আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঝিমাচ্ছিলেন আলীম

৮৩ বছর বয়সী আলীম আলীম ছিলেন জিয়াউর রহমানের আমলের মন্ত্রী।
হত্যা ও গণহত্যার মতো অপরাধ প্রমাণিত হলেও বয়স ও পঙ্গুত্বের কথা বিবেচনায় বুধবার তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয় বিচারপতি ওবায়দুল হাসান নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।
মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইবুনালে অন্যান্য রায়গুলোতে সাধারণ মানুষের মাঝে দণ্ড নিয়ে ব্যাপক জল্পনা-কল্পনা দেখা গেলেও আলীমের রায় নিয়ে অনেকটাই নিরুত্তাপ ছিল আদালত পাড়া।
সকাল ৯টা ৪৭ মিনিটে একটি সাদা রংয়ের অ্যাম্বুলেন্সে করে আসামি আলীমকে হাই কোর্ট সংলগ্ন ট্রাইব্যুনালে আনা হয়। এরপর হুইল চেয়ারে করে নিয়ে যাওয়া হয় ট্রাইবুনালের হাজতখানায়।

এ সময় তার পরনে ছিল সাদা লুঙ্গি ও ফতুয়া।
সকাল ১০টা ৩৩ মিনিটে তাকে কাঠগড়ায় নিয়ে আসা হয়। কাঠগড়ায়ও হুইল চেয়ারেই বসে ছিলেন তিনি।
এর পরপরই এজলাস কক্ষে আসন গ্রহণ করেন তিন বিচারক।
বিচারপতি শাহিনুর ইসলাম ১৯১ পৃষ্ঠার রায়ের সংক্ষিপ্তসারের প্রথম অংশ পড়া শুরু করলে সামনের দিকে ঝুঁকে রায় শোনার চেষ্টা করতে দেখা যায় আলীমকে।

কিছুক্ষণ এভাবেই ছিলেন।
তবে কয়েক মিনিটের মধ্যে হাতের তালু মুখে দিয়ে ঝিমাতে শুরু করেন আলীম। প্রথম দিকে হঠাৎ হঠাৎ মাথা তুলে বিচারকদের দিকে তাকাতে দেখা গেলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা কমে আসে।
সোয়া ১১টার দিকে আলীমকে ঝিমাতে দেখে নুরুন্নবী নামে এক পুলিশ কাঠগড়ার প্রবেশপথ খুলে আলীমের হাত ধরে রায় শুনছেন কি না জিজ্ঞেস করেন। জবাবে আলীম ওই পুলিশ কর্মকর্তার দিকে তাকিয়ে বলেন, ‘শুনতে পাই না’।


আলীম রায় শুনতে পাচ্ছেন না বললেও তার সমান্তরাল পেছনে দাঁড়িয়েও তা স্পষ্ট শোনা যাচ্ছিলো।
১১টা ২০ মিনিটে দিকে আলীমকে সামনের দিকে ঝুঁকে পড়তে দেখা যায়। এ সময় সামনের দিকে কান একটু ঘুরিয়ে দেন, যা দেখে মনে হচ্ছিলো তিনি রায় শোনার চেষ্টা করছেন।
তবে কয়েক মিনিটের মধ্যে শরীর-মাথা পেছনের দিকে দিয়ে অর্ধ হেলানে বসেন তিনি। এ সময় হাতে থাকা স্ক্র্যাচটি থুতনির নিচে দিয়ে দুই হাত দিয়ে ধরে রাখেন।

পরক্ষণেই আবার ঝিমাতে দেখা যায় তাকে।
১১ টা ৩৫ এর দিকে ঝিমুনি কাটিয়ে নড়েচড়ে বসেন আলীম। বেশ কিছুক্ষণ তাকে এদিক ওদিক তাকাতে দেখা যায়।
১২টার কিছুক্ষণ আগে অভিযোগ পড়া শুরুর পর আবারো ঝিমানো শুরু করেন আলীম। ১২টা ২০ মিনিটের দিকে অবশ্য তাকে আবারো রায় শোনার চেষ্টা করতে দেখা যায়।

এরপর চূড়ান্ত রায়ের শেষ পর্যন্ত ওই ভাবেই তাকে থাকতে দেখা গেছে।
রায় ঘোষণা শেষ করার পর আলীম তার মেঝো ছেলে সাজ্জাদ বিন আলীমের কাছে জানতে চান- ‘কী হয়েছে?’ জবাবে ছেলে বলেন, ‘আটটাতে খালাস। বাকিগুলোতে কারাদণ্ড দিয়েছে। চিন্তা করবেন না। ’
এরপরই পুলিশ এসে সরিয়ে দেয় সাজ্জাদকে।

পরে ট্রাইবুনালের নিচতলার হাজতখানায় নিয়ে যাওয়া হয় আলীমকে।
আদালতে আলীমের দুই ছেলে সাজ্জাদ বিন আলীম এবং খালিদ বিন আলীম উপস্থিত ছিলেন। কাঠগড়া সংলগ্ন সামনের সারিতে অন্য তিনজন স্বজনকে নিয়ে বসেন সাজ্জাদ। তার সামনের সারিতে বসেন খালিদ বিন আলীম।
ফয়সাল বিন আলীম এবং সদরুল আলীম নামে আলীমের আরো দুই ছেলে রয়েছে।

সদরুল আলীম এবং একমাত্র মেয়ে কানাডা প্রবাসী। বড় ছেলে ফয়সাল বিন আলীমও বর্তমানে বিদেশে রয়েছেন।
সাজ্জাদ বিন আলীম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বাবাকে কাঠগড়া থেকে নামিয়ে আনার পর ট্রাইবুনালেই খাওয়া দাওয়া করানো হয়। এরপর তাকে ট্রাইব্যুনাল থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।


সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.