত জায়ান ঘটনাস্থলেই নিহত হন । তার ভক্তেরা প্রথমে এই খবরকে পাবলিসিটি স্টান্ট মনে করেছিল, পরবর্তীদের সবার বিভ্রান্তির অবসান হয় ।
ফর ইউর আই’স অনলি(১৯৮১)
একটি চেজ সিনের শ্যুটিং এর সময় স্টান্টম্যান পাওলো রিগন নিহত হন ।
দি ক্যাননবল রান(১৯৮১)
একজন স্টান্ট কো-অর্ডিনেটরের প্রেমিকা আংশিক পঙ্গু হয়ে যান একটি দুর্ঘটনায় ।
দি টুইলাইট জোনঃ দি মুভি(১৯৮৩)
১৯৮২ সালের ২৩ জুলাই হেলিকপ্টারের আঘাতে নৃশংসভাবে নিহত হন অভিনেতা ভিক মোরো এবং দুইজন শিশু অভিনয় শিল্পী ।
দি রাইট স্টাফ(১৯৮৩)
স্টান্টম্যান জোসেফ লেনার্ড প্যারাসুট জাম্পের সময় খুব সময় কোন কারণে পুরোপুরি বা আংশিকভাবে সংজ্ঞা হারিয়ে থাকতে পারেন । পরিণতিতে প্যারাসুট সময়মত খুলতে না পারায় মৃত্যু ।
টপ গান(১৯৮৬)
১৯৮৫ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর, বিখ্যাত এরোবেটিক পাইলট আর্ট স্কোল তার ক্যামেরা-প্লেন সহ নিখোঁজ হয়ে যান । ধারণা করা হয় দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার দিকে তার প্লেন বিদ্ধস্ত হয় । তিনি ও প্লেন-কারোর খোঁজই আর পাওয়া যায়নি ।
ওয়ার্ল্ড ওয়ার থ্রি(টিভি মিনিসিরিজ)
দুর্ঘটনাবশত পরিচালক বরিস সেগাল হেলিকপ্টারের শেষের রোটর ব্লেডের মারাত্নক আঘাতে মৃত্যুবরণ করেন ।
লাইভ ফ্রম হার ম্যাজেস্টিস(১৯৮৪)
কমেডিয়ান টমি কুপার লাইভ অনুষ্ঠানে লক্ষ লক্ষ মানুষের সামনে হার্ট এটাকের শিকার হন ।
দর্শকেরা এটাকে কোন কৌতুক মনে করে হেসেওছিল ।
র্যা ম্বোঃ ফার্স্ট ব্লাড পার্ট ওয়ান(১৯৮৫)
একটি বিস্ফোরণের মাত্রা বেশি হয়ে যাওয়ায় সংশ্লিষ্ট টেকনিশিয়ান ঘটনাস্থলেই নিহত হন ।
আর্মার অব গড(১৯৮৬)
জ্যাকি চ্যান একটি দেয়াল থেকে গাছে লাফিয়ে পড়বেন, এমন একটি দৃশ্যে কাজ করার সময় গাছের ডাল থেকে হাত ফসকে যায় জ্যাকি চ্যানের, ফলশ্রুতিতে ১৫ ফিট নিচে মাটিতে পড়ে যান চ্যান । একটি পাথরের সাথে তার মাথার বাড়ি লাগে, তার খুলির কিছু অংশে ফাটল ধরে এবং একটি টুকরা মস্তিস্ক পর্যন্তও চলে যায় । তিনি ডান কানে একারণে শুনতে পান না এখন ।
ম্যাক্সিমাম ওভারড্রাইভ(১৯৮৬)
ক্যামেরা সাপোর্ট হিসেবে কাঠ ব্যবহার করা হয়েছিল । এক দুর্ঘটনায় কাঠের টুকরা মুভির ফটোগ্রাফির ডিরেক্টর আরমান্ডো ন্যানুজ্জির মুখে গিয়ে লাগে এবং ফলশ্রুতিতে তিনি এক চোখ হারিয়ে ফেলেন । এই ঘটনার জের আদালত পর্যন্ত গড়ায় ।
দি স্কুইজ(১৯৮৭)
অভিজ্ঞ স্টান্টম্যান ভিক্টর ম্যাগনোটা গাড়ি স্টান্ট দেয়ার সময় হাডসন রিভারে ডুবে যান ।
মিলিয়ন ডলার মিস্ট্রি(১৯৮৭)
আলবার্ট জনস নামের সেই স্টান্টম্যান কার সাথে প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে ৩০০ ফুটের মত উঁচু জায়গা থেকে লাফ দিয়েছিলেন মনে আছে? সেই ডার রবিনসনও কিন্তু দুর্ঘটনাতেই মারা যান ।
এমনিতে তার স্টান্টগুলো খুব পরিকল্পিত থাকত, এমনকি ১৯ বছরের ক্যারিয়ারে কোন হাড়ও ভাঙ্গেনি রবিনসনের । কিন্তু ১৯৮৬ সালের ২১ শে নভেম্বর মারাত্নক মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় জীবনসান ঘটে ডার রবিনসনের ।
ব্র্যাডকঃ মিসিং ইন একশন(১৯৮৮)
ফিলিপাইনের লোকেশনের চারজন এক্সট্রা মারা যায়, কয়েকজন আহত হয় । আবারও হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা ।
দি সোর্ড অফ টিপু সুলতান(১৯৮৯)
সেটে হওয়া মৃত্যুর সংখ্যার দিক থেকে এই ঘটনা অত্যন্ত ব্যাপক ।
এই ইন্ডিয়ান টিভি মুভির সেটে আগুন লেগে গেলে ৬২জন এক্সট্রা ও ক্রু সদস্যের জীবনসান হয় । পরিচালক ও অভিনেতা সঞ্জয় খান ১৩ মাস হাসপাতালে অবস্থান করেন, সেই সময়ে তার শরীরে ৭২ টি সার্জারি হয়েছিল বলে জানা যায় ।
সাইবর্গ(১৯৮৯
একশন অভিনেতা জ্যাঁ ক্লদ দুর্ঘটনাবশত সাওহ অভিনেতা জ্যাকসনের চোখে ছুরিকাঘাত করে ফেলেন, ওই চোখে তিনি আর দেখতে পাননি ।
গন ইন সিক্সটি সেকেন্ডস ২(১৯৮৯)
দুর্ঘটনায় এই মুভির কাজ বন্ধ হয়ে যায় ।
দি রিটার্ন অব দি মাস্কেটিয়ারস(১৯৮৯)
২০ সেপ্টেম্বর, ১৯৮৮তে অভিনেতা রয় কিনিয়ার ঘোড়ায় চড়তে গিয়ে হাড় ভাঙ্গেন ।
এর ফলে তার হার্ট এটাক ও মৃত্যু হয় ।
ডেলটা ফোর্স ২(১৯৯০)
হেলিকপটার ক্র্যাশে পাঁচজন মারা যায়, এই ফুটেজ মুভিতে ইউজও করা হয়েছিল ।
৯৯৯(১৯৯৩)
সেসিনা থেকে লাফ দেয়ার সময় ঝামেলা হয়, প্যারসুটিস্টের মৃত্যু ঘটে ।
দি ক্রো(১৯৯৩)
মার্শাল আর্ট অভিনেতা ব্রুস লির ছেলে ব্র্যান্ডন লি বাবার মতই অল্প বয়সে মারা যান । ব্লাঙ্ক বুলেট পিস্তলে থাকার কথা থাকলেও আসল বুলেট ফায়ার হলে ব্র্যান্ডন লি মৃত্যুবরণ করে ।
রাম্বল ইন দি ব্রঙ্কস(১৯৯৫)
স্টান্ট দিতে গিয়ে জ্যাকি চ্যান ডান পা ভেঙ্গে ফেলেন । বিশেষ ব্যবস্থায় বাকি শ্যুটিং করা হয় ।
ভ্যাম্পায়ার ইন ব্রুকলিন(১৯৯৫)
একজন স্টান্টগার্ল মারা যায় । প্যারামাউন্ট পিকচার্সকে ৫০ মিলিয়ন ডলারের মামলা মোকাবিলা করতে হয় ।
গোন ফিশিং(১৯৯৫)
স্পিড বোট দুর্ঘটনায় স্টান্টম্যানের স্ত্রী মারা যায় ।
সেভেন(১৯৯৫)
বৃষ্টির মাঝে ব্র্যাড পিটের জন ডো কে তাড়া করার দৃশ্য ধারণ করার সময় পিট পিছলে যায় এবং তার হাত গাড়ির উইন্ডস্ক্রিণের ভেতর চলে যায়(পরে সার্জারিও করা হয়েছিল) । মুভির আসল চিত্রনাট্যে পিটের ইনজুরি হবার কথা ছিল, কিন্তু সেটা হাতে হওয়ার কথা ছিল না ।
দি স্টান্টওম্যান(১৯৯৬)
অভিনেত্রী মিশেল ইয়ো ১৮ ফুট ওপর থেকে লাফ দিতে গিয়ে ভার্টিব্রায় আঘাত পান ।
লাভ সিরেনেড(১১৯৬)
ক্রটিযুক্ত এয়ারব্যাগের কারণে স্টান্টম্যান কলিন ড্রাগসব্যাক এর জীবনসান ।
মিঃ নাইস গাই(১৯৯৭)
জ্যাকি চান ফাইট সিনের সময় ঘাড়ে আঘাত পান ।
ব্লুজ ব্রাদারস ২০০০(১৯৯৮)
কার ক্র্যাশের শ্যুটিং এর সময় স্টান্টম্যান বব মাইনর মাথায় মারাত্নক আঘাত পান ।
ট্যাক্সি ২(২০০০)
এক স্টান্ট দৃশ্যে একটি গাড়ির একটি কার্ডবোর্ডের উপর এসে পড়ার কথা ছিল, কিন্তু তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় এবং বেশ কয়েকজন ক্রু আহত হন । ক্যামেরাম্যান এলান দেহের ভিতরের আঘাতের কারণে মৃত্যুবরণ করেন ও তার এসিস্ট্যান্টের দুই পা ভেঙ্গে যায় ।
পার্ল হারবার(২০০১)
মুভির সেটে জাপানীজ ফাইটার প্লেনের আদলে সাজানো একটি স্টান্ট প্লেন ক্র্যাশ করে । পাইলট গুরুতর আহত হলেও বেঁচে ফিরতে সমর্থ হয় ।
এক্সিট উন্ডস(২০০১)
কানাডার অন্টারিওতে মুভিটির একটা চেজ সিনের শ্যুটিং চলছিল । একটী ভ্যান রাস্তায় উলটে পড়ানোর শ্যুটিং হচ্ছিল, স্টান্টম্যান ক্রিস ল্যামনের নিরাপদে বেরিয়ে আসার কথা থাকলেও তার মাথা আটকে যায় । ছয় দিন পর ল্যামনের মৃত্যু ঘটে ।
মোলিন রৌগ!(২০০১)
নিকোল কিডম্যানের দুইটি কশেরুকায় ফাটল ধরে এবং ডান হাঁটুতে আঘাত তৈরি হয় । বাকি মুভির অনেক অংশ কিডম্যানকে বসিয়ে শ্যুটিং করানো হয় ।
ডার্ক এঞ্জেল(২০০২)
পেশাদার রেসলার এমি ডুমাস একজন স্টান্ট ডাবলের সাথে রেসলিং এর কসরত করতে গিয়ে তার ভার্টেব্রায় আঘাত পান ।
এক্স এক্স এক্স(২০০২)
অভিনেতা ভ্যান ডিজেলের স্টান্ট ডাবল হেনরি এল ও কনর একটি ঝুঁকিপূর্ন দৃশ্যের শ্যুটিং করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় পতিত হওয়ার সাথে সাথেই মারা যান ।
ওয়ারিওরস অব ভার্চুঃ রিটার্ন অফ তাও(২০০২)
অভিনেতা কেভিন স্মিথ কাজ শেষ করার পর অন্য একটি মুভি স্পটে ঘুরতে গেলে পা ফসকে মাথায় গুরুতর আঘাত পান । ১০ দিন তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয় । ১৫ ফেব্রুয়ারী জ্ঞান ফিরে আসা ব্যতিরেকেই মারা যান তিনি ।
ট্রয়(২০০৪)
একিলিসের চরিত্রে অভিনয় করা ব্র্যাড পিটের নিজের একিলিস টেন্ডনই ছিড়ে যায় । অন্যদিকে এক বডীবিল্ডিং এক্সট্রা পা ভেঙ্গে ফেলেন, পরে তার অপারেশন করা হলেও নানা জটিলতার শিকার হয়ে সেই এক্সট্রা মারা যায় ।
দি ফ্যান্টম অফ দি অপেরা(২০০৪)
যথাযথ নিরাপত্তা না থাকায় অনিয়ন্ত্রিত নিক্ষেপণের কারণে একজন কর্মী আহত হল ।
ইয়ন ফ্লাক্স(২০০৫)
শার্লিজ থেরন ব্যাকফ্লিপ পারফর্ম করার সময় ঘাড় বরাবর অবস্থানে পড়ে গেলে দুই ভার্টেব্রার মাঝখানের আর্টিকুলার ডিস্ক স্পাইনাল কর্ডের কাছাকাছি চলে যায় । ফলশ্রুতিতে শ্যুটিং ৮ সপ্তাহ বন্ধ থাকে ।
জ্যাক এস নাম্বার ২(২০০৬)
অভিনেতা রায়ান ডান একটী দৃশ্য ধারণের সময় ঘোড়ার ওপর থেকে সরাসরি নিচের কাঁধের ওপর পড়ে যান । মাসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে রক্ত জমে তা মারাত্নক আকার ধারণ করেছিল ।
ওশান’স ডেডলিস্ট(২০০৬)
স্টিভ আরুইন নিজের ডকুমেন্টারি শুট করছিলেন গ্রেট ব্যারিয়ার রীফের দিকের একটি জায়গায় । পানির নিচে শ্যুটিং করবার সময় আচমকা স্টিং রে আক্রমণ করে বসে, স্টিং রের আঘাতে বুক এফোঁড়-ওফোঁড় হয়ে “ক্রোকোডাইল হান্টার” নামে খ্যাত হতভাগ্য এই ওয়াইল্ডলাইফ এক্সপার্টের জীবনসান ঘটে ।
টপ গিয়ার(২০০৬)
গাড়ি বিষয়ক এই শো এর শ্যুটিং এর সময় রিচার্ড হ্যামন্ড মারাত্নক দুর্ঘটনার শিকার হন, তার হেলমেট মাটিতে দেবে গিয়েছিল, মাটি মুখে চোখে এসে লাগলে তার চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয় ।
দি ফাইনাল সিজন(২০০৭)
ক্যামেরা হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হন, পাইলট ও একজন প্রডিউসার মারাত্নক আহত হয় ।
চার্লি উইলসনস ওয়ার(২০০৭)
মিসাইলের অপরিকল্পিত নিক্ষেপণে একজন স্পেশাল ইফেক্ট এসিস্ট্যান্ট মারাত্নক আহত হয় ।
দ্যা ডার্ক নাইট রাইজেস(২০০৮)
ক্যামেরাম্যান কনওয়ে উইক্লিফ একটী স্টান্টকারে সাথে সাথে চলা একটি পিকয়াপ ট্রাকে থাকার সময় আকস্মিক দুর্ঘটনায় মারা যান । পিকাপ ট্রাকটি একটা নব্বই ডিগ্রী টার্ন মিস করে সরাসরি গাছের সাথে গিয়ে ধাক্কা লাগে । এটা ২০০৭ সালের ঘটনা ।
জাম্পার(২০০৮)
সেট ডিজাইনার ডেভিড রিচি সেট আলাদা করার সময় কিছু অংশের নিচে চাপা পড়ে মারা যান ।
রেড ক্লিফ২০০৮-০৯)
যে সীমার মাঝে আগুন জ্বালানোর কথা ভাবা হয়েছিল, তার মাঝে না থেকে আগুন খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে । একজন স্টান্টম্যান মারা যায় এবং আরো ছয়জন আহত হয় ।
নাইট্রো সার্কাস(২০০৯)
জনি নক্সভিল ব্যাকফ্লিপ করতে গিয়ে মারাত্নক আহত হন, ব্যাকফ্লিপ অর্ধেক হওয়া অবস্থায় দুর্ঘটনা ঘটে । মাটিতে আছড়ে পড়ার পর মটর সাইকেল তার ওপর এসে পড়ে, সংবেদনশীল অংশে মারাত্নক আঘাত পান নক্সভিল ।
তার মূত্রনালী ছিড়ে যায়, পরবর্তীতে সেখানে টিউব বসাতে হয় ।
দি হ্যাং ওভার পার্ট ২(২০১০)
অস্ট্রেলিয়ান স্টান্টম্যান ম্যাক্লিন সঠিক সময়ে মাথা গাড়ির ভেতর ঢোকাতে ব্যর্থ হওয়ায় অন্য একটি গাড়ির সাথে তার মাথার ঢাকা লাগলে ম্যাকলিন দারুণভাবে আহত হন ।
হ্যারি পটার এন্ড ডেথলি হ্যালোজ(২০১০-১১)
হ্যারি পটার এর স্টান্ট ডাবল ডেভিড একটি এক্সপ্লোশনের শটের সময় মাটীর ওপর জোরে আছড়ে পড়েন । স্পাইনাল কর্ডে মারাত্নক আঘাত পেয়ে হোমস প্যারালাইজড হয়ে পড়েন ।
ট্রান্সফর্মারসঃ ডার্ক অফ দি মুন(২০১১)
ওয়েল্ডিং এর ত্রুটির কারণে একটি স্টিল ক্যাবল গ্যাব্রিয়েলা সেডিলো নামের একজন এক্সট্রার গাড়িয়ে গিয়ে আঘাত হানে, মাথার খুলিতে আঘাত পায় গ্যাব্রিয়েলা ।
তার মস্তিস্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়, দেহের বাম পাশ কার্যত অচল হয়ে পড়ে এবং বাম চোখ বন্ধ হয়ে যায় । ২০১২ সালের মে মাসে জানা যায়, সেডিলোর পরিবার আর প্যারামাউন্টের মাঝে ১৮ মিলিয়ন ডলারে বিষয়টির সুরাহা হয়েছে ।
দি এক্সপ্যন্ডেবললস ২(২০১২)
একটি বিস্ফোরণের দৃশ্যের শ্যুটিং এর সময় একজন স্টান্টম্যান নিহত ও আরেকজন গুরুতর আহত হন । আহত স্টান্টম্যানকে পাঁচ ঘণ্টা ব্যাপী একটা অপারেশনের মাঝ দিয়ে স্থিতিশীল অবস্থানে রাখার চেষ্টা করা হয় ।
তথ্যসূত্রঃ ইন্টারনেট, উইকিপিডিয়া
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।