আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বেকনের তত্ত্ব, পিককের আর্গুমেন্ট, বিজ্ঞানীদের ধর্মহীনতা আর ধার্মিকদের বিজ্ঞানহীনতা



ফ্রান্সিস বেকন মানুষের চিন্তা আর মন নিয়ে চার দেবতার(Four Idols) কথা বলছেন। বাজারের দেবতা, মঞ্চের দেবতা, সমাজের দেবতা আর গুহার দেবতা। (যদিও মিডিয়া জগতের অনেক একাডেমিশিয়ান স্টুয়ার্ট হলের ‘মিডিয়া রিপ্রেজেনটেশন থিউরি’ নিয়ে লাফালাফি করেন, যার পুরাটাই বেকনের চার দেবতা তত্ত্বের প্লেজারিজম কপি) মানুষ কখনো নিজেকে বাজারের পণ্যের মত উপস্থাপন করে, কখনো সমাজের চাহিদা মত, আবার কখনো নিজে একরকম কিন্তু মঞ্চে নিজেকে অন্যভাবে জাহির করে। কিন্তু আসলটা হচ্ছে গুহার দেবতা। যখন অন্ধকার গুহায় থাকে তার সামনে দিয়ে কোন কিছুর অস্তিত্ব টের পায় সে চিন্তা করে বলে হয় এইটা মানুষ না হয় ভালুক।

এইখানেই দ্বন্ধ। নিজের মন কোনটারে সায় দে, আমি কি ভালুকেই স্থির, নাকি মানুষেই, নাকি সিদ্ধান্তহীনতায়। গবেষণার মূল গলদ এখানেই। তত্ত্বগত দিকের বাইরে চিন্তা করতে গেলে দেখি এই তত্ত্বেরই মত বিখ্যাত ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক টড পিকক তার ‘বিজ্ঞান ও ইসলামঃ অন্তিম সঙ্ঘাত’ মুসলিম বিজ্ঞানীদের সমালচনা করেছেন। তিনি তাঁর আর্টিকেলে বুঝাইতে চাইলেন ‘প্র্যাক্টিসিং মুসলিমরা নাকি গবেষণায় একধরণের পক্ষপাতী আচরণ করে।

মুক্তভাবে তারা চিন্তা করতে পারেননা। গবেষণা যখন করেন, তাদের ফাইন্ডিংস আর হাইপোথেসিস আগেই সেট থাকে। যেমন কেউ চিকিৎসা বিজ্ঞানে গবেষণার কাজে মানুষের শরীরে কতটি জোড়া তা বের করতে যায়, কোরানের ভাষ্যমোতাবেক মুসলিম বিজ্ঞানিরা ৩৬০টিকেই তাদের হাইপোথসিস মানতে চায়। এর বাইরে আর যে থাকতে পারে তা বিশ্বাস করতে চায়না'। আবার হাল আমলে মুসলিম জাতির বিশাল একটা অংশ জ্ঞান-বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণায় মত্ত থাকলেও পুরো জীবন থেকে তারা ইসলামকে খারিজ করে দিয়েছে।

এছাড়া বিশাল একটা অংশ যারা এখনো ইসলামকে আঁকড়ে ধরে আছে, তারা পুরোপুরি ঔপোনিবেশিক ‘ঐতিহ্যগত জ্ঞান’এর বাইরে চিন্তা করতে চাচ্ছেন না। হুম তবে এটা ঠিক ঔপোনিবেশিক আমলের যাতাকলে নিষ্পেষিত থাকতে থাকতে জ্ঞান-বিজ্ঞানের মুলস্রোত থেকে মুসলিমরা অনেক আগেই ছিটকে পড়ে। বেকনের তত্ত্ব, পিককের আর্গুমেন্ট, বিজ্ঞানীদের ধর্মহীনতা আর ধার্মিকদের বিজ্ঞানহীনতা নিয়ে আমাদের প্রশ্ন করতে হবে। এখন চিন্তা করতে হবে নিজেদের এপিস্টিম কি হবে তা নিয়ে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.