সাতকানিয়ায় গত ১ মার্চ জামায়াত-শিবিরকর্মীদের তাণ্ডবের ঘটনায় দায়ের করা দুই মামলায় ৭৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে পুলিশ। আদালত অভিযোগপত্র দুটি গ্রহণ করার পর আসামিদের বিরুদ্ধে বিচার কাজ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। তবে ঘটনার ইন্ধনদাতা বা পরিকল্পনাকারীদের চিহ্নিত করতে পারেনি পুলিশ।
ঘটনার পরিকল্পনাকারী ও ইন্ধনদাতাদের নাম দুই মামলার অভিযোগপত্রে উঠে আসেনি কেন জানতে চাইলে গত শুক্রবার বিকেলে সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল লতিফ প্রথম আলোকে বলেন, ‘তদন্তে যাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। পরিকল্পনাকারীদের চিহ্নিত করা যায়নি।
’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অভিযোগপত্রে থাকা পলাতক আসামিদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জামায়াত নেতা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির আদেশ দেওয়ার পর গত ১ মার্চ সাতকানিয়ার ফুলতলায় তাণ্ডব চালায় জামায়াত-শিবিরকর্মীরা। তারা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালায় ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাট করে। মসজিদের মাইকে গুজব ছড়িয়ে এ হামলা চালানো হয় বলে পুলিশের তদন্তে উঠে আসে।
আদালতের সাতকানিয়া নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা (জিআরও) এএসআই লাকী খানম প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ দুই মামলায় ৭৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে গত ২২ অক্টোবর।
ওই অভিযোগপত্র দুটির ওপর শুনানি শেষে বিচার শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
পুলিশের বক্তব্য অনুযায়ী, জামায়াত-শিবিরের দুর্গ হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়ায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায়কে ঘিরে বিভিন্ন সময়ে সহিংস কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হন জামায়াত-শিবির কর্মীরা। সুনির্দিষ্টভাবে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধ, রাস্তার পাশের গাছ কেটে সড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি ও ভাঙচুর করার অভিযোগ রয়েছে জামায়াত-শিবিরের কর্মীদের বিরুদ্ধে। এসব ঘটনায় তাঁদের বিরুদ্ধে সাতকানিয়া থানায় বেশ কয়েকটি মামলাও হয়। গত ১ মার্চ জুমার নামাজের পর মাইকে লোকজন জড়ো করে আওয়ামী লীগ সমর্থক নুরুল আলমের খাদ্যগুদামে হামলা চালিয়ে লুটপাট করেন জামায়াত-শিবির কর্মীরা।
একই সঙ্গে ওই এলাকায় ভাঙচুর ও লুটপাট করেন তাঁরা। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত মোহাম্মদ হাসান নামের এক ব্যক্তি বাদী হয়ে সাতকানিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে ওই থানার এসআই জাফর আহমদ ৪৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন আদালতে।
এদিকে, একই দিন সাতকানিয়ার মধ্যম কাঞ্চনা এলাকার ছালামত উল্লাহর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় ২৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন সাতকানিয়া থানার এসআই জাফর আহমদ। তবে এই অভিযোগপত্রেও নির্দেশদাতা কিংবা ইন্ধনদাতার নাম উল্লেখ করা হয়নি।
দুটি মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে বলে পুলিশ জানায়। এর মধ্যে জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে পাঁচটি, নাছির উদ্দিনের বিরুদ্ধে তিনটি করে মামলা রয়েছে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।