আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পুরো মুখই তো হলুদ, কোথায় লাগাই??

প্রতিনিয়ত নতুন করে চিনছি নিজেকে, চারপাশের সবাইকে...

অনেকদিন পর দাওয়াত পেলাম বিয়ের। মনে মনে ভাবছিলাম, কতদিন কেউ বিয়ের দাওয়াত দেয়না। আমার এক দোস্ত বিয়ে করছে অবশ্য কয়দিন আগে। আমারে দাওয়াত দেয়নাই। আমারে দাওয়াত দিয়া নাকি ওর দাম্পত্য জীবনের সুখ নষ্ট করতে চায়না।

বুঝলাম না, আমি ওর বৌকে দেখলে, কিংবা ওর বৌ যদি আমাকে দেখে, তাহলে দাম্পত্য জীবনের সুখের হানি হবে ক্যান? যাই হোক, দাওয়াত যখন পাইছি, গেলাম বাড়ীতে। আমার খালাত ভাইয়ের বিয়ে। গায়ে হলুদের দিন। এখানে বলে রাখি, আমি খুব লাজুক টাইপের ছেলে, মেয়েদের সাথে কথা বলতে গেলেই লজ্জায় লাল হয়ে যাই, যদিও উজ্জ্বল ফর্সা নই বলে অতটা বুঝা যায়না। হঠাৎ কি মনে হলো, ভাবলাম সবার আগে কনে আমিই দেখব।

সবাই মাইক্রোতে যাবে। আমি আগেই চলে গেলাম মোটর সাইকেলে। মেয়েদের দোতলা বাড়ী। জীবনেও আসিনি এই বাড়ীতে। কিন্তু সোজা ঢুকে গেলাম, কোন সংকোচ না করেই।

নিচতলায় লোকজন তেমন একটা দেখলাম না। চলে গেলাম দোতলায়। গিয়ে দেখি একটা রুমে উজ্জ্বল আলোকসজ্জা আর অনেক ভীড়। বুঝলাম এখনেই কনে অপেক্ষা করছে আমার জন্যে!! গেলাম রুমের মধ্যে। ঢুকে বললাম কনে দেখব।

অনেকটা ঘোষনার মত। কাউকে চিনিনা। আমাকেও চিনেনা কেউ। কেউ একজন বলল, এখন দেখা যাবেনা, সাজানো হচ্ছে, কতক্ষণ পর স্টেজে বসলে তখন দেখবেন। আমি বললাম, তখন দেখার ইচ্ছা থাকলে তো আর এখন আসতাম না, এখনই দেখব।

এরকম যখন তর্ক করছিলাম, হঠাৎ খেয়াল করলাম, কনেকে যেখানে সাজাচ্ছে, তার সামনে একটা ড্রেসিং টেবিল, ঐটার আয়না দিয়ে কনে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। আমার চোখ পড়া মাত্রই সরে গেল। আমি বললাম, সরলেন কেন, দেখি একটু ওদিকে ঘুরেন, আমি দেখি। কিন্তু সে কোনভাবেই ঘুরবেনা। আমি এবার ভীড় সরিয়ে গেলাম এক্কেবারে কনের সামনে।

যদিও নিজেই বুঝতে পারছিলামনা আমি এত কিছু করছি কিভাবে, যে আমি মেয়েদের সামনেই পড়িনা!!! কনের সামনে যাওয়ার সাথে সাথে তিনি তো লম্বা ঘোমটা দিয়ে মুখ নিচু করে ফেললেন। বললাম, মুখ তোলেন। জবাব আসল, বোনাস দেন। ঠিক আছে, দিচ্ছি বোনাস, কয়েন বের করলাম একটা, হাতে ধরিয়ে দিলাম, কিন্তু মুখের দেখা নাই। কয়েনটা আবার পকেটে রাখলাম, হঠাত নিজেই দুই হাত দিয়ে কনের মুখ ধরে তুলে ধরলাম, দেখলাম।

কি দেখলাম জানিনা। কিন্তু আমি হতবাক হয়ে গেলাম, আমি কিভাবে পারলাম!!! যাই হোক, কোন মতে নিচে নেমে আসলাম। ততক্ষণে সবাই এসে গেছে। আর কিছুক্ষণ পরেই কনে বসল হলুদের আসরে। সবাই তার মুখে হলুদ মাখছে, আর একটু করে কিছু একটা খাওয়াচ্ছে।

ভিডিও হচ্ছিল। আমার পালা। আমি গেলাম, কনে নিচু গলায় বলছেন, বোনাসের কথা ভুলিনাই কিন্তু, আদায় করেই ছাড়ব। আমি বললাম, জ্বী আচ্ছা, দেখা যাবে, কিন্তু আপনার পুরো মুখেই তো হলুদ, আমি লাগাই কোন জায়গায়? খুঁজে দেখলাম, তার ঠোঁট তখনো হলুদ হয়নি। বললাম, আপনার ঠোঁট বাকী আছে, ওখানেই লাগাই।

কনে বলছে মিনমিন করে, ভালো হবেনা বলছি। কে শোনে কার কথা। আঙ্গুলের ডগায় হলুদ নিয়ে আলতো করে লাগিয়ে দিলাম কনের নিচের ঠোঁটে!!!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.