আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

র‌্যাবও কম্বল দেয়!

ওরে নবীন, ওরে আমার কাঁচা, ওরে সবুজ, ওরে অবুঝ, আধমরাদের ঘা মেরে তুই বাঁচা বেড়িবাঁধ এলাকার মাঝি লাল মিয়া বলেন, “সারাদিন পরিশ্রম কইরা ঠাণ্ডায় কাঁপতাছিলাম, এসময় ফেরেশতার মত আইসা শীতের কম্বল দিসে র‌্যাব। র‌্যাবরা এতো ভালো মানুষ আগে বুঝি নাই। ” “মা, উঠুন”! হঠাৎ মা ডাক শুনেই শীতের কাঁপুনি বন্ধ হয়ে যায় বেড়িবাঁধের পাশে রাস্তার ঘরে শুয়ে থাকা বিলকিস বেগমের। এই ভোররাতে তাঁকে মা ডাকবে কে? পেছন ফিরে দেখেন সন্ত্রাসী-মাস্তানদের আতঙ্ক কালো পোশাক পরা র‌্যাব! শীতের সঙ্গে যোগ হয় ভয়। এবার তাঁর শরীরের কাঁপুনি আর বাঁধ ধরে না।

কিন্তু খানিক পরই ফের মা ডাকে সম্বিত ফিরে বৃদ্ধা বিলকিস বেগমের। “মা, এই শীতেতো বেশি কিছু দিতে পারছি না। এই কম্বলটা যদি রাখতেন। ” এবার কেঁদে দেন বিলকিস বেগম। কিন্তু ভয়-ডরে নয়, আনন্দে।

এতোক্ষণ পর্যন্ত যে শীতে কাঁপছিলেন বৃদ্ধা বিলকিস, খানিক বাদেই ‘র‌্যাব পোলাদের’ কম্বল পেয়ে কাঁদতে থাকেন তিনি। এই কান্না মিশ্রিত কণ্ঠেই তিনি দোয়া করলেন ‘র‌্যাব পোলা’দের জন্য; “আল্লাহর কাছে বহুত দোয়া করি, আল্লাহ র‌্যাবের অনেক ভালা করুক। ” শনিবার মধ্য রাত সাড়ে বারোটার দিকে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)-৪ এর কর্মকর্তারা বেরিয়ে পড়েন অসহায়, দুস্থ, ছিন্নমূল শীতার্ত মানুষদের শীত তাড়ানোর অভিযানে। মিরপুর মাজার রোড, বেড়িবাঁধ ও গাবতলী বাস টার্মিনাল এলাকার অসহায়, দুস্থ, ছিন্নমূল মানুষদের মাঝে বিতরণ করেন ৫০ হাজার টাকা মূল্যমানের কম্বল ও শীতের অন্যান্য বস্ত্র। শীতে কাঁপতে থাকা বস্তি, রাস্তার অস্থায়ী কুঁড়েঘরে গিয়ে ‘মা, খালা, বোন, বাবা, ভাই’ এমন মায়াবী ডাক দিয়ে স্বহস্তে দিয়ে আসেন শীতের কাপড়।

কম্বল পেয়ে বৃদ্ধ বিনুদ বলেন, “আগে ভাবতাম র‌্যাব খালি চোর-ডাকাতগো লইয়াই ব্যস্ত থাকে। আইজ বুঝলাম র‌্যাব সবারে নিয়াই চিন্তা করে। তাগোর জন্য লাখ লাখ দোয়া। ” বেড়িবাঁধ এলাকার মাঝি লাল মিয়া বলেন, “সারাদিন পরিশ্রম কইরা ঠাণ্ডায় কাঁপতাছিলাম, এসময় ফেরেশতার মত আইসা শীতের কম্বল দিসে র‌্যাব। র‌্যাবরা এতো ভালো মানুষ আগে বুঝি নাই।

” শীতবস্ত্র পেয়ে বেড়িবাঁধ এলাকার কুলসুম বলেন, “র‌্যাবও কম্বল দেয়! মনে অয় স্বপ্নে দেখতাছি। ” নিজেদের শীতবস্ত্র বিতরণ নিয়ে র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল কিসমাত হায়াত বাংলানিউজকে বলেন, “আমরাও তো মানুষ! অন্য মানুষের কষ্ট দেখেতো কষ্ট হবেই! তাই আমাদের ব্যক্তিগত অনুদান ও সংগঠনের পক্ষ থেকে সামান্য এই শীতবস্ত্র বিতরণ করেছি। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, এই অসহায় মানুষগুলির মলিন মুখে হাসি দেখে অনেক ভালো লাগছে। ” কিসমাত হায়াত বলেন, “আমরা এ ধরনের প্রয়াস আরও চালিয়ে যাবো। র‌্যাব সাধারণ মানুষের পাশে থাকবে সবসময়।

এ ধরনের কর্মসূচি তারই তার প্রমাণ। ” শীতবস্ত্র বিতণের সময় আরও উপস্থিত ছিলেন র‌্যাব-৪ এর উপঅধিনায়ক লে. কমান্ডার তানভীর আহম্মেদ, স্পেশাল কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার মিরান, অপারেশন অফিসার ক্যাপ্টেন মোস্তাফিজ, এডজুটেন্ট এএসসি মেসবাহ, এএসসি কেনেট রোজারিও, এএসসি রিয়াজ এবং র‌্যাব-৪ এর অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ। কার্টেসি >> জেসমিন পাঁপড়ি, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।