আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মুখই স্বাস্থ্যের প্রবশ পথ

ইংরেজিতে কথা আছে ‘Mouth is the gateway to health’ অর্থাৎ 'মুখই স্বাস্থ্যের প্রবেশ পথ'। দাঁতের গঠন সৌন্দর্য ও বিন্যাসের ওপর ব্যক্তিত্বও অনেকাংশে নির্ভরশীল। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, সভ্যতার ক্রমবিকাশের সঙ্গে সঙ্গে সুসিদ্ধ নরম খাবার আর নানা রকম মিষ্টি খেতে শিখেই আমাদের দাঁত হয়েছে দুর্বল রোগ-জীবাণুর ঘাঁটি। শরীরের সবচেয়ে শক্ত জিনিস দাঁত। কিন্তু এই দাঁতেরও ক্ষয় হয়, যাকে আমরা পোকায় খেয়ে যাওয়া বলি।

ডাক্তারি ভাষায় বলা হয়, 'ডেন্টাল ক্যারিজ'। আফ্রিকার আদিম জাতি ও এস্কিমোদের মধ্যে এই রোগ সবচেয়ে কম। তাই তাদের দাঁত সুন্দর ঝকঝকে মুক্তোর মতো। কিন্তু তারা যদি সভ্য মানুষের খাবার খায়, তবে তাদের মধ্যে এই রোগ দেখা যাবে। যেমন_ সুইজারল্যান্ড আলপস পর্বতের ওপর অবস্থিত গোমস নামক গ্রামগুলোতে যেসব মানুষ থাকে তাদের এই রোগ কয়েক বছর আগেও ছিল না।

কিন্তু আস্তে আস্তে আধুনিক খাবারের সঙ্গে তারা অভ্যস্ত হয়ে উঠল। ফলে তাদেরও দাঁতের ক্ষয়রোগ দেখা দিল। কিন্তু পর্বতের ওপর যেখানে রেলপথ পেঁৗছায়নি সেখানের লোকদের দাঁতের রোগ মোটেই হয়নি। আমাদের দেশে দাঁত ও মুখের প্রধান রোগগুলো হচ্ছে ডেন্টাল ক্যারিজ, মাড়ির রোগ বা পেরিওডেন্টাল রোগ, মুখের সাদা ক্ষত বা ঘা প্রধান। বিজ্ঞানীদের মতে, দেহের বেশির ভাগ রোগের প্রভাব বা লক্ষণ মুখগহ্বরে প্রথমে আসে।

যেমন_ ধরুন দেহের প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলেই মুখের ভেতরে তার নানা উপসর্গ দেখা দিতে পারে। দেহের এই ইমুইন সিস্টেম বা প্রতিরোধ ক্ষমতা আমাদের দেহকে বাইরের রোগজীবাণু থেকে রক্ষা করে। তবে এই প্রতিরোধ ক্ষমতা নানা কারণে কমে যেতে পারে। যেমন_ দেহের অন্যান্য রোগ, ওষুধের পাশর্্বপ্রতিক্রিয়া, শরীরে কৃত্রিমভাবে স্থাপিত অঙ্গগুলোর জন্য নিয়মিত ওষুধ গ্রহণ অথবা ক্যান্সার রোগীদের জন্য নিয়মিত গ্রহণ করা কেমোথেরাপি ইত্যাদি। তা ছাড়া দেহের অন্যান্য রোগের জন্য গ্রহণ করা নিয়মিত ওষুধ যেমন_ ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, হৃদরোগ, হাঁপানি, পেট বা হার্টের অসুস্থতা ইত্যাদি।

এসব রোগের বেশির ভাগই ওঠে মুখের ভেতরে। পরিশেষে শুকিয়ে শুষ্ক করে দেয়। ফলে দেখা দেয়_ ডিহাইড্রেশন বা যাকে বলা হয় ড্রাই মাউথ। মুখের এই শুষ্কতার জন্য দেখা দেয় নানান রোগ। যেমন ডেন্টাল ক্যারিজ বা দন্তক্ষয়, সেই সঙ্গে জীবাণু বা ব্যাকটেরিয়ার বিস্তারও ঘটে।

এর ফলে মুখের স্বাদ বা টেস্ট নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ডেন্টিজ বা দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ মুখ পরীক্ষা করার সময় এমন অনেক রোগও শনাক্ত করেন। যেসব রোগের উপস্থিতি রোগী নিজেও বুঝতে পারে না। এসব লক্ষণ দেখা দেওয়া মাত্র ডেন্টিস্ট কখনো কখনো অন্যান্য মেডিকেল বিশেষজ্ঞের কাছেও রেফার করেন। কারণ দেহের অনেক রোগই মুখের ভেতরে প্রাথমিক সমস্যা হিসেবে দেখা দেয়।

তাই মুখের স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন

নিতে হবে। কোনো অবস্থাতেই অবহেলা করা যাবে না।

লেখক : অধ্যাপক, ডিপার্টমেন্ট অব ডেন্টিস্ট্রি, বারডেম হাসপাতাল। ফোন : ০১৮১৯২১২৬৭৮।

 

 

 



সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.