কিছুদিন আগেই বাজারে এসেছে স্যামসং গ্যালাক্সি গিয়ার স্মার্ট ঘড়ি, তবে প্রত্যাশা অনুযায়ী এর জনপ্রিয়তা অনেক কম। আজ আমরা দেখার চেষ্টা করব কেন এই স্মার্ট ঘড়ি বাজার পাচ্ছে না!
রথমেই ক্ষমতার বিষয় বিচার করলে দেখা যায় স্যামসং গ্যালাক্সি গিয়ার স্মার্ট ঘড়ি কখনোই স্মার্ট ফোনের বিকল্প হতে পারে না। যেমন আমরা সাধারণত স্মার্ট ফোনের মাধ্যমে ফোন কল, ছবি তোলা, নানান রকমের অ্যাপ ব্যবহার, SMS, Voice SMS, ম্যাপ দেখা, GPS ব্যবহার, গেমস খেলা, আবহাওয়া সংকেত দেখা সহ আরও অনেক কাজ করতে পারি, কিন্তু স্যামসং গ্যালাক্সি গিয়ার স্মার্ট ঘড়ির সাহায্যে এতো সব কাজ করা সম্ভব নয়। এতে কেবল SMS, Voice SMS, ফোন কল ইত্যাদি করা যাবে। এতে ছবি তোলা গেলেও তার বিষয়ে পরে আলোচনা করব।
ব্যবহারের দিক দিয়ে বিবেচনা করলে স্যামসং গ্যালাক্সি গিয়ার স্মার্ট ঘড়ি মোবাইলের বিকল্প হতে পারবে না কারণ এটি মোবাইলের অর্থাৎ স্মার্ট ফোনের সাহায্যে চলবে এমন একটি বিশেষায়িত যন্ত্র মাত্র। অর্থাৎ, স্মার্ট ফোন ছাড়া এটি সম্পূর্ণ অচল!
প্রথম দিকে স্যামসং তাদের গ্যালাক্সি গিয়ার স্মার্ট ঘড়ির সাইজ ১.৬ ইঞ্চি করেছিল। পরে এটি আরও সংস্কার করে ৬ রঙের তৈরি করা হয়। এর সর্বশেষ সংস্করণ চলবে কেবল মাত্র স্যামসং গ্যালাক্সি নোট ৩ এর সাথে। স্যামসং গ্যালাক্সি গিয়ার স্মার্ট ঘড়ির মূল্য ৩০০ ডলার এবং স্যামসং গ্যালাক্সি নোট ৩ এর মূল্য ৩০০ ডলার।
অর্থাৎ, আপনি যদি স্যামসং গ্যালাক্সি গিয়ার স্মার্ট ঘড়ি কিনতে চান, তবে আপনাকে অবশ্যই আরো ৩০০ ডলার খরচ করে স্যামসং গ্যালাক্সি নোট ৩ কিনতে হবে। ফলে ৬০০ ডলার অনেকেই খরচ করতে চাইবে না, যেখানে কেবল ৩০০ ডলারের একটি স্মার্ট ফোন ডিভাইস দিয়ে সব কাজ করা সম্ভব তবে বাড়তি ৩০০ ডলার কেনই বা খরচ করবে মানুষ!
এবার আসি স্যামসং গ্যালাক্সি গিয়ার স্মার্ট ঘড়ি দিয়ে আপনি যা যা সুবিধা পাবেন বলে বলা হয়েছে তার কিছু সমস্যার কথায়। মূলত আপনি স্যামসং গ্যালাক্সি গিয়ার স্মার্ট ঘড়ি দিয়ে ইমেইল নোটিফিকেশন, SMS বার্তা, ফেসবুক নোটিফিকেশন জানতে পারবেন, তবে সম্পূর্ণ ইমেল কিংবা নোটিফিকেশান এখানে আপনি পাবেন না যেমন কে আপনাকে ইমেইল পাঠিয়েছে এবং ঐ মেইলের বিষয় বস্ত কি ইত্যাদি। তবে প্রথম কিছু লাইন পড়তে পারলেও সম্পূর্ণ ম্যাসেজ পড়তে আপনাকে অবশ্যই পকেট থেকে আপনার স্মার্ট ফোনটি বের করতেই হবে।
আপনি স্যামসং গ্যালাক্সি গিয়ার স্মার্ট ঘড়ি দিয়ে ফোন কল রিসিভ করতে পারবেন এবং এতে থাকা স্পীকার দিয়ে কথাও বলে নিতে পারবেন, তবে আপনি যদি কোন মেলা কিংবা বাজারের কোলাহল পূর্ণ যায়গায় থাকেন তবে আপনি অবশ্যই আপনার কব্জিতে থাকা ঘড়িটি দিয়ে কথা বলতে গেলে বিরক্তিকর একটি অবস্থায় পড়বেন।
ক্যামেরার বিষয়ে বলতে গেলে, আপনি অবশ্যই চাইবেন আপনার ৩০০ ডলারে কেনা ডিভাইসে ছবি তুলতে এবং তা সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার দিতে। স্যামসং গ্যালাক্সি গিয়ার স্মার্ট ঘড়ি তাদের ফিচারে ছবি শেয়ারের বিষয় উল্লেখ করলেও শেয়ার করার সময় দেখা গেছে এটি অকার্যকর! আবার ক্যামেরা কোয়ালিটিও অনেকটাই দুর্বল – ২ মেগাপিক্সেলেরও কম!
এবার আসি স্যামসং গ্যালাক্সি গিয়ার স্মার্ট ঘড়ির ভাল কিছু দিক নিয়ে। প্রথমেই বলতে হয় এর ভয়েস মেমো সার্ভিসের কথা! এটি সবচেয়ে আকর্ষণীয় একটি দিক। এর মাধ্যমে আপনি আপনার বন্ধুদের সংক্ষিপ্ত ভয়েস ম্যাসেজ পাঠাতে পারবেন, যা ইতোমধ্যে অনেকের কাছেই জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এর আরেকটি আকর্ষণীয় দিক হচ্ছে এই ঘড়ির মাধ্যমে আপনি আপনার স্মার্ট ফোনটি কোথায় রেখেছেন তা খুব সহজেই জেনে নিতে পারবেন।
কারণ, আপনি মোবাইলে ভয়েস কমান্ড দিয়ে রাখলে স্মার্ট ঘড়িতে নির্দিষ্ট অ্যাপ ব্যাবহার করেই আপনি জেনে যাবেন কোথায় আপনার স্মার্ট ফোনটি অবস্থান করছে।
স্যামসং গ্যালাক্সি গিয়ার স্মার্ট ঘড়ির সবচেয়ে আদর্শ ব্যবহার আপনি যখন গাড়ি কিংবা বাইসাইকেল ড্রাইভ করবেন। আপনি শর্টকাটে কোন রুপ ঝুঁকি ছাড়াই ফোন কল কিংবা ইমেইল, ম্যাসেজ দেখে নিতে পারেন। যেখানে বিশ্ব জুড়ে সড়ক দুর্ঘটনার পেছনে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন মূল কারণ মোবাইল ফোন ব্যবহার।
স্যামসং গ্যালাক্সি গিয়ার স্মার্ট ঘড়ির সব চেয়ে ভাল দিক হচ্ছে এটি অবশ্যই স্টাইলিশ।
এর ব্যবহার আপনার কব্জি এবং আপনার পারসোনালিটি অনেকটাই ফুটিয়ে তুলতে পারবে।
স্যামসং একটি শীর্ষ প্রযুক্তি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। আশা করা যাচ্ছে, স্যামসং খুব শীঘ্রই গ্যালাক্সি গিয়ার স্মার্ট ঘড়ির সকল দুর্বলতা কাটিয়ে এটিকে অন্যান্য স্মার্ট ঘড়ির থেকে আলাদা ভাবে একটি জনপ্রিয় পণ্যে পরিণত করবে।
নতুন নতুন বাংলা এসএমএস পেতে ঘুরে আসতে পারেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।