আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ব্রেকিং নিউজ- মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধী জামায়াতের কুখ্যাত পলাতক আলবদর নেতা বুদ্ধিজীবী হত্যার প্রধান ঘাতক চৌধুরী মঈন উদ্দীন (অপারেশন ইন-চার্জ) ও আশরাফুজ্জামান খান(প্রধান জল্লাদ)-এর ফাঁসি।

আজ তুমি অন্যের...........প্রীতি!

ব্রেকিং নিউজ......................................................ব্রেকিং নিউজ................................................ বাংলাদেশের সূর্য্য সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যা, একাত্তরে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার হীন নীলনকশা তৈরি ও তা বাস্তবায়নে মূল ভূমিকা রাখার অভিযোগে জামায়াতের পলাতক কুখ্যাত আলবদর নেতা বুদ্ধিজীবী হত্যার প্রধান ঘাতক চৌধুরী মঈন উদ্দীন (অপারেশন ইন-চার্জ) ও আশরাফুজ্জামান খান(প্রধান জল্লাদ)-এর ফাঁসি। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন বিচারপতি মোঃ মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মোঃ শাহিনুর ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ রায় দেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-এ পর্যন্ত মোট আটটি মামলায় রায় প্রদান করেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ থেকে তিনটি এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ থেকে পাঁচটি মামলায় রায় প্রদান করেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল -২ এর মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধ মামলার ষষ্ট রায় এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-এর নবম রায়।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের সূচনা বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সকাল ১১টায় রায়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়, সুচনা বক্তব্যে বলেন, “এ মামলার দুই আসামি পলাতক। রায়ের পর নিয়ম অনুযায়ী প্রসিকিউশন ও অ্যাটর্নি জেনরারেলকে রায়ের সোর্টিফায়েড কপি দেয়া হবে। আসামিপক্ষ রায়ের কপি চাইলে আগে তাদের আত্মসমর্পণ করতে হবে। ” ট্রাইব্যুনাল পর্যবেক্ষণ বলেন, জামায়াত ইসলামী একটি যুদ্ধাপরাধী সংগঠন বটেই সেই সঙ্গে একটি ফ্যাসিট সংগঠন। রায়ের দ্বিতীয় অংশে বিচারক বলেন, “আশরাফুজ্জামান খান ও চৌধুরী মুঈনুদ্দীন যে মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৮ জন বুদ্ধিজীবী হত্যায় জড়িত ছিলেন, তা প্রসিকিউশনের তথ্য-প্রমাণে বেরিয়ে এসেছে।

তারা কখনো নিজেরাই হত্যায় অংশ নিয়েছে। কখনো জোরালো সমর্থন দিয়েছে, উৎসাহ যুগিয়েছে। ” সে সময় আলবদর বাহিনীর ওপর ইসলামী ছাত্র সংঘের এ দুই নেতার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ছিল বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়। আদালত আরও বলেন, যদি সর্বোচ্চ শান্তি দেয়া না হয় তাহলে জাতির প্রতি ও স্বজনের প্রতি অন্যায় করা হবে। ১৫৪ পৃষ্ঠার এই রায়ের ৪১ পৃষ্ঠার সংক্ষিপ্তসারের প্রথম অংশ পড়া শুরু করেন বিচারপতি শাহিনুর ইসলাম।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের অপর বিচারক মোঃ মুজিবুর রহমান মিয়া রায়ের দ্বিতীয় অংশ পড়ার পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ফাঁসির রায় প্রদান করেন। (ছবি;- কালের কন্ঠ। ) তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়াঃ- * গণজাগরণ মঞ্চের বিজয় মিছিল। পরিচিতিঃ- বুদ্ধিজীবী হত্যার প্রধান ঘাতক ছিল আলবদর বাহিনীর চৌধুরী মঈন উদ্দীন (অপারেশন ইন-চার্জ) ও আশরাফুজ্জামান খান (প্রধান জল্লাদ)। অভিযুক্ত দুজন ছাত্রজীবন থেকে ইসলামী ছাত্রসংঘের সক্রিয় সদস্য হিসেবে এবং পরবর্তী সময়ে আলবদর হাইকমান্ডের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়ে স্বাধীনতাযুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান নেন।

স্বাধীনতার ঠিক আগে ১৯৭১ সালের ১১ থেকে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের ‘দায়িত্বপ্রাপ্ত’ আলবদর বাহিনীর ‘চিফ এক্সিকিউটর’ ছিলেন আশরাফুজ্জামান খান। আর চৌধুরী মুঈনুদ্দীন ছিলেন সেই পরিকল্পনার ‘অপারেশন ইনচার্জ’। * চৌধুরী মঈন উদ্দীন পিতা: মৃত দেলোয়ার হোসেন চৌধুরী ফেনী জেলার দাগনভূঞার চানপুর চৌধুরী বাড়ির (জগতপুর ফালিজেরঘাট)। * আশরাফুজ্জামান খানের (নায়েব আলী) পিতা: মৃত আজহার আলী। গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের বেজড়া ভাটরা (চিলেরপাড়)।

স্বাধীনতার পর তারা পালিয়ে প্রথমে পাকিস্তানে,পরে সেখান থেকে তারা যুক্তরাজ্যে এবং যুক্তরাষ্ট্রে যায়। বর্তমানে চৌধুরী মঈন উদ্দীন যুক্তরাজ্যে এবং আশরাফুজ্জামান খান (নায়েব আলী) যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছে। পাকিস্তানী সামরিক জান্তার পক্ষে এ হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী। আর তাকে তালিকা প্রস্তুতিতে সহযোগীতা ও হত্যাকাণ্ড বাস্তবায়নের পেছনে ছিল মূলত জামায়াতে ইসলামী কর্তৃক গঠিত কুখ্যাত আল বদর বাহিনী। বুদ্ধিজীবী হত্যার প্রধান ঘাতক ছিলেন বদর বাহিনীর চৌধুরী মঈনুদ্দীন (অপারেশন ইন-চার্জ) ও আশরাফুজ্জামান খান (প্রধান জল্লাদ)।

১৬ ডিসেম্বরের পর আশরাফুজ্জামান খানের নাখালপাড়ার বাড়ি থেকে তার একটি ব্যক্তিগত ডায়েরী উদ্ধার করা হয়, যার দুটি পৃষ্ঠায় প্রায় ২০ জন বুদ্ধিজীবীর নাম ও বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের কোয়ার্টার নম্বরসহ লেখা ছিল। তার গাড়ির ড্রাইভার মফিজুদ্দিনের দেয়া সাক্ষ্য অনুযায়ী রায়ের বাজারের বিল ও মিরপুরের শিয়ালবাড়ি বদ্ধভূমি হতে বেশ কয়েকজন বুদ্ধজীবীর গলিত লাশ পাওয়া যায় যাদের সে নিজ হাতে গুলি করে মেরেছিল। আর চৌধুরী মঈনুদ্দীন ৭১ সালে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। তিনি অবজারভার ভবন হতে বুদ্ধিজীবীদের নাম ঠিকানা রাও ফরমান আলী ও ব্রিগেডিয়ার বশীর আহমেদকে পৌঁছে দিতেন। এছাড়া আরো ছিলেন এ বি এম খালেক মজুমদার (শহীদুল্লাহ কায়সারের হত্যাকারী), মাওলানা আবদুল মান্নান (ডাঃ আলীম চৌধুরীর হত্যাকারী), আবদুল কাদের মোল্লা (কবি মেহেরুন্নেসার হত্যাকারী) প্রমুখ।

চট্টগ্রামে প্রধান হত্যাকারী ছিলেন ফজলুল কাদের চৌধুরী ও তার দুই ছেলে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং গিয়াস কাদের চৌধুরী। কুখ্যাত আলবদর নেতা চৌধুরী মঈন উদ্দীন ও আশরাফুজ্জামান খান (নায়েব আলী)- এর বিরুদ্ধে বিচারিক কার্যক্রমঃ- দ্বিত্বীয় বারের মত আসামীদের অনুপস্থিতিতে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল-২ এর রায় প্রদান এবং দ্বিতীয় মামলা। এর আগে জামায়াতে ইসলামীর সাবেক রুকন আবুল কালাম আযাদের অনুপস্থিতিতেই বিচার হয় এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে তার ফাঁসির আদেশ দেন বিচারক। পলাতক থাকায় তার ক্ষেত্রে আপিল প্রযোজ্য হবে না। একই ভাবে প্রযোজ্য হবে আলবদর নেতা চৌধুরী মুঈন উদ্দীন ও আশরাফুজ্জামান খান (নায়েব আলী) ‘র ক্ষেত্রে।

এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী ও প্রসিকিউটর সাহিদুর রহমান। আসামী পলাতক থাকায় সুষ্ঠ বিচারে স্বার্থে তাদের পক্ষে মামলা পরিচালনার জন্য রাষ্ট্রীয় খরচে আবদুস শুকুর খান ও সালমা হাই টুনিকে আইনজীবী নিয়োগ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। গত ২ মে দুজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। এর পর তাঁদের ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে দুটি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এর পরও তাঁরা হাজির না হওয়ায় গত ২৭ মে তাঁদের পলাতক ঘোষণা করেন ট্রাইব্যুনাল।

গণহত্যা, হত্যা, অপহরণ, নির্যাতনসহ পাঁচ ধরনের অভিযোগে চৌধুরী মঈনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে গত ২৫ এপ্রিল আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। তাঁদের বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯ জন শিক্ষক, ছয়জন সাংবাদিক, তিনজন চিকিৎসকসহ ১৮ জন বুদ্ধিজীবীকে অপহরণ ও হত্যার অভিযোগ আনা হয়। একই দিন তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষে ১৬টি অভিযোগ দাখিল করলেও গত ২৪ জুন ১১টি ঘটনায় অভিযোগ গঠন করার মধ্য দিয়ে তাঁদের বিচার শুরু করা হয়। এ মামলায় ১৫ জুলাই সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।

রাষ্ট্রপক্ষে মোট ২৫ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দেন। গত ২২ সেপ্টেম্বর এ মামলায় প্রসিকিউশনের সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। পলাতক এ দুই অভিযুক্তের পক্ষে কোনো সাক্ষী না থাকায় ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে এ মামলায় যুক্তি উপস্থাপন শুরু হয়। ৩০ সেপ্টেম্বর যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হয়। আলবদর নেতা চৌধুরী মুঈন উদ্দীন ও আশরাফুজ্জামান খান (নায়েব আলী) বিরুদ্ধে আনা ১১টি অভিযোগের প্রতিটিতেই আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনের ৩ (২) (এ) (জি) (এইচ) ধারা অনুযায়ী বুদ্ধিজীবী নির্মূলের পরিকল্পনা, অপহরণ ও হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে, যা মৃত্যুদণ্ডযোগ্য অপরাধ।

অভিযোগে আরো বলা হয়, অভিযুক্ত দুজন ছাত্রজীবন থেকে ইসলামী ছাত্রসংঘের সক্রিয় সদস্য হিসেবে এবং পরবর্তী সময়ে আলবদর হাইকমান্ডের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়ে স্বাধীনতাযুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান নেন। চৌধুরী মঈনুদ্দীন আলবদর বাহিনীর অপারেশন ইনচার্জ এবং আশরাফুজ্জামান খান চিফ এক্সিকিউটর বা প্রধান জল্লাদ ছিলেন। তাদের নেতৃত্বে আলবদরের একটি সশস্ত্র দল পরিকল্পিতভাবে ঢাকার বুদ্ধিজীবীদের অপহরণ করে নির্মম নির্যাতনের পর হত্যা করে। তারা বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি থেকে অপহরণের পর মোহাম্মদপুরে ফিজিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারের নির্যাতন ক্যাম্পে নিয়ে যেত। সেখানে আটকে রেখে তাঁদের ওপর নির্যাতন করা হতো।

এরপর মিরপুর ও রায়েরবাজার ইটখোলা বধ্যভূমিতে নিয়ে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে লাশ ফেলে দেওয়া হতো। অভিযোগ গুলো:- একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৮ জন বুদ্ধিজীবী হত্যার অভিযোগের প্রতিটি ঘটনায় তখনকার আলবদর নেতা আশরাফুজ্জামান খান ও চৌধুরী মুঈনুদ্দীনের সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হয়েছে বলে জানিয়েছে আদালত। ০১ নং অভিযোগ: ১৯৭১ সালের ১১ ডিসেম্বর ভোর ৩টা থেকে সাড়ে ৩টার মধ্যে আশরাফুজ্জামান খান ও চৌধুরী মুঈনুদ্দীনের নির্দেশে ৭-৮ সশস্ত্র আলবদর সদস্য সাংবাদিক সিরাজ উদ্দিন হোসেনকে চামেলীবাগে তার নিজ বাড়ি থেকে অপহরণ করে ইপিআরটিসির একটি মিনিবাসে করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গিয়ে হত্যা করা হয়। পরবর্তীতে তার মৃতদেহ পাওয়া যায়নি। ০২ নং অভিযোগ:১৯৭১ সালের ১১ ডিসেম্বর ভোর ৪টা-সাড়ে ৪টার দিকে এই দুইজনের উপস্থিতিতে আলবদর বাহিনীর ৮-১০ জন সশস্ত্র সদস্য পিপিআইর প্রধান প্রতিবেদক ও কলম্বিয়া ব্রডকাস্টিং সার্ভিসের স্টাফ রিপোর্টার সৈয়দ নাজমুল হকের পুরানা পল্টনের বাসায় জোর করে প্রবেশ করে বন্দুকের মুখে তাকে ইপিআরটিসির একটি মিনিবাসে করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে।

তার মৃতদেহও পরবর্তীতে পাওয়া যায়নি। ০৩ নং অভিযোগ: ১৯৭১ সালের ১১ ডিসেম্বর ভোর ৬টা থেকে সাড়ে ৬টার মধ্যে আশরাফ-মুঈনুদ্দীনের নির্দেশে পাঁচ-ছয়জন সশস্ত্র আলবদর সদস্য দৈনিক পূর্বদেশের প্রধান প্রতিবেদক এএনএম গোলাম মুস্তাফাকে তার গোপীবাগের বাসা থেকে দৈনিক পূর্বদেশের কার্যাশলয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ইপিআরটিসির একটি মিনিবাসে করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায় এবং হত্যা করে। তার মৃতদেহও পরবর্তীতে পাওয়া যায়নি। ০৪ নং অভিযোগ: ১২ ডিসেম্বর দুপুরে এই দুইজনের নির্দেশে সশস্ত্র আলবদর সদস্যরা পিপিআইর মহাব্যবস্থাপক ও বিবিসির প্রতিবেদক নাজিম উদ্দিন আহমেদের কলতাবাজারের বাসায় জোর করে প্রবেশ করে এবং তাকে আলবদরের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ইপিআরটিসির একটি মিনিবাসে করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে হত্যা করে। তার মৃতদেহও পাওয়া যায়নি।

০৫ নং অভিযোগ: ১৩ ডিসেম্বর দুপুরে এ দুই আসামির উপস্থিতিতে একদল সশস্ত্র আলবদর সদস্য দৈনিক শিলালিপির সম্পাদক সেলিনা পারভীনকে তার নিউ সার্কুলার রোডের বাসা থেকে বন্দুকের মুখে অপহরণ করে আলবদরের সদর দপ্তরে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ইপিআরটিসির একটি মিনিবাসে করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে হত্যা করে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে ১৭ ডিসেম্বর রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে তার মৃতদেহ পাওয়া যায়। ০৬ নং অভিযোগ:১৩ ডিসেম্বর সকাল ৮টা থেকে পৌনে ১০টার মধ্যে এই দুই আলবদর নেতার উপস্থিতিতে পাঁচ-ছয়জন সশস্ত্র সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অধ্যাপক গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, ড. সিরাজুল হক খান, ড. মো. মর্তুজা, ড. আবুল খায়ের, ড. ফয়জুল মহিউদ্দিন, অধ্যাপক রাশিদুল হাসান, অধ্যাপক আনোয়ার পাশা ও ড. সন্তোষ ভট্টাচার্যের বাসায় ঢুকে তাদের বন্দুকের মুখে একটি মিনিবাসে তুলে মিরপুরের বধ্যভূমি এলাকায় নিয়ে যায় এবং হত্যা করে। ১৬ ডিসেম্বরের পরে মিরপুর বধ্যভূমি থেকে অধ্যাপক গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, ড. মো. মর্তুজা, ড. আবুল খায়ের, অধ্যাপক রাশিদুল হাসান, অধ্যাপক আনোয়ার পাশা ও ড. সন্তোষের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। বাকি দুজনের লাশ পাওয়া যায়নি।

অভিযুক্ত আশরাফুজ্জামানের নাখালপাড়ার বাসা থেকে উদ্ধার করা তার ব্যক্তিগত দিনপঞ্জিতে ‘বুদ্ধিজীবী হত্যা’র লক্ষ্য হিসেবে অধ্যাপক গিয়াসউদ্দিন আহমেদের নাম পাওয়া যায়। ০৭ নং অভিযোগ: ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর দুপুর ১২-১টার দিকে আশরাফ-মুঈনুদ্দীনের উপস্থিতিতে ৭/৮ জন সশস্ত্র আলবদর সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকায় বাংলা বিভাগের অধ্যাপক মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরীর বাসায় জোর করে ঢুকে পড়ে। এ সময় অধ্যাপক মোফাজ্জলের ভাই তৎকালীন বাংলা বিভাগের ছাত্র চৌধুরী মাঈনুদ্দীনের মুখ ঢেকে রাখা কাপড় টেনে খুলে ফেললে তার পরিচয় প্রকাশ পেয়ে যায়। এরপর আলবদর সদস্যরা অধ্যাপক মোফাজ্জল হায়দারকে ইপিআরটিসির একটি মিনিবাসে করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে হত্যা করে। শহীদ এ বুদ্ধিজীবীর মৃতদেহ পরে আর পাওয়া যায়নি।

বাংলা বিভাগের ছাত্র আশরাফুজ্জামানের দিনপঞ্জিতেও অধ্যাপক মোফাজ্জলের নাম ছিল। ০৮ নং অভিযোগ:১৪ ডিসেম্বর দুপুর ১টা-দেড়টার দিকে এই দুই ব্যক্তির নির্দেশে তিন-চারজন সশস্ত্র আলবদর সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও নাট্যকার মুনীর চৌধুরীর সেন্ট্রাল রোডের বাসায় ঢুকে বন্দুকের মুখে তাকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে হত্যা করে। শহীদ এ বুদ্ধিজীবীর মৃতদেহ পরে আর পাওয়া যায়নি। ০৯ নং অভিযোগ:১৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টায় অভিযুক্ত দুই ব্যক্তির উপস্থিতিতে ৫/৬ জন সশস্ত্র আলবদর সদস্য দৈনিক সংবাদের যুগ্ম সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সারকে তার কায়েতটুলীর বাসা থেকে বুন্দকের মুখে অপহরণ করে এবং ইপিআরটিসির মিনিবাসে করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে হত্যা করে। শহীদুল্লাহ কায়সারের মৃতদেহ আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।

১০ নং অভিযোগ:১৫ ডিসেম্বর দুপুর ২টা-৩টার দিকে এ দুই ব্যক্তির উপস্থিতিতে আলবদর সদস্যরা চিকিৎসক মো. ফজলে রাব্বিকে তার সিদ্ধেশ্বরীর বাসা থেকে বন্দুকের মুখে মোহাম্মদপুরে শারীরিক শিক্ষা কলেজে আলবদরের সদর দপ্তরে নিয়ে যায়। সেখান থেকে রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে নিয়ে তাকে হত্যা করা হয়। স্বাধীনতার পরে ১৮ ডিসেম্বর শহীদ এ চিকিৎসকের মৃতদেহ ওই বধ্যভূমি থেকে উদ্ধার করা হয়। ১১ নং অভিযোগ: ১৫ ডিসেম্বর বিকাল সাড়ে ৩টা-৪টার দিকে সশস্ত্র আলবদর সদস্যরা দুই আসামির নির্দেশে চিকিৎসক আলিম চৌধুরীর পুরানা পল্টনের বাড়িতে ঢুকে পড়ে। ওই বাড়ির নিচতলায় আলবদরের সংগঠক মাওলানা মান্নান থাকতেন।

এরপরে তিনজন আলবদর সদস্য আলিম চৌধুরীকে বন্দুকের মুখে অপহরণ করে ইপিআরটিসির মিনিবাসে করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। স্বাধীনতার পরে রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে চোখ বাঁধা অবস্থায় পাওয়া যায় আলিমের মৃতদেহ। ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ করা কিছু চিত্র:- যুদ্ধের পরপরই রায়েরবাজার বধ্যভূমি থেকে তোলা ছবিতে বুদ্ধিজীবীদের লাশ দেখা যাচ্ছে (সৌজন্যমূলক ছবি: রশীদ তালুকদার, ১৯৭১) (মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলি, পাকিস্তানী বাহিনীর পক্ষে বুদ্ধিজীবী হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারী। ) শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা- উইকিপিডিয়া আলবদর ছিল গোপন কমান্ডো বাহিনী-কালের কন্ঠ। তথ্যসূত্র;- ১১ অভিযোগই প্রমাণিত মুঈনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামানের ফাঁসির আদেশ-প্রথম আলো।

১৯৭১ বাঙালি বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড-উইকিপিডিয়া। ১৮ বুদ্ধিজীবী হত্যায় জড়িত আশরাফ- মুঈনুদ্দীন-‍বিডি নিউজ২৪ * বুদ্ধিজীবী হত্যার ১১ অভিযোগ আশরাফ-মুঈনুদ্দীনের বিরুদ্ধে-বিডি নিউজ২৪ * মঈন-আশরাফের বিরুদ্ধে মামলার রায় আজ-কালের কন্ঠ। (পরবর্তীতে আপডেট করা হবে। )

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.