এক বনে আছিলো এক নাদুস শিয়াল। শিয়াল প্রজাতি সদা ও সর্বদা স্বভাবে হয় চালাক চতুর কিন্তু এই শিয়াল আছিলো সোজা বাংলায় এক আস্ত বেক্কল। শুধু বেক্কলই না হের বেক্কালমির লগে লগে সে আছিলো পিচ্চিকাল থিক্কা বেশ সাস্থ্যবান। তাই হের মা সাধ কইরা হের নাম দিসিলো নাদুস। তবে মা প্রায়ই নানা নাম ধইরে আদর কইরে তারে ডাকাডাকি কইরতো, গদুস, লালটু বালটু ভুড়িওয়ালা বেকলু চেকলু।
সবাই আমরা জানি, যার পোলা তার মায়ের কাছে অতি আদরের আর তাই মা তারে ডাকতো,
ওরে আমার বেকলু শেয়াল,
হাবলু শেয়াল, গাবলু শেয়াল,
নাদুস নুদুস গাবলা গাদুস
ভুরিওয়ালা ,পাবলো হাদুস
এই পাবলো হাদুস ডাকনের পিছে মায়ের এক গোপন ইচ্ছা আছিলো যে পোলা বড় হইয়ে পাবলো নেরুদার মত কোনো কবি হইবে। আর সেই গোপন ইচ্ছার কারণে মা নাদুস শিয়ালরে পাডাইলো পড়ালেখা কইরতে দূর দেশত।
নাদুস তো দূর দেশৎ গিইয়ে পড়া লেখা কইরবে কি চারিদিকে লাল নীল হূরি দেইখে পড়ালেখা ছাইড়ে শুধু কবিতা লিখি লিখি হের ঘর দুয়ার জানলা দরজা জামা কাপড় ভরি ফালাইলো। বহূৎ বছর পর নাদুস শেয়াল শিয়ালদাহ ইউনিভার্সিটি থেইকে পাস দিইয়ে নাকে একখান চশমা লাগাইয়ে, গালে দাঁড়ি লাগাইয়ে বনে ফিরলো। এর মাঝে শিয়ালভায়ার ভুরিখানা আরও বেশ কয়েকগুন বৃদ্ধি পাইয়েছে।
ভুরির ভারে সে হাঁটে হেইলে দুইলে। শিয়ালদাহ ইউনিভার্সিটি পাস দিইয়ে সে গায়ে একখানা তখমা লাগাই্য়েছে তার গর্তের উপর, গায়ের পান্জাবীর উপর আর নাকের চশমার উপর জ্বলজ্বল করে একখানি তকমা,
"ডঃ শিয়াল জানো্য়ার"
এখন ডঃ শিয়াল জানোয়ার সাহেবের তো আর মাটিত পা পড়েনা। সে এখন তকমার গরবে হাঁটে মাটিতে হাত দিয়ে। আর পা থাকে আকাশে। আর তার থলথলো ভুরিখানি উলটা হইয়ে ঝুলে ।
ডঃ শিয়াল জানোয়ারের আর গরবে মাটিতে পা পরেনা। সে বসি বসি ভাবে , কি হনু রে কি হনুরে। আর বনের যত বাঘ, সিংহ, হাতী ঘোড়াদের কন্যা দেখে তাহার দিকেই হা কইরে চেইয়ে থাহে আর চোখ জুলজুল কইরে কবিতা লেখে।
চোখ জুলজুল চোখ জুলজুল
চোখ দিয়া খাই তেঁতুল
বিচি ফেলি টুলটুল
আমি শিয়াল জানো্য়ার লুল।
একদিন বনের রাণী সিংহি তার সখী পরিবেস্টিত হইয়ে বনে বৈকালিক ভ্রমনে বেইরেছে আর দূর্ভাগ্যবশত লুল শিয়াল জানোয়ারের চোখে পইড়েছে।
লুল তো রাণী আর তার সখীগনকে দেইখে এই মরে সেই মরে অবস্থা। তাদের রুপের ঝলকে প্রায় কানা হবার দশা ।
এরপর থেইকে শিয়াল জানোয়ারের নাওয়া খাওয়া বন্ধ। সে সারাদিন চোখে চশমা আইটে শুধু কবিতা লিখে আর গাছে টাঙ্গায়, কবিতা লিখে আর গাছে টাঙ্গায়। তার জালায় তার পেরেক ঠুকানো কবিতা ওয়ালা গাছে সারা বন ছেইয়ে গেলো।
রাজা মশায় সিংহের কানেও তাহা গেলো। রাজা মশাই বেত্তমিজ শিয়াল জানোয়ারের বেত্তমিজির খবর পাইয়ে ক্রোধে উন্মাদ হইয়ে গেলেন। তারে ধইরে এনে সোজা .......... কেটে দিলেন......
আর মুচেলকা লিখাই নিলেন আবার যদি বেটা বেক্কল লুল মার্কা কবিতা লিখে গাছে পেরেক ঠুইকে বেড়াই তাইলে এরপর ভুড়িটা ফাসাই দিবেন তাতেও কাজ না হইলে দাঁড়িওয়ালা মুন্ডুটা স্বয়ং ঈশ্বরের কাছে পাইঠে দেবেন। শিয়াল জানো্য়ার বেচারা এইতে দারুন ভয় পেয়ে গেলো আর বাড়ি ফিরে গর্তের দরজা ভেজাইয়া কবিতা লিখে আর ছিড়ে লিখে আর ছিড়ে, তার চৌক্ষের পানিতে গর্ত ভাসিয়া গেলো রুদ্ধ দূয়ার গর্তে শিয়াল জানোয়ার ডুবিয়া মরিলো। মরনের আগে লিখিয়া গেলো...
সব ভুল ভুল সব ভুল ভুল
ফুল পাখি আর তেঁতুল
বামন আর ভুড়িওয়ালা হইয়ে আর কেউ করিওনা ভুল
বলিয়া গেছেন শিয়াল জানোয়ার লুল।
ব্লগের সকল আপুদের উৎসর্গ করা হইলো।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।