রাজধানীসহ সারাদেশে সরকারী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেছে। সংঘাত, সহিংস তাণ্ডব ও ভাংচুরের ঘটনায় এ পর্যন্ত সারাদেশে পুলিশসহ প্রায় ৩০০ আহত হয়েছে। সহিংসতার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকার দায়ে ১১০ জনকে আটক করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের সুপারভাইজর হিসেবে সংজ্ঞায়িত না করে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে পদবী নির্ধারণসহ মোট তিনটি দাবিতে ক’দিন ধরে দেশব্যাপী আন্দোলন শুরু করে পলিটেকনিকের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। অন্য দুটি দাবি হলো ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের পদন্নোতি কোটা ৩৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করা এবং বেতন বৈষম্য দূর করা।
একটি গণতান্ত্রিক দেশে যে কোন বিষয়ে আন্দোলন ও বিক্ষোভ করার অধিকার নাগরিকদের রয়েছে। সরকারী, বেসরকারী, সামাজিক যে কোন বিষয়ে আন্দোলন বা প্রতিবাদ তারা করতে পারে। এটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার অত্যন্ত ইতিবাচক একটি দিক। কিন্তু গণতান্ত্রিক অধিকারের নেতিবাচক প্রয়োগ মঙ্গলের চেয়ে বরং অমঙ্গলই ডেকে আনতে পারে। একটি প্রশ্ন অনেকের মনে জেগেছে, যখন একাত্তরের কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রম চলছে এবং একের পর এক বিচারের রায় ঘোষণা করা হচ্ছে, ঠিক তখনই পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীদের এমন ভয়াবহ তা-ব শুরু হলো কেন? কারণ এই তা-বের সঙ্গে অন্যকিছুর যোগসাজশের খবর শোনা যাচ্ছে।
যার ফলে স্বভাবতই মনে হতে পারে, এই আন্দোলনের পেছনে একটি বড় ধরনের ষড়যন্ত্র রয়েছে।
গত রবিবার কুমিল্লা শহরের কোটবাড়ি এলাকার পলিটেকনিকের ছাত্রদের বিক্ষোভের সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গড়ি ভাংচুর, পুলিশের গাড়িতে আগুন এবং পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তারা এই ঘটনার সঙ্গে জামায়াত-শিবির চক্রের জড়িত থাকার কথা বলেছেন। তাদের এ বক্তব্যকে যুক্তিসঙ্গত মনে করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। কারণ জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসীরা এর আগেও আন্দোলনের নামে পুলিশের ওপর ব্যাপক হামলা চালিয়েছে।
এ ধরনের হামলার মাধ্যমে তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দমিয়ে রাখতে চায় ও সামাজিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে চায়। একই সঙ্গে তাদের উদ্দেশ্য, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারপ্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করা এবং বিচারের রায় কার্যকর হতে না দেয়া।
কুমিল্লার পুলিশের একজন বড় কর্মকর্তা বলেছেন, ‘পুলিশের বিরুদ্ধে হামলা পরিচালনার সময় কমপক্ষে ৫ হাজার মানুষকে দেখা গেছে। পলিটেকনিকের শিক্ষার্থী এত বেশি হওয়ার কথা নয়। ’ এর আগেও দেখা গেছে জামায়াত-শিবিরের সমর্থকরা অন্য বিরোধী দলীয় সমর্থকদের সঙ্গে মিলে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছে এবং ভাংচুর ও ধ্বংসযজ্ঞে অংশ নিয়েছে।
দেশে সাধারণ নির্বাচনের আর বেশি দেরি নেই। নির্বাচন যাতে সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হতে না পারে সে লক্ষ্যে জামায়াত-শিবিরচক্র সুপরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্র করছে। তারা জঙ্গীদের মদদ দিচ্ছে। এ ধরনের খবর ইতোমধ্যে পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। সরকারকে অবশ্যই এই অনাকাক্সিক্ষত তা-বের বিষয়ে তদন্ত চালাতে হবে।
তাদের দাবি কতখানি ন্যায়সঙ্গত এ বিষয়ে অবশ্যই সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া দরকার। এদিকে শেষ খবরে জানা গেছে, দাবিপূরণে সরকারী সুনির্দিষ্ট আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে দেশব্যাপী চলমান আন্দোলন ১৫ দিনের জন্য স্থগিত করেছেন পলিটেকনিকের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।