আলোচিত সুইটি কোনো বাস্তব শিশু নয়, বরং কম্পিউটারে তৈরি করা একটি কাল্পনিক ও অ্যানিমেটেড চরিত্র।
অনলাইনে মহামারীর মতো ছড়িয়ে পড়া শিশু যৌনপীড়ন সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী সচেতনতা বৃদ্ধি এবং ওই নিপীড়কদের চিহ্নিত করার উদ্দেশ্যে এক ‘আন্ডারকাভার অপারেশনে’ নেমেছিল তেরে দেস হোমস। অপারেশনের অংশ হিসেবে কম্পিউটার সফটওয়্যার ব্যবহার করে তারা কাল্পনিক শিশুচরিত্র ‘সুইটি’ সৃষ্টি করেন। ১০ সপ্তাহের অভিযানে দেখা গেছে বিশ্বব্যাপী ৭১ দেশের ২০ হাজার লোক সুইটির সঙ্গে যৌন আলাপচারিতার চেষ্টা করেছেন। এদের মধ্যে অর্থের বিনিময়ে ওয়েবক্যামের দিয়ে সুইটির সঙ্গে যৌনতায় লিপ্ত হওয়ার চেষ্টা করেন ১ হাজার লোক।
ওই ১ হাজার যৌনপীড়কের মধ্যেই আছেন ৪ বাংলাদেশি নাগরিক।
তেরে দেস হোমস ওই ১ হাজার যৌনপীড়ককে চিহ্নিত করেছে কোনো অনৈতিক পদক্ষেপ ছাড়াই। বিশেষ ওই প্রকল্পের পরিচালক হানস গুট জানান, তারা ওই যৌনপীড়কদের কম্পিউটার হ্যাক না করে বরং অনলাইনে সুইটির সঙ্গে আলাপচারিতার সময় তাদের দেওয়া ব্যক্তিগত তথ্য, ছবি এবং ওয়েবক্যামের ভিডিও কাজে লাগিয়ে গুগল, ফেইসবুকের মতো বিভিন্ন সূত্র ব্যবহার করে তাদের আসল পরিচয়, ফোন নম্বর এবং ঠিকানা নিশ্চিত করেছেন।
জাতিসংঘ এবং এফবিআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী দিনের যে কোনো সময় কম করেও হলেও সাড়ে সাত লাখ শিশু যৌনপীড়কের উপস্থিতি থাকে অনলাইনে। এই নিপীড়কদের বেশিরভাগই ধনী দেশের নাগরিক; আর এদের সম্ভাব্য শিকার শিশুদের সিংহভাগের আবাসস্থল ফিলিপাইনসহ উন্নয়নশীল দেশগুলোয়।
তেরে দেস হোমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিশুদের সঙ্গে ওয়েবক্যাম দিয়ে অনৈতিক কাজে লিপ্ত হতে আগ্রহী যৌন শিকারিরা প্রায়শই নকল নাম এবং মালিককে চিহ্নিত করা সম্ভব নয় এমন প্রিপেইড ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে থাকে।
কোন দেশের কতজন যৌনপীড়ক সুইটির সঙ্গে অর্থের বিনিময়ে যৌনতায় লিপ্ত হয়ে চেয়েছিলেন, তার একটি তালিকা প্রকাশ করেছে তেরে দেস হোমস। ওই তালিকায় ১১০ ব্রিটিশ, ২৫৪ আমেরিকান, ১০৩ ভারতীয়, ২০ পাকিস্তানি এবং সৌদি আরব ও ইরানের ১০ জন করে রয়েছেন। সংখ্যাভিত্তিক তালিকা প্রকাশ করলেও ওই যৌন শিকারিদের বিস্তারিত তথ্য জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করেনি দাতব্য প্রতিষ্ঠানটি, বরং সব তথ্য ৪ নভেম্বর ইন্টারপোলের হাতে তুলে দিয়েছে তারা।
“আমরা গুটিকয় মানুষ আর একটি কাল্পনিক চরিত্র মিলে কেবল দুমাসে যদি এক হাজার শিশুপীড়ক শনাক্ত করতে পারি তবে পুলিশ চাইলে বছরে লাখ লাখ এমন অপরাধীকে ধরা সম্ভব”-- বলা হয়েছে তেরে দেস হোমসের তৈরি ভিডিওচিত্রে।
জাতিসংঘের কল্যাণে ‘ওয়েবক্যাম চাইল্ড সেক্স টুরিজ্যম’ বিশ্বের প্রায় সবজায়গায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। যথাযথ আইনি প্রয়োগ এবং বিচারের মাধ্যমেই এই ‘মহামারী’ ঠেকানো সম্ভব হবে, এমন আশা প্রকাশ করছে শিশু অধিকার ও সুরক্ষা বিষয়ে কর্মরত নেদারল্যান্ডসভিত্তিক এই সংস্থা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।