আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওডিশায় ঘূর্ণিঝড় ফাইলিনের ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ

ভারতে ১৪ বছরের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘ফাইলিন’ ওডিশা ও অন্ধ্র প্রদেশ রাজ্যে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। যদিও যথাযথ পূর্বপ্রস্তুতি থাকায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে একেবারে সীমিত সংখ্যায়। এতে নিহতের সংখ্যা ২৩ বলে দেশটির গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে। তিন থেকে সাড়ে তিন মিটার উঁচু সামুদ্রিক ঢেউ নিয়ে শনিবার ভারতের বঙ্গোপসাগরের উপকূলবর্তী এলাকায় আছড়ে পড়ে ফাইলিন। এর কিছু আগে থেকেই ঝোড়ো বাতাসের প্রভাবে গাছপালা উপড়ে পড়ে ওই অঞ্চলে।

গাছচাপা পড়ে ও দেয়াল ধসে ওডিশায় সাতজনের মৃত্যু হয়। এর আগে ১৯৯৯ সালের ‘সুপার সাইক্লোন’-এ প্রায় ১০ হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটেছিল। এবারের ঘূর্ণিঝড়টিও ওই সুপার সাইক্লোনের চেয়ে কোনো অংশে কম ছিল না। তবে সে রকম প্রাণহানির ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে, সে জন্য সচেষ্ট ছিল ভারতের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ। ফাইলিন আঘাত হানার আগেই উপকূলীয় অঞ্চল থেকে আট লাখের বেশি লোককে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়।

সংখ্যার বিচারে এটা ভারতে দুর্যোগের সময় মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার সবচেয়ে বড় ঘটনা। ভারতের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বাহিনী গতকাল (এনডিআরএফ) জানায়, ওডিশা ও পাশের অন্ধ্র প্রদেশে শনিবার ফাইলিন আঘাত হানার সময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটারের বেশি। এনডিআরএফের প্রধান কৃষ্ণ চৌধুরী বলেন, ‘ওডিশা ও অন্ধ্র প্রদেশে উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা শুরু করে দিয়েছে আমাদের দলগুলো। ’ওডিশা রাজ্যের রাজস্ব ও দুর্যোগবিষয়ক মন্ত্রী এস এন পাত্র জানান, ঘূর্ণিঝড় রাজ্যে সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছে। যে ২৩ জন নিহত হয়েছেন তার ২১ জনই ওডিশা রাজ্যের।

রাজ্যের রাজধানী ভুবনেশ্বরে হাজার হাজার গাছ উপড়ে পড়েছে। গাছচাপা পড়ে সেখানে চারজনের, মাটির ঘরের দেয়াল ধসে একজনের এবং অন্যান্য কারণে আরও দুজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
ওডিশার জ্যেষ্ঠ উদ্ধার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শনিবার সন্ধ্যায় ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানার আগেই রাজ্যের আট লাখ ৬০ হাজারের মতো মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়। এ ছাড়া অন্ধ্র প্রদেশে এক লাখের মতো মানুষ বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেয়। এসব মানুষের বেশির ভাগই রাত কাটিয়েছে বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে।

অনেকে বিভিন্ন স্কুল ও মন্দিরে আশ্রয় নেয়। ভারতের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের (এনডিএমএ) মতে, দেশের ইতিহাসে এটা সবচেয়ে বেশিসংখ্যক লোকের নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার ঘটনা।
এনডিএমএর একজন মুখপাত্র জানান, এর আগে সবচেয়ে বেশি মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটে ১৯৯০ সালে। সে সময় ঘূর্ণিঝড়ের কারণে অন্ধ্র প্রদেশে কয়েক লাখ মানুষকে বাড়ি থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।
তবে গাছ পড়ে এবং অন্যান্য কারণে যোগাযোগব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত তথ্য এখনো পাওয়া যাচ্ছে না।

এনডিএমএর ভাইস চেয়ারম্যান মারি শশীধর রেড্ডি বলেন, ‘গোপালপুরে (ওডিশার একটি শহর) বাতাসের গতিবেগ আজ (গতকাল রোববার) সকাল আটটায় ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটারে নেমে আসে। আমরা এখনো দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করার চেষ্টা করছি। ’
গতকাল এশিয়ার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তিনটি বড় ধরনের ঘূর্ণিঝড়ের একটি ছিল ‘ফাইলিন’। এটি ছাড়াও গতকাল কিছুটা দুর্বল ঘূর্ণিঝড় ‘নারি’ ভিয়েতনাম এবং ঘূর্ণিঝড় ‘উইফা’ প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকার ওপর দিয়ে বয়ে যায়। পিটিআই, এএফপি ও রয়টার্স।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।