একটি অসাধারণ ছবি অনেক সময় মানুষের মনে দাগ কাটতে পারে। সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটে একটি অসাধারণ ছবি হূদয় ছুঁয়ে যেতে পারে অনেকেরই। সাধারণত চিকিত্সার জন্য অর্থ সংগ্রহ বা এমন কোনো উদ্দেশে কেউ কেউ এমন ছবি ব্যবহারও করে থাকেন। কিন্তু সেই ছবিই যে প্রতারণার বস্তু হিসেবে ব্যবহূত হতে পারে, এটা হয়তো জানেন না অনেকেই। এ ধরনের ছবি ব্যবহার করে অসত্ উদ্দেশ্য সাধনের ঘটনা এখন আর নতুন কিছু নয়।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে তো বটেই, খোদ যুক্তরাষ্ট্রেই মানুষের মনে সহানুভূতি জাগে এমন ছবি ব্যবহার করে প্রতারণার জন্য ওত পেতে রয়েছে দুর্বৃত্তরা।
সম্প্রতি, যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় অঙ্গরাজ্যে দুই বছর বয়সী সেরফিনার ক্ষেত্রে এমন একটি ঘটনাই ঘটেছে।
শিশু সেরফিনা হূদরোগে আক্রান্ত। তার মিষ্টিমুখের ছবিটিই নিজেদের অসত্ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য বেছে নেয় দুষ্টচক্র। সম্প্রতি হাফিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
হূদযন্ত্রের চিকিত্সা চলার সময় সেরফিনার বাবা মেয়ের একটি ছবি তুলেছিলেন। ছবিটি তিনি পোস্ট করেছিলেন সামাজিক যোগাযোগের আরও এক ওয়েবসাইট রেডিটে। কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে নয়। চিকিত্সা চলতে থাকা মেয়ের ছবিটি তিনি দিয়েছিলেন ব্যক্তিগত প্রয়োজনেই। কিন্তু তিনি জানতেন না, তাঁর মেয়ের ছবি যে ব্যবহূত হচ্ছে দুর্বৃত্তদের ঘৃণ্য উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য!
সেরফিনার বাবা শন মারফি পরে যখন ফেসবুকে একটি অ্যাকাউন্ট খুলতে যান, তখনই তাঁর নজরে পড়ে সেরফিনার সেই ছবিটি ফেসবুকে আলোড়ন তুলেছে।
বুকে ব্যান্ডেজ বাঁধা সেরফিনার সেই ছবিটি ফেসবুকে স্প্যাম ছড়ানোর কাজে ব্যবহার করছে দুর্বৃত্তরা। এ ছবিটিকে ব্যবহার করে দুর্বৃত্তরা লাইক সংগ্রহ ও মন্তব্য করার জন্য ফেসবুক ব্যবহারকারীদের বলছে। এ ছবিতে যত লাইক, কমেন্ট বাড়ে, ততই দুর্বৃত্তদের বিজ্ঞাপন থেকে আয় বাড়বে। এ ছাড়া সেরফিনার চিকিত্সার কথা বলেও অর্থ সাহায্য চাওয়া হয়। সেরফিনার ছবিটি ফেসবুকে ৪৩ লাখ লাইক পায় এবং ৬১ হাজার শেয়ার হয়।
এ ঘটনার পর শন মারফি দুর্বৃত্তদের টেক্কা দিতে ভিন্ন পথে হাঁটেন। সেরফিনার ছবিটির জনপ্রিয়তা কাজে লাগানোর পরিকল্পনা করেন তিনি। ফেসবুকে তিনি সেরফিনার ছবিটি যাঁরা লাইক করেছেন, তাঁদের কাছে সরাসরি হাসপাতালের উন্নয়নে সাহায্য করতে বলেন তিনি। বর্তমানে সেরফিনা ওপেন হার্ট সার্জারির পর সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেছে বলেই জানান তাঁর বাবা শন মারফি।
ফেসবুকে ছবি-সংক্রান্ত প্রতারণা বাড়ছে
ফেসবুকে অনেক সময় তারকাদের ছবি, কোনো ঘটনা, অসুস্থ বা জখম শিশুদের ছবি পোস্ট করে ‘লাইক’ বা ‘শেয়ার’ করার জন্য অনুরোধ করা হয়।
এ ছাড়া দুর্বৃত্তরা সুন্দরী মেয়েদের প্রোফাইল ছবি ব্যবহার করে, ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে সেখান থেকে স্প্যাম ছড়াতে পারে।
অনেক সময় ফেসবুক ব্যবহারকারীদের কাছে ছবিতে লাইক দেওয়া, সহজে অর্থ আয় করা, ওজন কমানোর পরামর্শ বা বিস্তারিত জানার জন্য আবেদন আসে। এমনকি ফেসবুকের মেসেজ অপশনে অচেনা কারও কাছ থেকে এমন বার্তা আসে, যাতে বিভিন্ন লিংকে ক্লিক করতে বলা হয়।
ইন্টারনেট নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা বলছেন, মানুষের আবেগকে কাজে লাগাতে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটে দুর্বৃত্তরা তত্পর। ফেসবুক লাইক সংগ্রহ করে কোনো সাইটের ভিজিটর বাড়ায় দুর্বৃত্তরা।
এ ছাড়া অনেক সময় ফেসবুকের ফ্যানপেজ কেনাবেচা চলে। ফ্যানপেজে যত বেশি লাইক থাকে, তার দাম তত বেশি।
ফেসবুকে এ ধরনের গুজব, স্প্যাম বা আপনাকে ট্যাগ করা ছবির বিরুদ্ধে আপনি ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে জানাতে পারেন। ছবিতে ক্লিক করলে নিচের দিকে অপশন নামের একটি ফিচার রয়েছে। এই অপশন ফিচার থেকে আপনি এ ধরনের ছবির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবেন।
ফেসবুকে ছয় ধরনের পোস্টে ক্লিক নয়
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।