আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঝিমিয়ে পড়েছে ‘গণজাগরণ মঞ্চ’



বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা : এক সময়ের আলোড়ন সৃষ্টিকারী গণজাগরণ মঞ্চ এখন অনেকটাই নীরব নিথর প্রাণহীন। এক কথায় যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ বিচারের দাবিতে টানা আন্দোলনের রাজপথের এই সৈনিকদের এখন দেখা মেলছে না প্রজন্ম চত্বর খ্যাত শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের কোথাও। বিভিন্ন রায় ও বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের হরতাল প্রতিরোধের ঘোষণা থাকলেও বাস্তবে এখন আর দেখা মিলছে তারুণ্যের সেই উম্মাদনাকে। টানা তিনদিনের বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের হরতাল চললেও রাজপথে দেখা মিলেনি এই নতুন প্রজন্মের নামে জেগে উঠা গণজাগরণ মঞ্চের তরুণদের। কোথায় আছে? কেমন আছে? তারও পুরো হদিস মিলছে না শাহবাগের অনেক নেতৃত্বের।

হঠাৎ করেই যেন শাহবাগে ঘুমিয়ে পাড়িয়ে নিজেরাও দিব্যি ঘুমাচ্ছে। কোন কর্মসূচি নেই, নেই প্রতিবাদ বা প্রতিরোধ। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ফেরি করে আওয়ামী লীগের রাজনীতির হাতকে শক্ত করতে মাঠে নামা এই গণজাগরণ মঞ্চ কোথায় গেলো সেই প্রশ্নের বেড়াজালে এখন সাধারণ মানুষও। আওয়ামী লীগ-এর ক্ষমতার শেষ পর্যায়ে এমন করে রাজপথ থেকে নিজেদের সড়িয়ে নেয়ার পিছনে সাধারণ মানুষ আঙ্গুল তুলেছেন এই আন্দোলনের যৌক্তিকতা নিয়ে। তারা এখন সময়ের প্রেক্ষিতে মনে করছেন আদৌ ওই সময় আন্দোলনের দরকার ছিলো কি-না।

সাধারন জনগণ মনে করেন, নিজেদের পিঠ বাঁচাতে আগে থেকেই সটকে পড়েছে এই গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনকারীরা। গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে জামায়াত-শিবিরের এমন কোনো হরতাল বা বড় কর্মসূচি ছিল না যা শাহবাগের আন্দোলনরতরা ‘প্রতিহতের’ ঘোষণা দেয়নি। যদিও ঘোষণা দিয়ে বেশিরভাগ সময় নিজেদেরই পুলিশ বেষ্টিত হয়ে মঞ্চে আসাতে হয়েছে। আবার কখনও সকালে জামায়াতবিরোধী কর্মসূচির ঘোষণা দিয়ে লোক জোগাড় করতে না পেরে বিকালে হাতেগোনা ক’জনের মাধ্যমে তা পালন করেছে। তবে এতদিন অন্তত মাঠে থাকার ঘোষণায় কোনো কমতি না তাদের, গত ক’দিন ধরে তারা আর এমন ঘোষণাও দিচ্ছে না।

ফেসবুক আর ব্লগেও এখন আর চেতনাধারী ‘স্ট্যাটাস’-এর ঝড় উঠছে না। এই বিষয়গুলো নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের সাইট ফেসবুকেও ঝড় উঠছে। এক ফেসবুক ব্যবহারকারী মন্তব্য করেছেন, ‘বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া ২৫ অক্টোবর সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার ঘোষণা দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে শাহবাগিদের চেতনারও মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে!’ ২৫ অক্টোবর আগের ঘোষণা অনুযায়ী ঢাকায় ১৮ দল সমাবেশ করার ব্যাপারে অটল থাকলে সরকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুমতি দিতে বাধ্য হয়। এ উদ্যানটি শাহবাগ সংলগ্ন হওয়ায় অনেকে ধারণা করেছিলেন শাহবাগিরা হয়তো এখানে জামায়াত-শিবিরের আগমন প্রতিহতের ঘোষণা দিতে পারে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল উল্টো চিত্র।

শাহবাগিদের পক্ষ থেকে এমন কোনো ঘোষণা এলো না। বরং ২৫ অক্টোবর সকাল থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দখল নেয় শিবির। এরপর দুপুর থেকেই শিবির নেতাকর্মীরা শাহবাগে অবস্থান নেয়। সেখানে সরকারদলীয় এবং প্রধানমন্ত্রীর ছবি সংবলিত একাধিক বিলবোর্ড-ব্যানার ভেঙে ও ছিড়ে ফেলা হয়। তারা সেখানে শাহবাগিদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগানও দেয়।

এদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত শাহবাগের দখলে ছিল শিবির। কিন্তু এ সময় শাহবাগিদের সন্ধান পাওয়া যায়নি কোথাও। এরপর ফেসবুক বা ব্লগেও এ প্রসঙ্গ নিয়ে তাদের কোনো কথা বলতে দেখা যায়নি। জনগনের অসংখ্য প্রশ্ন আর তারুণ্যের আন্দোলনের এমন অবস্থা নিয়ে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও সম্ভব হয়নি। শাহবাগের প্রজন্ম চত্ত্বরের ব্লগার ডা. ইমরান এইচ সরকারের ব্যক্তিগত মুঠোফোনে কয়েকবার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেন নি।

সূত্র নিউজ টাইমস২৪

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।